আজ থেকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী পথে ফের চলবে রেল

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ১৭, ২০২০
০৩:৫৬ পূর্বাহ্ন



আজ থেকে চিলাহাটি-হলদিবাড়ী পথে ফের চলবে রেল

অবশেষে অবসান হতে যাচ্ছে দীর্ঘ প্রতীক্ষার। নীলফামারীর চিলাহাটির সঙ্গে ভারতের হলদিবাড়ীর পথে রেল চলাচল ফের শুরু হচ্ছে। 

আজ বৃহস্পতিবার (১৭ ডিসেম্বর) থেকেই শুরু হচ্ছে রেল চলাছল। রেলপথে দুই বাংলার সংযোগ স্থাপনের ওই মাহেন্দ্রক্ষণ ঘিরে চিলাহাটি রেলস্টেশন সেজেছে অপরূপ সাজে। স্টেশনসংলগ্ন এলাকায় স্থাপন করা হয়েছে এক হাজার মানুষের ধারণক্ষমতার প্যান্ডেল। আজ সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ওই রেল যোগাযোগের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানটি বড় পর্দায় দেখানো হবে চিলাহাটিতে স্থাপিত প্যান্ডেলে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন রেলমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন।

ব্রিটিশ আমল থেকে অবিভক্ত ভারতে যোগাযোগের প্রধানতম রেলপথ ছিল চিলাহাটি-হলদিবাড়ী। এই পথ দিয়ে নিয়মিত চলাচল করত দার্জিলিং থেকে খুলনা হয়ে কলকাতা পর্যন্ত একাধিক যাত্রী ও পণ্যবাহী ট্রেন। ওই রেল যোগাযোগকে ঘিরে চিলাহাটিতে গড়ে ওঠে বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সে সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যবসায়ীদের আনাগোনায় মুখরিত চিলাহাটিতে গড়ে উঠেছিল মার্চেন্ট সমিতি।

সেই মার্চেন্ট সমিতির হাত ধরে এলাকায় হয়েছিল বিভিন্ন উন্নয়ন। তারই নিদর্শন চিলাহাটি মার্চেন্ট উচ্চ বিদ্যালয়। ১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধের পর পথটি বন্ধ করে দেওয়া হলে স্থবির হয়ে পড়ে নীলফামারীসহ আশপাশের জেলার ব্যবসা-বাণিজ্য। সেই থেকে ফের রেলপথ চালুর দাবি তোলে এলাকাবাসী। দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘ ৫৫ বছর পর পথটি ফের চালুর উদ্যোগ নেয় দুই দেশের সরকার।

নীলফামারীর চিলাহাটি থেকে ভারতের হলদিবাড়ি সীমান্ত পর্যন্ত বাংলাদেশ অংশের ৬.৭২ কিলোমিটার রেললাইন বসানোর কাজ এর মধ্যে শেষ হয়েছে। ৮০ কোটি ১৭ লাখ টাকা ব্যয়ের ওই  প্রকল্পে রেললাইন স্থাপন ছাড়াও বসানো হয়েছে চার কিলোমিটার লুপ লাইন, আটটি লেভেলক্রসিং ও ৯টি ব্রিজসহ অন্য অবকাঠামো। এরই মধ্যে বাংলাদেশ অংশে পরীক্ষামূলক ট্রেন চালানো হয়েছে। অন্যদিকে ভারত হলদিবাড়ি থেকে বাংলাদেশের সীমান্ত পর্যন্ত তিন কিলোমিটার রেললাইন স্থাপনসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণকাজ শেষ করে তাদের অংশে চালিয়েছে পরীক্ষামূলক ট্রেন। উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ঘিরে তাদের অংশেও নেওয়া হয়েছে নানা প্রস্তুতি। এর মধ্যে বাংলাদেশে প্রবেশদ্বারে (তাদের অংশে) রেলপথের ওপর স্থাপন করা হয়েছে স্থায়ী তোরণ।

আজ দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন ঘোষণার পর চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে পণ্যবাহী একটি ট্রেন ছেড়ে যাবে ভারতের হলদিবাড়ির দিকে। ওই রেলবহরে থাকবে ভারতীয় ৩২টি খালি ওয়াগন। আর রেলবহরটিকে টেনে নিয়ে যাবে বাংলাদেশ রেলওয়ের একটি ইঞ্জিন। এসব ওয়াগান হলদিবাড়ি রেলস্টেশনে রেখে ফের সীমান্ত অতিক্রম করে দেশে ফিরে আসবে ইঞ্জিনটি।

গত ১০ ডিসেম্বর নীলফামারী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে অনুষ্ঠিত হয় ওই রেলপথ উদ্বোধনের প্রস্তুতিমূলক সভা। ওই সভায় রেলপথমন্ত্রী মো. নূরুল ইসলাম সুজন জানিয়েছিলেন, উদ্বোধনের পর থেকে এ পথে আপাতত দুই দেশের মধ্যে পণ্যবাহী ট্রেন চলবে। আগামী ২৬ মার্চ থেকে পথটি দিয়ে ঢাকা থেকে শিলিগুড়ি পর্যন্ত যাত্রীবাহী ট্রেন চলাচলের পরিকল্পনা রয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘বৃহস্পতিবার পণ্যবাহী ট্রেন চলাচলের মধ্য দিয়ে ৫৫ বছর পর ফের এই পথে ভারত-বাংলাদেশ রেল যোগাযোগের সূচনা ঘটবে।’

 

সূত্র : কালের কণ্ঠ

 

এএফ/০১