আলী আহমদ, জগন্নাথপুর
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০১:৫১ পূর্বাহ্ন
আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২১
০১:৫১ পূর্বাহ্ন
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরের সর্ববৃহৎ নলুয়া হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কয়েকটি স্থানে এখনও মাটি পড়েনি। ফলে স্থানীয় কৃষকদের মধ্যে শঙ্কা বিরাজ করছে। এদিকে প্রকল্পের পাশে কাজের বিতরণ সংক্রান্ত সাইনবোর্ড স্থাপনের নির্দেশনা থাকলেও গত শনিবার দুপুরে পরিদর্শনকালে একটি বোর্ডও দেখা যায়নি।
গত শনিবার নলুয়ার হাওর ঘুরে দেখা যায়, নলুয়ার হাওরের পোল্ডার-১ এর আওতাধীন ১০ নম্বর প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। ৯ নম্বর প্রকল্পের কিছু অংশে মাটি ভরাটের কাজ চলছে। তবে অধিকাংশ অংশেই মাটি পড়েনি। ৮ নম্বর প্রকল্পের অর্ধেক কাজ বাকি রয়েছে। এ প্রকল্পের কিছু কিছু স্থানে মাটি ভরাটের কাজ এখনও শেষ হয়নি। তবে ৭ নম্বর প্রকল্পের কাজ প্রায় ৮০ ভাগের মতো শেষ হয়েছে। ৬ নম্বর প্রকল্পের ভুরাখালী বাজার (প্রাক্তন) এলাকায় বিশাল একটি ভাঙা রয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, মাছ ধরার জন্য একটি মহল হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ ভেঙেছে। ওই বড় গর্ত ভরাটে কাজ করছেন শ্রমিকরা।
কাজের দেখভালের দায়িত্বে থাকা স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রনধীর কান্ত দাস নান্টু বলেন, 'মাটির তীব্র সংকট রয়েছে। গাড়ি দিয়ে অনেকদূর থেকে মাটি আনতে হচ্ছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। এই প্রকল্পে বরাদ্দ কম দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পে ১৪ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। কাজের তুলনায় এই টাকা কম হয়েছে।'
এদিকে ৫ নম্বর প্রকল্পের ভুরাখালি গ্রামের নিকটবর্তী কবরস্থান এলাকায় মাটির কাজ শেষ হয়নি। তবে প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ শেষ। এছাড়া ৪, ৩ , ২ ও ১ নম্বর প্রকল্পের কাজ ভালো হয়েছে।
১০ নম্বর প্রকল্পের (পিআইসি) সভাপতি চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য সুজাত মিয়া বলেন, 'মাটি কাটার মেশিন এনেছি। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কাজ শেষ হবে।'
উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জগন্নাথপুরে এবার ৩৭টি পিআইসি (প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি) গঠনের মাধ্যমে ৭৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু হয়। আগামী ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজের শেষ সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে।
হাওর বাঁচাও আন্দোলন কমিটি জগন্নাথপুর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'কাজের প্রায় দুইমাস অতিবাহিত হলেও হাওরের বাঁধের কাজ শেষ হয়নি। নীতিমালা অনুযায়ী ১৫ ডিসেম্বর কাজ শুরু করে ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে শেষ করার কথা। এখনও হাওরের বেশ কয়েকটি প্রকল্পে মাটি পড়েনি। ফলে কৃষকরা শঙ্কায় আছেন।' দ্রুত কাজ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, 'এ বছর হাওর থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরু করতে একটু বিলম্ব হয়েছে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ সমাপ্ত হবে।'
জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, 'গত শুক্রবার ৩৫, ৩৬ ও ৩৭ নম্বর প্রকল্পের কাজ পর্যবেক্ষণ করেছি। এর আগের দিন নলুয়া হাওরের ১৭টি প্রকল্প পরিদর্শন করেছি। যেসব প্রকল্পে ত্রুটি রয়েছে, সেসব প্রকল্পের কাজ এক সপ্তাহের মধ্যে শেষ করার জন্য আমরা নির্দেশ দিয়েছি।'
এএ/আরআর-০৫