আমনের ভালো ফলন, কমলগঞ্জে নবান্নের আমেজ

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


নভেম্বর ৩০, ২০২০
০৭:৪৪ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ৩০, ২০২০
০৯:৩৩ অপরাহ্ন



আমনের ভালো ফলন, কমলগঞ্জে নবান্নের আমেজ

মাঠে মাঠে আমন ধানের রঙ এখন সোনালি হয়ে উঠেছে। যেদিকে চোখ যায় সেদিকেই শুধু সোনালি ফসলে ভরপুর। মাঠে মাঠে কৃষকদের দিগন্ত বিস্তৃত সোনালি ফসলে প্রকৃতির নিয়মেই নবান্ন সমাগত। নবান্নের আমেজে কৃষকরা হয়ে উঠেছেন উৎফুল্ল। করোনা মহামারির মধ্যেও মাঠজুড়ে সোনালি ফসল কৃষকদের ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনার যোগান দিচ্ছে। গ্রামে গ্রামে কিষান-কিষানি এখন প্রচণ্ড ব্যস্ত। নতুন ধানের সঙ্গে মিশে আছে তাদের স্বপ্ন।

আবহমান বাংলার এক চিরায়ত লোকজ উৎসব নবান্ন। নবান্নের শুরুতে কৃষি অধ্যুষিত মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে কৃষকরা সোনালি ফসল ঘরে তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। অগ্রহায়নের প্রথমদিন থেকেই উপজেলার ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকায় কৃষকরা শুরু করেছেন ধান কাটা। কৃষি বিভাগ বলছে, এবার কমলগঞ্জ উপজেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। 

কমলগঞ্জ কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর উপজেলায় মোট ১৭ হাজার ৩শ হেক্টর জমিতে আমন চাষাবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল। আর ১৭ হাজার ২শ ৯৫ হেক্টর জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। আমন চাষে প্রতি হেক্টরে চালের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে উর্বশী ২.৭৫ টন ও স্থানীয় ১.০৪ টন চাল। অন্যান্য জাতের ধানের পাশাপাশি ব্রি ধান ৪৯, ব্রি ধান ৫১, ব্রি ধান ৫২ ও ব্রি ধান ৮৭ এর ফলন এবার বেশি হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

কমলগঞ্জের আমন চাষি শরিফ মিয়া, মো. মুরাদ মিয়া, কাজল মালাকার, সবুর মিয়া ও রুনু করের সঙ্গে আলাপকালে তারা সিলেট মিররকে জানান, নবান্ন বাঙালির প্রাণের উৎসব। এবার আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। বর্তমান বাজারে ধানের যে দাম রয়েছে সেই দাম অব্যাহত থাকলে কৃষকরা লাভবান হবেন। তবে মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে কিছুটা শ্রমিক সংকট রয়েছে। করোনার কারণে শ্রমিকরা বাড়তি মজুরি দাবি করছেন। অনেকে করোনার ২য় ঢেউয়ের ভয়ে কাজে যেতে চাইছেন না। এতে কিছুটা বিড়ম্বনায় পড়েছেন কৃষকরা। তারপরও ফলন ভালো হওয়ায় এবার কৃষকদের নবান্ন উৎসবও ভালো হবে বলে আশা করছেন তারা। 

ধানের আড়তদার সুয়েব আলী বলেন, 'বাজারে ধানের দাম গতবছরের তুলনায় বেশি আছে। বর্তমান বাজারে মোটা ধান ৮০০ টাকা মণ ও চিকন ধান ৮৫০ টাকা মণ হিসেবে ক্রয় করা হচ্ছে। এ বছর ধানের দামে কৃষকরা লাভবান হবেন বলে আমি আশাবাদী।'

কমলগঞ্জ উপজেলার কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ রায় সিলেট মিররকে জানান, উপজেলায় বিচ্ছিন্নভাবে ধান কাটা শুরু হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ অঞ্চলের চাষিরা আমনের বাম্পার ফলন পাবেন। কিয়ার প্রতি ১৩ থেকে ১৫ মণ ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। করোনা মহামারি ছাড়া আর বড় কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় কৃষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ও কৃষি অফিসের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এ বছর ফসল ভালো হয়েছে এবং বাম্পার ফলন হয়েছে। তাই কৃষকরাও খুশি।'

 

এসডি/আরআর-০৭