সুনামগঞ্জের ৩ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে, ভোটারের উপস্থিতি কম

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি


জানুয়ারি ১৬, ২০২১
০৫:৫৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ১৬, ২০২১
০৫:৫৭ অপরাহ্ন



সুনামগঞ্জের ৩ পৌরসভায় ভোটগ্রহণ চলছে, ভোটারের উপস্থিতি কম

সুনামগঞ্জ, ছাতক ও জগন্নাথপুরসহ তিনটি পৌরসভায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে। শনিবার সকাল ৮টা থেকে ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ভোটারের উপস্থিতি একেবারেই কম। তিন পৌরসভার ৫৪টি ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ঝ‚কিপূর্ণ চিহ্নিত ৪৪টি ভোট কেন্দ্রে ৫ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তিনটির মধ্যে কেবল জগন্নাথপুর পৌরসভায়ই প্রথমবারের মতো ইভিএমে ভোট হচ্ছে। নির্বাচনে ১০জন মেয়র, ১২০ জন কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৬ জন কাউন্সিলর প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

সরেজমিন সকাল সাড়ে ৮টায় সুনামগঞ্জ পৌর শহরের পিটিআই প্রশিক্ষণ প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় কোন ভোটার নেই। রোত পোহাচ্ছেন আনসার, পুলিশসহ ভোট কেন্দ্রের বাইরের দ্বায়িত্বপ্রাপ্তরা। তবে ভেতরে পোলিং অফিসার ও এজেন্টরা বসেছিলেন। তবে কাউন্সিলর প্রার্থীদের কারণে বেলা বাড়ার সাথে সাথে ভোটারের উপস্থিতি বাড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কিছুক্ষণ পর পৌর শহরের আরপিননগর কেবিমিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায় আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী নাদের বখত ভোট দিয়ে বেরিয়ে আসছেন। তার সঙ্গে তার বড় ভাই নজরুল বখত ও ছোট ভাই পলিন বখতসহ পরিবারে লোকজন রয়েছেন। এই ভোট কেন্দ্রে দেখা গেল ১৫-২০ জন নারী ভোটারের সারিবদ্ধ উপস্থিতি। ঝ‚কিপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কেন্দ্রের চারদিকে পুলিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। সকাল ১০টায় শহরের বুলচান্দ উচ্চ বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, দীর্ঘ ক্যাম্পাসে ভোটারের সারির জন্য আলাদা ব্যবস্থা করে বাশ ও রশি দিয়ে সারি বানানো হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি সারিই খালি। একজন দুজন ভোটার এসে সরাসরি বুথে প্রবেশ করছেন। এসময় পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমানকে পুলিশের বিশেষ দল নিয়ে স্কুলে প্রবেশ করতে দেখা যায়। তিনি কয়েকটি বুথ ঘুরে দেখেন এবং সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন।

সোয়া ১০টায় শহরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভোটারের উপস্থিতি নেই। বাইরে প্রার্থীদের লোকজন ভোটার তালিকা নিয়ে বসে আছেন। মাঠে পুলিশ ও আনসার দাড়িয়ে আছেন। এসময় স্কুলে প্রবেশ করেন জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন ও পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান। তারা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা আহমদ সাহলানকে নির্বিগ্নভাবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি কেন্দ্রে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কঠোর অবস্থানে থাকবে বলে আশ্বস্থ করেন তিনি। 

এদিকে প্রতিটি ভোট কেন্দ্রেই একজন সাব ইন্সপেক্টরসহ ৭ জন পুলিশ, ব্যাটালিয়ান আনসার, সাধারণ আনসারসহ মোট ১৯ জনের দায়িত্ব পালন করছে। তিনটি পৌরসভায়ই র‌্যাব ও বিজিবির টহল রয়েছে। ভোট কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত রয়েছে পুলিশের মোবাইল টিম। তিনটি পৌরসভায় ৩ প্লাটুন বিজিবিসহ মোবাইল টিম ও রিজার্ভে টিম রয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করছেন। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাজ করছে বিজিবি। 

এদিকে সুনামগঞ্জ পৌরসভায় ২৩ কেন্দ্রের মধ্যে ১৯ কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ চিহিৃত করা হয়েছে। জগন্নাথপুর পৌরসভায় ১২ কেন্দ্রের মধ্যে ৭ টি ঝুঁকিপূর্ণ চিহিৃত করা হয়েছে। ছাতক পৌরসভার ১৯ কেন্দ্রের মধ্যে ৯ টি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ, ৯ কেন্দ্রকে ঝুঁকিপূর্ণ চিহিৃত করা হয়েছে। ৩ পৌর এলাকায় ৩ জন প্রথম শ্রেণির জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে আইনি দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ প্রদান করেছে নির্বাচন কমিশন।

সুনামগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেণ ৪৭ হাজার ১৫ জন ভোটার। এরমধ্যে পুরুষ ভোটার ২৩ হাজার ২৩৮ এবং মহিলা ভোটার ২৩ হাজার ৭৭৭ জন।  ছাতক পৌরসভা নির্বাচনে ১৯টি কেন্দ্রে ৩০ হাজার ২৮০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করছেন। ছাতক পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামীলীগ মনোনীত নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম চৌধুরী ও বিএনপি মনোনীত ধানের শীষ প্রতীকের প্রার্থী রাশিদা আহমদ ন্যান্সি প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছেন। অপরদিকে প্রথমবারের মতো ইভিএম পদ্ধতিতে জগন্নাথপুরে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে মোট ভোটার ২৮ হাজার, ৬শ’ ৪২ জন। ৫ জন মেয়র প্রার্থী এখানে প্রতিদ্বন্ধিতা করছেন।

সুনামগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান বলেন, তিনটি পৌরসভায় পুলিশ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর অবস্থানে রয়েছে। কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

এসএস/বিএ-০১