তাহিরপুরে ৩ মাসে পরীক্ষা হয়নি একটিও নমুনা!

আবির হাসান-মানিক, তাহিরপুর


মে ০৭, ২০২১
০২:৫৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ০৭, ২০২১
০২:৫৪ পূর্বাহ্ন



তাহিরপুরে ৩ মাসে পরীক্ষা হয়নি একটিও নমুনা!

ভাটির জনপদ খ্যাত সুনামগঞ্জের হাওর পরিবেষ্টিত উপজেলা তাহিরপুরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছিল গত বছরের ৫ মে। আক্রান্তদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা ও গাজীপুর ফেরত তিন পুরুষ এবং তিন নারী পোশাককর্মী। করোনা রোগী শনাক্তের খবর পেয়ে প্রথমে ভড়কে গেলেও এ অঞ্চলের লোকজন এখন আর মানতে চাইছেন না মহামারি করোনা বলে কিছু আছে! উপজেলাভিত্তিক কোভিড-১৯ প্রতিবেদন থেকে প্রাপ্ত তাহিরপুর উপজেলার প্রতিবেদনও সে ইঙ্গিত দিচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে করোনার নমুনা সংগ্রহের পর্যাপ্ত কিট ও জনবল থাকা সত্তে¡ও গত তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে উপজেলার কেউ নিজের নমুনা দিতে আগ্রহ দেখায়নি।

যদিও প্রথমদিকে করানো রোগী শনাক্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ভীতসন্ত্রস্ত লোকজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নমুনা দিলে বাড়তে শুরু করেছিল করোনা রোগী শনাক্তের সংখ্যা। শনাক্তদের আইসোলেশেন রাখাসহ সারা দেশের ন্যায় তাহিরপুরে আক্রান্ত বা করোনার উপসর্গ রয়েছে এমন রোগীদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়। পাশাপাশি করোনা রোগীদের জন্য হাসপাতালে আলাদা শয্যাও প্রস্তুত করে রাখা হয়।

সর্বশেষ প্রাপ্ত (গত মঙ্গলবার) উপজেলাভিত্তিক কোভিড-১৯ প্রতিবেদন অনুযায়ী তাহিরপুর থেকে পরীক্ষা হওয়া মোট নমুনার সংখ্যা পৌঁছে ৫৪১ জনের, যার মধ্য থেকে ৫২৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফল পাওয়া গেছে। এ পর্যন্ত উপজেলায় মোট করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৫৬ জনে দাঁড়িয়েছে। আক্রান্তদের মধ্য থেকে এ পর্যন্ত ১ জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। বাকি ৫৫ জনই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আর গত ৩ মাস আগে তাহিরপুরে কোভিড-১৯ প্রতিবেদন অনুযায়ী পরীক্ষাকৃত নমুনার সংখ্যা যা ছিল, আজও সেখানেই স্থিতিশীল রয়েছে।  

এদিকে, সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে টিকাদান কর্মসূচি শুরু হলে তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকেও ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ নিতে দেখা গেছে অনেককে। এছাড়া ভ্যাকসিন কার্যক্রম স¤প্রসারণের অংশ হিসেবে বাদাঘাট ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র সপ্তাহের প্রতি রবিবার টিকাদান কর্মসূচি শুরু করে।

কিছুদিন আগে হঠাৎ দেশজুড়ে দ্বিতীয় ধাপে করোনাভাইরাস শনাক্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তে থাকে। দেশব্যাপী কয়েক দফায় বাড়ানো হয় লকডাউনের সময়সীমা। কিন্তু তাহিরপুরে ছিল না লকডাউনের কোনো ছাপ। মানুষের মধ্যেও আগের মতো করোনা নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। পরীক্ষার জন্য নমুনা দিতেও কেউ আর আগ্রহ দেখাচ্ছেন না।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট এ কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, নতুন করে নমুনা দিতে না এলেও করোনা টিকার প্রথম ডোজ যাদেরকে দেওয়া হয়েছে, চলতি মাসের ১৮ তারিখ থেকে তাদের দ্বিতীয় ডোজ প্রদানের কার্যক্রম শুরু হবে।

তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ইকবাল হোসেন বলেন, উপজেলায় গত ৩ মাস ধরে করোনার নমুনা পরীক্ষা শূন্যে নেমেছে তা সত্যি। টেস্টের জন্য পর্যাপ্ত কিট, জনবল ও প্রচার থাকা সত্তে¡ও লোকজন আগের মতো আগ্রহ দেখাচ্ছে না।

 

এএইচ/আরআর-০১