হাইমলিক কৌশলে কাস্টমারের প্রাণ বাঁচালেন বাংলাদেশি যুবক

সিলেট মিরর ডেস্ক


মে ২৭, ২০২১
০৪:৪৮ অপরাহ্ন


আপডেট : মে ২৭, ২০২১
০৪:৪৮ অপরাহ্ন



হাইমলিক কৌশলে কাস্টমারের প্রাণ বাঁচালেন বাংলাদেশি যুবক

হাইমলিক কৌশলের (শ্বাসনালী থেকে খাবার অপসারণ) প্রয়োগ করে ব্রিটেনে হিরো বনে গেছেন এক বাংলাদেশি যুবক। রেস্টুরেন্টে এই পদ্ধতিতে এক গ্রাহকের জীবন বাঁচিয়েছেন তিনি।

বিবিসি, ডেইলি মেইলসহ ব্রিটেনের প্রভাবশালী প্রায় সব গণমাধ্যমে ওই যুবকের প্রশংসা করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। ওই যুবকের নাম শেখ নাজমুল হাসান রিফাত।

ব্যাঙ্গোর তন্দুরি নামের যে রেস্টুরেন্টে ঘটনাটি ঘটেছে তার মালিক মৌলভীবাজারের ছেলে মোহাম্মদ মোস্তাকিম রাজা (উপরের ছবিতে বাঁয়ে)। তিনি জানিয়েছেন, রিফাত ২০১৯ সালে ইংল্যান্ডে যান। বাড়ি ঢাকার উত্তরার কামারপাড়া এলাকায়।

মোস্তাকিম রাজার রেস্টুরেন্টে আড়াই বছর ধরে কাজ করছেন এই তরুণ। বাবার নাম মোহাম্মদ আশরাফুল।

শ্বাসনালীতে খাবার আটকে গেলে এই পদ্ধতি প্রয়োগ ছাড়া তাৎক্ষণিকভাবে ব্যক্তিকে বাঁচানো অসম্ভব। অধিকাংশ মানুষের কাছে এটি অজানা। 

মানুষের গলা একটা চৌরাস্তার মতো। নাক দিয়ে বাতাস যায়, মুখ দিয়ে বাতাস যায়, ভেতর দিয়ে আবার দুটো রাস্তা। সামনের রাস্তাটা শ্বাসনালী, পেছনেরটা খাদ্যনালী। খাবার যাবে খাদ্যনালীতে। খুব বিরল পরিস্থিতিতে শক্ত খাবার শ্বাসনালীতে যেতে পারে।

তখন বিশেষ পদ্ধতিতে পেটে নাভির অংশে চাপ দিয়ে সেই শক্ত খাবার চার মিনিটের মধ্যে বের করতে হয়। এক বছরের বাচ্চাদের ক্ষেত্রে পিঠে চাপ দিতে হয়।

রোগীর পেছনে গিয়ে কৌশল প্রয়োগকারী ব্যক্তির দুই হাত এক করে নাভিতে প্রথমে নিচে পুশ করে উপরের দিকে প্রেশার দিলে শ্বাসনালী থেকে খাবার বেরিয়ে যায়। 

রিফাত ওই ব্রিটিশ যুবকের প্রাণ বাঁচান ২৩ মে। সেদিনের একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, একবারের চেষ্টায় শ্বাসনালী থেকে খাবার বের করতে পারেননি তিনি।

অষ্টম চাপে যুবক স্বাভাবিক নিঃশ্বাস নিতে শুরু করেন। এসময় তার বন্ধুসহ রেস্টেুরেন্টে উপস্থিতি অন্যরা হাততালি দিয়ে রিফাতকে অভিনন্দন জানান। অবশ্য ঘটনার শুরুতে তারা এর গুরুত্ব বুঝতে পারেননি।

রিফাত স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেছেন, ‘আমি গ্রাহকের দিকে তাকিয়ে দেখি অস্বস্তিতে আছেন। জ্যাক নামের ওই ব্যক্তির মুখ তখন লাল। চোখ দিয়ে পানি পড়ার মতো অবস্থা।’

‘দুই থেকে তিন সেকেন্ডে আমি বুঝে যাই ঠিক কী হয়েছে। টেবিল থেকে তাকে টেনে পাকস্থলীতে চাপ দেই। কয়েক বারের চেষ্টায় শ্বাসনালী থেকে চিকেন বেরিয়ে আসে।’

রিফাত এই কৌশল শিখেছেন তার বাবার থেকে। ছোটবেলায় তার বাবা এভাবে রিফাতের জীবন বাঁচিয়েছিলেন।

ওই গ্রাহক জীবন ফিরে পেয়ে রিফাতকে জড়িয়ে ধরেন। পরে তাকে টিপস দেন। ঘোরার আমন্ত্রণ জানান।

রিফাত বলেন, ‘প্রথমে আমি টিপ নিতে চাইনি। কারণ আমি মুসলিম। আমার ধর্মে বলা আছে, সাহায্য করলে নিঃস্বার্থভাবে করতে হয়।’

‘ওনার জীবন বাঁচানোর সময় আমি অত কিছু ভাবিনি। আমার শুধু একটা কথাই মনে হয়েছে, এটা বিপজ্জনক। ওনার স্বাভাবিক নিশ্বাস ফিরিয়ে আনতেই হবে।’

‘উনি বেঁচে আছেন তাতেই আমার শান্তি।’

বি এন-০৯