সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
১১:৫৭ অপরাহ্ন
আপডেট : ডিসেম্বর ২৩, ২০২০
১১:৫৭ অপরাহ্ন
জাতীয় সঙ্গীত বাজছে মাইকে। সম্মানে আসন থেকে উঠে দাঁড়িয়ে নিজেরাও জাতীয় সঙ্গীতে কণ্ঠ মেলালেন। পুরো জাতীয় সঙ্গীত শেষ করে আবার আসনে বসলেন। পরে মঞ্চে এসেও বীর মুক্তিযোদ্ধাগণ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করলেন।
এভাবেই আজ বুধবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে সুনামগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমির হলে অনুষ্ঠিত বিশেষ অনুষ্ঠানে সঠিক মাপের স্ট্যান্ডসহ জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত বই উপহার হিসেবে গ্রহণ করেছেন সুনামগঞ্জ জেলার ২৭২টি কওমি ও আলিয়া মাদরাসার শিক্ষকরা।
এ সময় মাদরাসার শিক্ষকরা একাত্তরে নিরীহ বাঙালির উপর প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ৩০ লাখ মানুষ হত্যা ও আড়াই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহরণের ঘটনায় পাকিস্তানিদের প্রতি নিন্দা ও ঘৃণা জানান। নবী মোহাম্মদের কাছ থেকে দেশপ্রেমের শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন মাদরাসার শিক্ষকরা। অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষ উপলক্ষে স্ট্যান্ডসহ সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা প্রদানের মাধ্যমে জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা সরবরাহের কাজ সম্পন্ন করে জেলা প্রশাসন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদের সভাপতিত্বে ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাত উল হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি বক্তব্য দেন মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাবোর্ডের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব তপন কান্তি ঘোষ ও বিভাগীয় কমিশনার মো. মশিউর রহমান। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন, পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সুফিয়ান, মাওলানা আলী নূর, মাওলানা আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।
আলোচনা অনুষ্ঠানে মাওলানা আনোয়ার হোসেন বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্ম নিয়েছিলেন বলেই শোষক পাকিস্তানিদের কাছ থেকে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। এই স্বাধীনতা ধরে রাখতে আমরা ধর্ম-বর্ণ ভুলে সবাই দেশ গঠনের কাজে নিয়োজিত হব। জাতির পিতাকে শ্রদ্ধা করেই আমাদের দেশকে এগিয়ে নিতে হবে।
হেফাজতে ইসলাম সুনামগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি ও মদনিয়া মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুল বছির বলেন, আমরা জাতির পিতাকে অশ্রদ্ধা করি না। তাঁর ডাকে আমিও মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম। কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে ট্রেনিং নিতে পারিনি। তাই মুক্তিযুদ্ধে যাওয়া হয়নি। আমরা মুক্তিযুদ্ধ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করি না। আমরা আজ স্বাধীন দেশের প্রতীক জাতীয় পতাকা উপহার পেয়ে ভালো লাগছে।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, মহান মুজিববর্ষ উপলক্ষে আজ ২৭২টি মাদরাসায় স্ট্যান্ডসহ সঠিক মাপের জাতীয় পতাকা প্রদানের মাধ্যমে জেলার সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে জাতীয় পতাকা প্রদান করা সম্ভব হয়েছে। সকল মাধ্যমের শিক্ষাব্যবস্থার সংশ্লিষ্টরা সরকারের সহযোগী হিসেবে কাজ না করলে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না।
এসএস/আরআর-০১