ধর্মপাশা প্রতিনিধি
ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
০২:২৩ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২১
০২:২৩ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদের বিরুদ্ধে ওই ইউনিয়নের ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে দুর্গন্ধযুক্ত ও ভেজা চাল বিতরণের অভিযোগ উঠেছে। গুদাম থেকে বরাদ্দকৃত চাল নির্ধারিত সময়ে উত্তোলন করলেও তা যথাসময়ে বিতরণ না করায় এ সমস্যা হয়েছে। দুর্গন্ধযুক্ত ও ভেজা চাল বিতরণ করায় এ নিয়ে কার্ডধারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা দেখা দিয়েছে।
উপজেলা প্রশাসন, এলাকাবাসী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর থেকে উপজেলার বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের ২৭৬ জন ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের জন্য ৮ টন ২৮০ কেজি করে সর্বমোট ১৬ টন ৫৬০ কেজি চাল বরাদ্দ পাওয়া যায়। গত ১৯ ডিসেম্বর নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের বরাদ্দকৃত চাল উপজেলার মধ্যনগর খাদ্য গুদাম থেকে উত্তোলন করেন বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ। ওই ইউপি চেয়ারম্যান ভিজিডি কার্ডধারীদের বিপরীতে আসা এ চাল উত্তোলন করে তা ওই ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের একটি কক্ষে রেখে দেন। চাল উত্তোলনের ১ মাস ৯ দিন পর গত শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গণে ভিজিডি কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ শুরু হয়। কিন্তু চাল বিতরণকালে দেখা যায়, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে অযত্ন-অবহেলায় দীর্ঘদিন চালভর্তি বস্তাগুলো ফেলে রাখায় তা ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে হয়ে যাওয়াসহ চালে দুর্গন্ধের সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থায় ভিজিডির বরাদ্দকৃত চাল নিতে গিয়ে সুবিধাভোগীরা অনেকেই ক্ষোভ ও হতাশ প্রকাশ করেছেন।
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের কয়েকজন ভিজিডি কার্ডধারী বলেন, চেয়ারম্যান–মেম্বারদের অলসতা ও অবহেলার কারণে আমরা দুর্গন্ধযুক্ত ও ভেজা চাল পেয়েছি। প্রতি ৩০ কেজি চাল বস্তায় করে দুইমাসের জন্য দুই বস্তা (৬০ কেজি) চাল দেওয়া হয়েছে। এবার অনেক দেরিতে আমাদের চাল দেওয়া হয়েছে। দুই বস্তার মধ্যে এক বস্তার চাল ভেজা ও দুর্গন্ধযুক্ত, যা খাওয়া যাবে না।
বংশীকুন্ডা দক্ষিণ ইউনিয়নের সদস্য সনজিত সরকার ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য সাইফুল ইসলাম বলেন, দুর্গন্ধযুক্ত ও ভেজা চাল পেয়ে বেশ কয়েকজন কার্ডধারী আমাদের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ইউপি চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদের গাফিলতির কারণে এই চাল ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের একটি কক্ষে পড়ে থাকতে থাকতে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।
ভিজিডির চাল বিতরণে ওই ইউনিয়নের তদারকির দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা আবুল কালাম ফরায়েজী বলেন, 'চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসের ভিজিডি কার্ডধারীদের চাল একমাসের বেশি সময় ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে রেখে দেওয়ার বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। গত শুক্রবার কার্ডধারীদের মধ্যে চাল বিতরণ করার বিষয়টিও ইউপি চেয়ারম্যান আমাকে জানাননি।'
বংশীকুণ্ডা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আজিম মাহমুদ বলেন, 'চাল বিতরণে আমার কোনো গাফিলতি ছিল না। ইউপি সদস্যরা অসহযোগিতা করার কারণেই চাল বিতরণ করতে কিছুটা দেরি হয়েছে।'
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মুনতাসির হাসান বলেন, 'বিষয়টি আমাকে কেউ জানায়নি। কারও গাফিলতির কারণে ভিজিডি কার্ডধারীরা দুর্গন্ধযুক্ত ও ভেজা চাল পেয়ে থাকলে তদন্ত করে জড়িত ব্যক্তির বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এসএ/আরআর-০৯