শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ০৮, ২০২০
০৯:৩৩ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ০৯, ২০২০
০১:৩৮ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাবার বাসা বিক্রির ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন রাহিদ। এমন অভিযোগ করেছেন তার ছোট ভাই কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবিদ হোসেন তানভীর।
আজ মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এমন অভিযোগ করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন রাহিদের বড় ভাই নাহিদ ও তাদের চাচাতো ভাই হিমেলসহ অন্যান্যরা।
তিনি জানান, রাহিদ তাদের পরিবারের ৭ ভাইয়ের মাঝে দ্বিতীয়। পরিবারের বড় সন্তান হিসেবে রাহিদ বাবার সকল অর্থ ও সম্পদের দেখাশোনা করতেন। শহরের বাসা বিক্রির ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার মধ্যে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করে রাহিদ ঘরছাড়া রয়েছেন।
তিনি বলেন, 'রাহিদ বাবাকে ভয় দেখিয়ে বলে বাসা বিক্রির টাকাগুলো তোমার কাছে থাকলে দুদক তোমাকে ধরে নিয়ে যাবে। এটা বলে টাকাগুলো তার ব্যাংক একাউন্টে জমা করে নিজের কব্জায় নিয়ে নেয়। পরবর্তীতে রাহিদ এই টাকার হিসাব দিতে টালবাহানা করে। টাকার হিসাব চাওয়া নিয়ে রাহিদের সঙ্গে তাদের বিরোধ সৃষ্টি হয়।'
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, গত ২ ডিসেম্বর তার ভাই রাহিদের প্ররোচনায় তাদের ভাগ্নি আসফিয়া শাহরিন আঁচল শ্রীমঙ্গল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে তার বাবা আব্দুস ছালাম, চাচা শ্রীমঙ্গলের আওয়ামীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু শহিদ মো. আব্দুল্লাহসহ তাদের পরিবারের নামে আড়াই কোটি টাকা আত্মসাৎ, জমি জবরদখল, লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলার চেষ্টা ও অসামাজিক কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন মিথ্যা ও মানহানিকর অভিযোগ করেছেন।
তিনি জানতে চান, আঁচল আড়াই কোটি টাকার মালিক হওয়ায় তিনি সরকারকে কী পরিমাণ কর প্রদান করেন এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তাদের এই অর্থের হদিস বের করতে অনুরোধ করেন।
তিনি আরও জানান, তাদের দাদা উপজেলার রূপশপুর মৌজায় বারিধারা আবাসিক এলাকায় প্রায় ১১ একর সম্পদ রেখে যান। দেশের প্রচলিত আইন ও ইসলামী শরিয়া রীতি অনুযায়ী এসব সম্পদ সুষ্ঠু বন্টন না হওয়ায় এ নিয়ে আদালতে স্বত্ত্ব মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এ সময় তিনি অভিযোগ করেন, তাদের বিরোধ নিষ্পত্তি করতে গত ১৬ ফেব্রুয়ারি শ্রীমঙ্গল সদর ইউনিয়ন কার্যালয়ে স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উদ্যোগে এক সালিশ বৈঠকে তাদের বাবা ও চাচার ক্রয়কৃত সম্পত্তি ১৫৭৮ নম্বর দলিল তাং-২৮/০৮/৬৯ এর ১২ শতক ভূমির মূল্য বাবদ তাদের ভাগ্নি আসফিয়া শাহরিন আঁচলকে ৪৮ লাখ টাকা পরিশোধের রায় দেওয়া হয়। কিন্তু আঁচল টাকা না দিয়ে উল্টো তাদের নামে মিথ্যা মামলা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য উপস্থাপন করে সমাজে তাদের পরিবারের সুনাম নষ্ট করছেন।
কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক এ নেতা আরও অভিযোগ করেন, তার ভাই রাহিদ টাকার লোভে আঁচলের পিছু নেন। আঁচল নিজের স্বার্থ হাসিল করার জন্য তার ভাইকে হাতে রাখেন। বাবা, মা ও পরিবারের সবাইকে নিয়ে তারা একত্রে বসবাস করলেও তার ভাই রাহিদের অপকর্মের কারণে আজ পরিবার ও সমাজ থেকে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন বলে তিনি সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেন।
এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক দেলোওয়ার হোসেন রাহিদ এসব অভিযোগ অস্বীকার করে সিলেট মিররকে জানান, তার ভাই তানভীর ভুয়া, মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ করেছেন বরং তিনি পৌর প্রেসক্লাব খুলে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে যাচ্ছেন।
পরিবারের টাকা আত্মসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, পুরাৎন বাসার টাকা বিক্রির বিষয়ে তার সঙ্গে কোনো লেনদেন হয়নি এবং তিনি এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। জনৈক মুসাব্বির, তার বাবা ও তানভীর লেনদেন করেছেন বলে জানান তিনি।
জিকে/বিএন-০৫/আরআর-০৫