সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসে ডলুরা শহীদ সমাধিতে প্রশাসনের শ্রদ্ধা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
০২:২৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৭, ২০২০
০২:২৪ পূর্বাহ্ন



সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবসে ডলুরা শহীদ সমাধিতে প্রশাসনের শ্রদ্ধা

আজ ৬ ডিসেম্বর সুনামগঞ্জ মুক্ত দিবস। এ উপলক্ষে আজ রবিবার সকালে সদর উপজেলার ডলুরা শহীদ গণসমাধিতে পুষ্পাঞ্জলি প্রদান করেছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ। এ সময় শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়।

পুষ্পস্তবক অর্পণকালে আরও উপস্থিত ছিলেন, সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইয়াসমিন নাহার রুমা, জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আরিফ আদনান, উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সীমা রাণী বিশ্বাস, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সহকারী কমিশনার জহিরুল আলম, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোকছুদ আলী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, বীর মুক্তিযোদ্ধা মালেক হোসেন পীরসহ স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ।

১৯৭১ সালের ৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীকে হটিয়ে মুক্ত হয় সুনামগঞ্জ শহর। হাওরের নৌপথে ও সড়কপথে সিলেটের দিকে পালিয়ে যায় পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী। এ, বি, সি ও ডি কোম্পানির মুক্তিযোদ্ধাদের সাঁড়াশি অভিযানে শহর শত্রুমুক্ত হওয়ায় স্বাধীনতার আকাঙ্খায় দিন অতিবাহিত করা জনতা রাস্তায় নেমে এসে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্বাগত জানান। ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে তখন মুখর হয়ে ওঠে সুনামগঞ্জ শহর। মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রিমুখী আক্রমণের খবর পেয়ে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী দক্ষিণের সড়ক ও হাওরপথে পালিয়ে যায়।

দক্ষিণ দিকে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর পালানোর পথ রেখে বালাট সাব-সেক্টরের বীর মুক্তিযোদ্ধারা সুনামগঞ্জ শহরকে শত্রুমুক্ত করতে উদ্যোগ নেন। চারটি কোম্পানির মধ্যে ‘এ’ কোম্পানিকে যোগীরগাঁও, ‘বি’ কোম্পানিকে হালুয়ারঘাট, সি কোম্পানিকে হাছননগর ও ডি কোম্পানিকে ভাদেরটেক লালপুর থেকে আক্রমণের নির্দেশ দেওয়া হয়। তাছাড়া এফ কোম্পানিকে বেরীগাঁও-কৃষ্ণনগরে পরবর্তী নির্দেশনা না দেওয়া পর্যন্ত অবস্থানের নির্দেশ দেওয়া হয়। শুধু দক্ষিণ দিক উন্মুক্ত রেখে যৌথ আক্রমণে নামেন বীর মুক্তিযোদ্ধারা।

কোম্পানিগুলোকে সার্বিক রসদ সরবরাহের দায়িত্ব দেওয়া হয় এডিএম কোম্পানিকে। এছাড়াও বনগাঁও সদর দফতরে অতিরিক্ত এক প্লাটুন মুক্তিযোদ্ধা প্রস্তুত ছিলেন যেকোনো পরিস্থিতি সামাল দিতে। মুক্তিযোদ্ধাদের অতর্কিত ও যৌথ আক্রমণের খবরে ভীতসন্ত্রস্ত পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী শহর ছেড়ে পালাতে শুরু করে। ৬ ডিসেম্বর ভোরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগানে রাস্তায় নেমে এসে দামাল মুক্তিসেনাদের অভিনন্দন জানায় জনতা। দীর্ঘদিন অবরুদ্ধ থাকার পর হাজার হাজার নারী-পুরুষ রাস্তায় নেমে এসে মুক্তির উল্লাসে মেতে ওঠেন। এভাবেই শত্রুমুক্ত হয় সুনামগঞ্জ।

পাকিস্তানি হানাদারবাহিনী পালানোর সময় সুনামগঞ্জ পিটিআই টর্চার সেলে কয়েকজনকে হত্যা করে, কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে ধরে নিয়ে আহসানমারা সেতুর পাশে ব্রাশফায়ারে হত্যা করে। এখান থেকে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অনেক মানুষের হাড়গোড়, নারীদের কাপড়-চোপড়সহ বিবস্ত্র দেহ উদ্ধার করেন।

 

এসএস/আরআর-১৫