কুলাউড়ায় হাসপাতালে নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড়

কুলাউড়া প্রতিনিধি


নভেম্বর ২৮, ২০২০
১০:০৬ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৮, ২০২০
১০:০৬ অপরাহ্ন



কুলাউড়ায় হাসপাতালে নারী কেলেঙ্কারি নিয়ে তোলপাড়
অভিযুক্ত দুইজনকে অব্যাহতি

মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার ব্রাহ্মণবাজার খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালে হিসাবরক্ষকের নারী কেলেঙ্কারির ঘটনায় গত ৪ দিন থেকে চলছে তোলপাড়। এ ঘটনায় হিসাবরক্ষকসহ দুইজনকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। কর্তৃপক্ষ ঘটনাকে গরু চুরি নিয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি বলে ধামাচাপা দেওয়ার অপচেষ্টা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

একাধিক বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, ব্রাহ্মণবাজার খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালের হিসাবরক্ষক ডেভিড তাপাদার গত ২৪ নভেম্বর রাত আনুমানিক ৩টায় এক নার্সের কক্ষে অনৈতিকভাবে প্রবেশ করেন। বিষয়টি টের পান হাসপাতালে কর্তব্যরত নাইটগার্ড সাধন। কিছুক্ষণের মধ্যে ওই কক্ষের ভেতর থেকে আসা নার্সের চিৎকার শুনে নাইটগার্ড সাধনসহ হাসপাতালের লোকজন ছুটে আসেন। এ সময় উপস্থিত লোকজন হিসাবরক্ষক ও নার্সের কাছ থেকে লিখিত মুচলেকা নেন। ঘটনার পরদিন ভোরে ওই নার্সকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু হিসাবরক্ষক ডেভিড বহাল থাকায় শুরু হয় তোলপাড়। এ খবর ছড়ায় হাসপাতালের হেড অফিস ঢাকায়। গত ২৬ নভেম্বর হাসপাতালের প্রকল্প পরিচালক ফাল্গুনি সরকার ছুটে আসেন ব্রাহ্মণবাজার খ্রিস্টিয়ান মিশন হাসপাতালে। প্রকল্প পরিচালক ফাল্গুনি সরকার বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত হয়ে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক ডেভিড তপাদারকে নিজের সঙ্গে করে ঢাকায় নিয়ে যান। অপকর্মের জন্য ডেভিড তাপাদারকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।

একাধিক সূত্রে জানায়, হিসাবরক্ষক ডেভিড হেড অফিসের বিশ্বস্ত লোক বলে ব্রাহ্মণবাজার মিশন হাসপাতালে যোগদানের পর থেকে নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিলেন। নারী কেলেঙ্কারির এ ঘটনা প্রথমবার ফাঁস হলেও অন্তরালে অপ্রকাশিত অনেক ঘটনা রয়েছে। তার এসব অপকর্মের সঙ্গে একজন সিনিয়র নার্সও সম্পৃক্ত বলে সূত্রটি নিশ্চিত করেছে। ওই সিনিয়র নার্স পুরো ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে জোর অপতৎপরতা চালাচ্ছেন। এমনকি মিডিয়ায় মুখ না খোলার জন্য অব্যাহতিপ্রাপ্ত নার্সকে বলেও দিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে অব্যাহতিপ্রাপ্ত নার্স জানান, ৩ বছর ধরে তিনি মিশন হাসপাতালে চাকরি করছেন। হিসাবরক্ষক ডেভিড অসৎ উদ্দেশে তার কক্ষে আসেন। এ সময় তিনি চিৎকার করলে হাসপাতালের নাইট গার্ডসহ লোকজন ছুটে আসেন। তারা কক্ষের দরজায় তালা দিয়ে তাদের আটকে রাখেন। ২৬ নভেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তার কাছ থেকে জোর করে অব্যাহতিপত্র নেন।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হিসাবরক্ষক ডেভিড তপাদার বলেন, 'এটা আমাদের ইন্টারনাল বিষয়।' সেদিন রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'গরু চোর হাসপাতাল এলাকায় প্রবেশ করলে হট্টগোল সৃষ্টি হয়।' আর ওই নার্স ছুটিতে আছেন বলে তিনি জানান।

হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ডেভিড তন্ময় বিশ্বাস পুরো ঘটনাটি অস্বীকার করেন জানান, যেখানে ঘটনা ঘটেছিল তার পাশেই একটি গরুর খামার রয়েছে। সেই খামার এলাকা দিয়ে প্রায়ই গরু চোর হাসপাতাল এলাকায় আসে। ওই নার্স ছুটিতে এবং হিসাবরক্ষক মধ্যাহ্নভোজে আছেন বলে তিনি জানান।

উল্লেখ্য, ইতোপূর্বে ২০১৯ সালে ১৫ সেপ্টেম্বর ডা. ডেভিড তন্ময় বিশ্বাসের বিরুদ্ধেও এক নারীর শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল।

 

জেএইচ/আরআর-১৭