কোনো হাওরের বাঁধে হয়নি শতভাগ কাজ

আলী আহমদ, জগন্নাথপুর


মার্চ ০২, ২০২১
১০:৫১ অপরাহ্ন


আপডেট : মার্চ ০২, ২০২১
১১:১৩ অপরাহ্ন



কোনো হাওরের বাঁধে হয়নি শতভাগ কাজ

নীতিমালা অনুযায়ী ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ শেষ করার কথা থাকলেও সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলায় গত রবিবার পর্যন্ত একটি প্রকল্পেরও শতভাগ কাজ শেষ হয়নি। সম্প্রতি পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম সুনামগঞ্জের হাওররক্ষা বাঁধের কাজ পরিদর্শন করে আগামী ৭ মার্চ পর্যন্ত কাজের সময় বৃদ্ধি করে দেন। তবে এই বর্ধিত সময়ের মধ্যে জগন্নাথপুর উপজেলার হাওররক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হওয়া সম্ভব নয় বলে মনে করছেন হাওরপাড়ের কৃষকরা।

গত রবিবার উপজেলার সর্ববৃহৎ নলুয়ার হাওর ঘুরে দেখা গেছে, হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের প্রকল্পগুলোতে কাজ চলছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বাঁধ পরিদর্শন করবেন- এমন সংবাদে সব প্রকল্পে জোরেশোরে চলছে কাজ। সরেজমিনে দেখা যায়, ১৩, ১৪, ১৫ ও ১৬ নম্বর প্রকল্পের কিছু কিছু জায়গায় এখনও মাটি পড়েনি। তবে এসব প্রকল্পে কাজ চলছে।

১৫ নম্বর প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) সভাপতি আবু ছালেহ বলেন, 'অনেকদূর থেকে মাটি আনতে হচ্ছে। তাই মাটির কাজ শেষ করতে কিছু বিলম্ব হচ্ছে। তিন-চারদিনের মধ্যে মাটির কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।' অনুরূপ অভিমত জানান অন্য প্রকল্পগুলোর দায়িত্বশীলরা।

হাওরপাড়ে কথা হয় ভূরাখালি গ্রামের বাসিন্দা কৃষক রেজা মিয়ার সঙ্গে। তিনি বলেন, 'যেভাবে কাজ হচ্ছে তাতে পাউবোর নীতিমালা অনুযায়ী কাজ শেষ করতে  কমপক্ষে আরও ১ মাস সময় লাগবে।' 

চিলাউড়া হলদিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আরশ মিয়া বলেন, 'নিয়ম অনুযায়ী ২৫ শতাংশ কিস্তিতে চারবারে অর্থ পরিশোধ করার কথা। এ বছর দ্বিতীয় কিস্তির টাকা ২৫ শতাংশের মধ্যে মাত্র ১৫ শতাংশ পাওয়া গেছে। অর্থের অভাবে অনেক পিআইসি কাজ করতে পারছে না।'

হাওর বাঁচাও আন্দোলন জগন্নাথপুর উপজেলা কমিটির আহ্বায়ক সিরাজুল ইসলাম বলেন, 'হাওর ঘুরে দেখা গেছে, এখনও অনেক প্রকল্পে মাটির কাজ শেষ হয়নি, কোনো প্রকল্পে আনুষাঙ্গিক কাজগুলোও শুরু হয়নি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী টেকসই বাঁধ নির্মাণ ও ঘাস লাগানোর কাজ কোনো প্রকল্পে শুরু হয়নি। সময়মতো কাজ শুরু না হওয়ায় আমরা বাঁধের কাজ নিয়ে চিন্তিত।'

উপজেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়, জগন্নাপুরে এবার ৩৭টি পিআইসি গঠনের মাধ্যমে ৭৫ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ সংস্কার কাজ শুরু হয়েছে। কাজের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে বাঁধের কাজ শুরু হয়। গতকাল ২৮ ফেব্রুয়ারি কাজের সময়সীমা নির্ধারণ করা ছিল। তবে পরে তা আরও ১ সপ্তাহ বাড়িয়ে ৭ মার্চ নির্ধারণ করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জগন্নাথপুর উপজেলার মাঠ কর্মকর্তা উপ-সহকারী প্রকৌশলী হাসান গাজী বলেন, 'এ বছর হাওর থেকে পানি নামতে দেরি হওয়ায় কাজ শুরু করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। গড়ে ৭০ ভাগ মাটির কাজ হয়েছে। আর বরাদ্দ কম পাওয়ায় পিআইসিদের দ্বিতীয় কিস্তির টাকা কম দেওয়া হয়েছে।'  

জগন্নাথপুর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মেহেদী হাসান বলেন, 'আমরা প্রতিদিন হাওররক্ষা বাঁধের কাজ পরিদর্শন করে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করছি। চেষ্টা চলছে আগামী ১ সপ্তাহের মধ্যে কাজ শেষ করার।'

 

এএ/আরআর-১৬