দেশ ছাড়ার ফন্দি ছিল বাবরের

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ২২, ২০২০
০১:০০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ২২, ২০২০
০১:০০ পূর্বাহ্ন



দেশ ছাড়ার ফন্দি ছিল বাবরের

বিএনপি নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের শেষদিকে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিসের অন্যতম ‘কন্টাক্ট পারসন’ (যোগাযোগ করার মাধ্যম)। স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী পদে বাবর বয়সে নবীন হলেও তাঁর দুর্নীতি নিয়ে কানাঘুষা ছিল। ২০১৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন সার্ভিস থেকে অবসরে যাওয়ার পর দেশটির পররাষ্ট্রবিষয়ক কথ্য ইতিহাস প্রকল্পকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে প্যাট্রিসিয়া বিউটেনিস এভাবেই লুৎফুজ্জামান বাবরের প্রসঙ্গ টেনেছেন।

বিউটেনিস বলেন, ‘বাবরের মন্ত্রণালয়ের অধীন র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের দুর্নাম ছিল বিচারবহির্ভূত হত্যা নিয়ে। তবে তাঁর সঙ্গে আমাদের অনেক যোগাযোগ ছিল। কারণ তিনি আমাদের দূতাবাসের সুরক্ষা দেওয়া নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর দায়িত্বে ছিলেন। কারাগারও ছিল তাঁর অধীনে।’ তিনি বলেন, ‘অনেক বাংলাদেশি তাঁকে (বাবর) ভয় পেত। আমি নিশ্চিত, এর কারণ আছে। আমি জানি, অন্য কূটনীতিকসহ কিছু লোক মনে করতেন যে বাবরের সঙ্গে আমার দূরত্ব বজায় রাখা উচিত। তবে আমি জানি না, আমি যা করেছি তার চেয়ে ভিন্ন কিছু করতাম কি না।’

বিউটেনিস বলেন, ‘সম্ভবত যে কাজটি আমার করা উচিত হয়নি তা হলো, বাগদাদে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ার আগে বাবরের বিদায়ি নৈশ ভোজের আমন্ত্রণ গ্রহণ করা। অন্যান্য রাষ্ট্রদূত ও আমার সঙ্গে বাবর একটি সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। কারণ তিনি বিশ্বাস করতেন যে এতে তাঁর ক্ষমতা ও মর্যাদা বাড়বে। আমি সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেছিলাম। তবে তাঁকে আগেই বলেছিলাম যে আমি কোনো উপহার নিতে পারব না। অন্য কূটনীতিকরা হয়তো না পেরে ওই নৈশ ভোজে গিয়েছিলেন।’

‘আমন্ত্রণ ফিরিয়ে দেওয়াই আমার উচিত ছিল’ মন্তব্য করে বিউটেনিস বলেন, ‘সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব নেওয়ায় বাবর জানতেন যে তিনি ‘টার্গেট’ হবেন। তিনি আমাকে ও ব্রিটিশ হাইকমিশনারকে তাঁর সঙ্গে দেখা করার জন্য ডাকলেন। আমরা তাতে সাড়া দিই। তিনি আমাদের কাছে আমাদের দেশের ভিসা চান।’

বিউটেনিস সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘বাবর বলেছিলেন, তাঁর শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা আছে এবং চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্র বা যুক্তরাজ্যে যাওয়া প্রয়োজন। তবে আমরা জানতাম, নিরাপদে থাকার জন্য তিনি বাংলাদেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করছেন। আমার মনে হয়, তিনি কী বিষয়ে আলোচনা করতে চাইছেন তা আমরা আগেই আঁচ করতে পেরেছিলাম এবং আমাদের জবাব কী হতে পারে তা-ও আমরা আগেই আলোচনা করে ঠিক করে নিয়েছিলাম। বাবরের সঙ্গে আমাদের আলোচনা ছিল কঠিন। কারণ এর ফলাফল (দেশ ছাড়তে না পারা) তাঁর জন্য ‘শূল’ হয়ে এসেছিল। এরপর তিনি গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে গেছেন।’

 

সূত্র : কালের কণ্ঠ-তে প্রকাশিত ‘এক-এগারোয় দেশ ছাড়ার ফন্দি ছিল বাবরের’ প্রতিবেদনের অংশ বিশেষ।

 

এএফ/০১