সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ০৬, ২০২০
০৮:০৬ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
১২:০১ পূর্বাহ্ন



সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস আজ

আজ ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ শহর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর কবল থেকে মুক্ত হয়েছিল এ অঞ্চল।

জানা গেছে, ১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর দামাল মুক্তিবাহিনীর সুনামগঞ্জ শহর দখলের খবরে পালিয়ে গিয়েছিল পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী। মুক্ত শহরে জয় বাংলা স্লোগানের মাধ্যমে প্রবেশ করেন দামাল বীর মুক্তিযোদ্ধারা। জনতা বিজয় মিছিল দিয়ে তাদের স্বাগত জানায়।

১৯৭১ সালের ৫ ডিসেম্বর রাতে বালাট সাব-সেক্টরের কমান্ডার মেজর মোত্তালিব ও মিত্রবাহিনীর পরিকল্পনায় এ, বি, সি ও ডি কোম্পানির বীর মুক্তিযোদ্ধারা সুনামগঞ্জ শহর শত্রুমুক্ত করতে পরিকল্পনা নেন। দক্ষিণ দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর পালানোর পথ রেখে বালাট সাব-সেক্টরের মুক্তিযোদ্ধারা সুনামগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করতে রওয়ানা দেন। ৫ ডিসেম্বর রাতে বালাট সাব-সেক্টরের কমান্ডার মেজর মোতালিব, ভারতীয় ক্যাপ্টেন যাদব ও ক্যাপ্টেন রঘুনাথ ভাট বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে দখলদার বাহিনীর ওপর চরম আঘাত হানতে ৪টি কোম্পানি প্রস্তুত করেছিলেন। ‘এ’ কোম্পানিকে যোগীরগাঁও, ‘বি’ কোম্পানিকে হালুয়ারঘাট, সি কোম্পানিকে হাছননগর ও ডি কোম্পানিকে ভাদেরটেক লালপুর থেকে আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাছাড়া এফএফ কোম্পানিকে বেরীগাঁও-কৃষ্ণনগরে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়। শুধু দক্ষিণ দিক উন্মুক্ত রেখে যৌথ আক্রমণে নামেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা। কোম্পানিগুলোকে সার্বিক রসদ সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয় এডিএম কোম্পানিকে। এছাড়াও বনগাঁও সদর দফতরে অতিরিক্ত এক প্লাটুন বীর  মুক্তিযোদ্ধা প্রস্তুত ছিলেন যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত ও যৌথ আক্রমণের খবরে ভীতসন্ত্রস্ত পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর ভোরেই বীর মুক্তিযোদ্ধারা ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে রাস্তায় নেমে আসেন। দামাল মুক্তিসেনাদের অভিনন্দন জানায় জনতা। দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ থাকার পর হাজার হাজার নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে এসে মুক্তির উল্লাসে মেতে ওঠেন। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় সুনামগঞ্জ। পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী পালানোর সময় সুনামগঞ্জ পিটিআই টর্চার সেলে কয়েকজনকে হত্যা করে আর কয়েকজনকে বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে আহসানমারা সেতুর পাশে ব্রাশ ফায়ারে হত্যা করে। এখান থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনেক মানুষের হাড়গোড়, নারীদের কাপড়-চোপড়সহ বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার করেন।

 

এসএস/বিএন-০৩/আরআর-০১