সিলেট মিরর ডেস্ক
                        জানুয়ারি ০৭, ২০২১
                        
                        ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
                        	
                        আপডেট : জানুয়ারি ০৭, ২০২১
                        
                        ০৬:৪৬ পূর্বাহ্ন
                             	
                        
            
    করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের জন্য অতি দ্রুত বিকল্প উৎস বের করার দাবি জানিয়েছে বিএনপি। একই সঙ্গে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, বিনা ভোটের সরকার ক্ষমতায় থাকায় জনগণের প্রতি তাদের ন্যূনতম দায়বদ্ধতা নেই। তাদের অদূরদর্শিতা ও লুটপাটনীতির কারণে ভ্যাকসিন পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এ থেকে উত্তরণে সরকারকে অনতিবিলম্বে ভ্যাকসিন সংগ্রহ, মূল্য, সংরক্ষণ ও বিতরণ ব্যবস্থা সম্পর্কে সুস্পষ্ট বক্তব্য জনগণকে জানাতে হবে।
বুধবার রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন এসব দাবি তুলে ধরেন। করোনা ভ্যাকসিন ইস্যুতে বিএনপির পক্ষ থেকে গত সপ্তাহে ড. মোশাররফের নেতৃত্বে ছয় সদস্যের একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে ওই কমিটির সদস্য অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন, ডা. রফিকুল ইসলাম, ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অধ্যাপক হারুন-উর রশীদ, মহাসচিব অধ্যাপক আব্দুস সালাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ড. মোশাররফ বলেন, ‘ফাইজার ও মডার্নার ভ্যাকসিন আমাদের দেশের জন্য প্রযোজ্য নয়। এসব আনাও সম্ভব হবে না। এ ছাড়া রাশিয়া ও চীন টিকা দিচ্ছে। অতএব, তিন-চারটি টিকাই এভেইলেভেল হবে তা নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কয়েকটি ভ্যাকসিন অনুমোদন দিয়েছে। তবে তাদের কাছে ৫০টি টিকার ব্যাপারে আবেদন করা আছে। তাই বিকল্প উত্স বলতে যেসব টিকা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক স্বীকৃত, আমাদের দেশের তাপমাত্রায় সংরক্ষণযোগ্য, পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে দেওয়া হচ্ছে সেগুলোর সঙ্গে আলোচনা করা হলে আরো কম দামে বাংলাদেশ টিকা পেতে পারত। এখনো সুযোগ আছে বলে আমরা সরকারকে বিকল্প উত্স খোঁজার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউটের মাধ্যমে অক্সফোর্ড অ্যাস্ট্রেজেনেকার ভ্যাকসিন সংগ্রহ নিয়ে জিটুজি চুক্তি হয়েছে বলে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন। আবার বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, সরকারের সঙ্গে নয়, চুক্তি হয়েছে বেক্সিমকোর সঙ্গে; যা বাণিজ্যিক চুক্তি। দুই পক্ষের পরস্পরবিরোধী বক্তব্যে জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।
তিনি বলেন, টিকা কেনার জন্য গতকাল (মঙ্গলবার) তড়িঘড়ি করে প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকার প্রকল্প একনেকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেখানেও রাখা হয়েছে বিশাল দুর্নীতির খাত। ভ্যাকসিন কিনতে গিয়ে সরাসরি প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি না করে তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে চুক্তি করায় আর্থিকভাবে বাংলাদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এর ফলে ভ্যাকসিনের প্রতিটি ডোজের দাম পড়বে প্রায় দ্বিগুণ।
ড. মোশাররফ বলেন, এত কিছু করে কয়েক কোটি ভ্যাকসিন আমদানি হলেও সাধারণ মানুষ আদৌ পাবে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। সরকারের প্রস্তাবিত জেলা ও উপজেলা কমিটির মাধ্যমে টিকা সরবরাহ করা হলে তা সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের কাছে যথাযথভাবে পৌঁছবে না। এই সরকারের তালিকা করার যে প্রক্রিয়া তাতে দলীয় লোকরাই পাবে। আর বঞ্চিত হবে সাধারণ জনগণ।
সাবেক এই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, অক্সফোর্ডের টিকা ইউরোপে বিক্রি হচ্ছে ২.৭ ডলারে। সেখানে আমরা কিনছি ৫ ডলার করে। আবার বেসরকারি খাতে উচ্চ মূল্যে চিহ্নিত কিছু মহলের কাছে প্রায় তিন মিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন বিক্রি সরাসরি জনগণের সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।
ভ্যাকসিন নিয়ে ব্যবসা করার সুযোগ দিয়ে সরকার একটি স্বার্থান্বেষী মহলকে শত শত কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। স্বার্থান্বেষী মহলকে খুশি রাখতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। অথচ একাধিক প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান ও দেশ অনেক আগেই ভ্যাকসিন ট্রায়াল ও পরবর্তী সময়ে স্বল্পমূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার সেটি গ্রহণ করেনি।
আরসি-০২