সুনামগঞ্জে মাঠ গরম রেখেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


জানুয়ারি ০২, ২০২১
০৯:০৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ০২, ২০২১
০৯:০৭ অপরাহ্ন



সুনামগঞ্জে মাঠ গরম রেখেছেন কাউন্সিলর প্রার্থীরা

মিন্টু চৌধুরী সাবেক ছাত্রনেতা। সুনামগঞ্জ পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন তিনি। প্রতীক বরাদ্দের পর প্রায় প্রতিদিনই এই বিনয়ী উদীয়মান সমাজসেবক সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তার বিরামহীন প্রচারে সঙ্গী হয়েছেন বন্ধু-বান্ধব ও স্বজনরা। নিজ ওয়ার্ডের বিভিন্ন বাসা-বাড়িতে ইতোমধ্যে একাধিকবার গিয়ে ভোট প্রার্থনা করে এসেছেন তিনি।

একই ওয়ার্ডের আরেক পরিচিত মুখ নাট্যকর্মী সাদিকুর রহমান খান রুবেল। সুনামগঞ্জের মঞ্চ কাঁপানো এই তরুণ ভোটযুদ্ধে নেমেছেন। নাট্যকর্মীদের নিয়ে তিনি তার ওয়ার্ডের বিভিন্ন পাড়ার ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করে আলোচিত। তিনিও বিরামহীন প্রচার চালাচ্ছেন।

৪, ৫ ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর প্রার্থী সামিনা চৌধুরীও সাংস্কৃতিক সংগঠক। তিনিও প্রতীক বরাদ্দের পর থেকে বিরামহীন উদয়াস্ত প্রচারে ব্যস্ত রয়েছেন। ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে। তাকে সঙ্গ দিয়ে প্রচারে রঙ ছড়াচ্ছেন স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবরা।

৭ নম্বর ওয়ার্ডের আলোচিত প্রার্থী সংস্কৃতিকর্মী ও গায়েন আহসান জামিল আনাস। তার সঙ্গে পরিবার ও স্বজনসহ বন্ধু-বান্ধবরাও মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। ভোটারদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে উন্নয়ন ও জনসেবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে অঙ্গিকার করছেন।

শুধু এই চার প্রার্থীই নন, সুনামগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর পদে প্রতিদ্বন্ধিতাকারী কাউন্সিলর ও নারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন পাড়া-মহল্লা। ভোটারদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে মাইকিং, পোস্টার ও বিলবোর্ডে প্রচার চালাচ্ছেন তারা। যেদিকেই চোখ যায় তাদের পোস্টার আর বিলবোর্ডের ছড়াছড়ি দেখতে পাওয়া যায়।

এভাবে কাউন্সিলররা প্রচার জমিয়ে রাখলেও মেয়র পদের নির্বাচনে তেমন আবেদন নেই। নেই আলোচনা ও প্রচার। কারণ সচেতন নাগরিকরা ধরেই নিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সামনে অন্য দুই প্রার্থীর চরম ইমেজ সংকট রয়েছে। আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হবেন- এমন ঘোষণা প্রতিদিনই পাড়া-মহল্লার দলনিরপেক্ষ মানুষজনও বড় গলায় দিচ্ছেন। তাই মেয়র পদে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর প্রতিদ্বন্ধী বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মোরশেদ আলম ও ইসলামিক আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী রহমত উল্লাহকে নিয়ে তেমন আগ্রহ নেই নাগরিকদের। প্রচারেও তাদের তেমন দেখা যাচ্ছে না। ওই দু'জন নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় প্রতিদ্বন্ধিতার জন্য প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন- এমনটা বলছেন শহরের সচেতন নাগরিকগণ।

আওয়ামী লীগ প্রার্থী নাদের বখত ও তার সমর্থকরাও অন্যান্য সময়ের মতো তৎপর নন। বরং দলীয় নেতা-কর্মীরা বিজয় নিশ্চিত ধরে নিয়ে বিভিন্ন স্থানে নামকাওয়াস্তে মতবিনিময় করছেন। বিজয় নিশ্চিত মনে করে তার নিজ দলের বিরোধী বলয়ের লোকজনকেও সেসব মতবিনিময়ে যুক্ত হতে দেখা যাচ্ছে। ক্ষমতাসীন দলের মনোনীত প্রার্থী সজ্জন নাদের বখতও সেসব মতবিনিময় সভায় উপস্থিত হচ্ছেন। তবে বরাবরের মতো একা একা নীরবে-নিভৃতে প্রচারে যুক্ত হচ্ছেন তিনি।

নির্বাচনী বিশ্লেষকদের ধারণা, জনপ্রিয়তা, ব্যক্তিগত ও পারিবারিক ইমেজ ও নাগরিক গ্রহণযোগ্যতায় এবারের মেয়র নির্বাচনে অপ্রতিদ্বন্ধী প্রার্থী নাদের বখত। বিজয় হাতছানি দিচ্ছে তার সামনে। এবার হাছন পরিবারসহ অন্যান্য পরিবার থেকে শক্তিশালী প্রার্থী না থাকায় তিনিই সবচেয়ে আলোচিত প্রার্থী। দলীয় মনোনয়ন পাওয়ায় নির্বাচনী বৈতরণী পাড়ি দেওয়া আরও সহজ হয়েছে তার জন্য। তাছাড়া করোনাকালে জেলা শহরে জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন তিনি। কোনো মেকি প্রচার চালাননি তখন। করোনাকালে জীবন বাজি রেখে নাগরিকদের পাশে থাকায় তার জনপ্রিয়তা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছেন সুধীজন।

সুনামগঞ্জ পৌরসভায় ৯টি ওয়ার্ড ও ৩টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীর সংখ্যা প্রায় অর্ধশত। তাদের মাঠ কাঁপানো প্রচার উপভোগ করছেন নাগরিকরাও। কাউন্সিলদের মধ্যেই হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন সচেতন নাগরিকরা।

১ নম্বর ওয়ার্ডে বার বার নির্বাচিত কাউন্সিলর হোসেন আহমদ রাসেল বলেন, 'আমি প্রতিদিনই সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত প্রচারে ব্যস্ত রয়েছি। ওয়ার্ডের প্রতিটি বাসা-বাড়িতে ঘুরছি আমি। এবারও সবাই আমাকে স্নেহ ও মমতায় জড়িয়ে রেখেছেন। অতীতে আমি যেভাবে মানুষের পাশে ছিলাম, এবারও নির্বাচিত হয়ে ইনশাল্লাহ তাদের সুখ-দুঃখের সঙ্গী হব।'

৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী বোরহান উদ্দিন লিটু বলেন, 'আমি গত দুই নির্বাচন ধরেই মাঠে কাজ করছি। এবার প্রার্থী হয়েছি। পাড়ার মুরুব্বি ও সর্বস্তরের মানুষজন আমাকে দোয়া ও আশির্বাদ করেছেন। তাদের ভালোবাসা ও আশির্বাদ বুকে নিয়ে আমি প্রতিটি ঘরেই যাচ্ছি। সবাই আমাকে যেভাবে গ্রহণ করেছেন, আশা করি বিপুল ভোটে নির্বাচিত হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর সুযোগ পাব।'

 

এসএস/আরআর-০৭