মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
নভেম্বর ২৯, ২০২০
০৯:৪২ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ২৯, ২০২০
১০:২৬ অপরাহ্ন
মৌলভীবাজারের জুড়ীতে জুমার নামাজের খুতবায় মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রলীগ নেতার বাধায় পড়েছেন মসজিদের ইমাম। ঘটনাটি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও মুসল্লিদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে। এ ঘটনায় ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন ওই ছাত্রলীগ নেতা।
জানা গেছে, গত শুক্রবার (২৭ নভেম্বর) উপজেলার পশ্চিম বাছিরপুর জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মামুনুল হক জুমার নামাজের খুতবায় মূর্তি ও ভাস্কর্য নিয়ে আলোচনা করেন। আলোচনাকালে উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া ইমামের কথায় বাধা দিয়ে বলেন, মূর্তি ও ভাস্কর্য এক নয় এবং মূর্তি ও ভাস্কর্য যে এক এ কথাটি তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। তখন মসজিদের ইমাম তাকে বলেন, নামাজ শেষে বিষয়টি বুঝিয়ে বলবেন। এ ঘটনায় মুসল্লিরা উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। তবে ইমাম সবাইকে শান্ত করে নামাজ আদায় করেন।
নামাজ শেষে বিষয়টি নিয়ে ছাত্রলীগ নেতা ও মুসল্লিদের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। এ সময় তাদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এ ঘটনায় মুসল্লিদের একজন আহত হন। পরে ইকবাল ভূইয়া ফোন করে পুলিশকে ঘটনাস্থলে আনেন এবং ইমামসহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় একজন বলেন, মসজিদে আলোচনা চলাকালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমামকে নিয়ে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। মুসল্লিগণ তার কথার প্রতিবাদ জানান।
মসজিদের ইমাম মাওলানা মামুনুল হক বলেন, 'জুমার নামাজের আলোচনায় এমন কোনো কথা বলিনি যে কথার জেরে মারামারি হবে। তারপরও আমি দুইপক্ষের মধ্যে সৃষ্ট বিষয়টি সমাধানের চেষ্টা করেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি করতে যে টাকা ব্যয় হবে তা গরিবের মধ্যে বিতরণ করলে তারা উপকৃত হবে। এমন কিছু কথা বলেছি। এ কথা বলার পর ইকবাল ভূইয়া হৈ-হুল্লোড় শুরু করেন। মসজিদের ভেতরে তার বাবা কাইয়ূম ভূইয়াও আমাকে উদ্দেশ্য করে অশালীন ভাষায় কথা বলেন। শুনেছি আমাকে প্রধান আসামি করে আরও ৪ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন ইকবাল ভূইয়া।'
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া বলেন, 'ইমাম তার আলোচনায় বলেছেন বর্তমান সরকার গরিবের টাকা মেরে বঙ্গবন্ধুর মূর্তি তৈরি করছে। আমি ওই বক্তব্যের প্রতিবাদ করেছি। নামাজ শেষে এটা নিয়ে আমার কিছু ছোটভাইয়ের (ছাত্রলীগের কর্মী) সঙ্গে জামায়াতের কিছু মানুষের ধাক্কাধাক্কি হয়।'
জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সঞ্জয় চক্রবর্তী বলেন, 'মসজিদে কী বলেছে না বলেছে এটা নিয়ে মারামারি হয়। এ ঘটনায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইকবাল ভূইয়া বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।'
এসএইচ/আরআর-১৭