সিলেটে জাতীয় হারের দ্বিগুণ করোনা শনাক্ত

নিজস্ব প্রতিবেদক


জুন ০৪, ২০২১
০২:২৩ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুন ০৪, ২০২১
০২:২৩ পূর্বাহ্ন



সিলেটে জাতীয় হারের দ্বিগুণ করোনা শনাক্ত

সিলেট জেলায় ঈদের পর থেকে বাড়ছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। গত মে মাসের শেষ দশ দিনে সিলেটে প্রতি ১০০টি নমুনা পরীক্ষায় শনাক্ত হয়েছেন ১৭ জন। অথচ এই সময়ে সারাদেশে শনাক্তের হার ছিল ৯। 

জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, জেলায় গত মে মাসের প্রথম ১১ দিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৫ হাজার ১৫১টি। করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫২০ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ দশমিক ০৯ শতাংশ। পরের দশ দিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৪৭৪টি। শনাক্ত হয়েছেন ৪৭১ জন।

পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ। আর মাসের শেষ দশদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ৩ হাজার ৬০৫টি। এ সময় করোনা শনাক্ত হয় ৬১৫ জনের। পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১৭ শতাংশ।

এদিকে, সারাদেশে গত দশদিনে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার ৩৫৬টি। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৪ হাজার ৫৭৯ জনের। শনাক্তের হার ৯ দশমিক ০৯ শতাংশ। অর্থাৎ সিলেটে শেষ দশদিনে শনাক্তের হার সারাদেশে শনাক্তের হারের প্রায় দ্বিগুণ। 

মে মাসে বিভাগে করোনা শনাক্ত হয়েছে ২ হাজার ৩ জনের। এর মধ্যে প্রথম দশদিনে শনাক্ত হয় ৬১৯ জনের। এ সময় মৃত্যু হয় ২৩ জনের। পরের দশ দিনে শনাক্ত হয় ৫১৯ জনের। মৃত্যু হয় ১৩ জনের। আর শেষ দশ দিনে ৭৩৭ জন শনাক্ত হন। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৭ জনের। মে মাসে সিলেট জেলায় করোনা শনাক্ত হয় ১ হাজার ৬০৬ জনের, সুনামগঞ্জে ৮৭ জনের, হবিগঞ্জে ১৩৫ জনের এবং মৌলভীবাজার জেলায় ১৭৫ জনের। 

জানা যায়, গত বছরের ৫ এপ্রিল সিলেট বিভাগে প্রথম করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। প্রথম দিকে শনাক্তের হার বেশি না হলেও সে বছরের জুন-জুলাইয়ে শনাক্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। তবে আগস্টের পর কমতে থাকে। এ বছরের প্রথম দুই মাস বিভাগে সংক্রমণ ছিল নিয়ন্ত্রণে।

তবে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আবারও বাড়তে থাকে শনাক্ত। সংক্রমণ ঠেকাতে ১৪ এপ্রিল থেকে শুরু হয় বিধি-নিষেধ। এরপর মাসের শেষ দিকে আবার সংক্রমণ কমে। মে মাসেও প্রথম দিকে শনাক্ত কমার দিকে থাকলেও শেষ দিকে এসে বাড়তে শুরু করেছে। ঈদকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানতে উদাসীনতা ও গাদাগাদি করে চলাচল করার কারণেই আশঙ্কাজনক হারে সংক্রমণ বেড়েছে বলে মনে করছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। 

এ বিষয়ে সিলেটের ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. জন্মেজয় দত্ত সিলেট মিররকে বলেন, ‘ঈদের সময় স্বাস্থ্যবিধি না মেনে শপিং মল-বাজারে ভিড় করাই সংক্রমণ বৃদ্ধির প্রধান কারণ। মানুষজন গাদাগাদি করে বাড়ি ফিরেছেন। এখন এর মাশুল দিতে হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘তবে সংক্রমণ বাড়লেও মৃত্যুহার খুব একটা বাড়েনি যা আমাদের জন্য স্বস্তির। তবে সংক্রমণ নওগা-রাজশাহী বা চাপাইনবাবগঞ্জের মতো বাড়লে তা হবে উদ্বেগজনক। তখন সরকারের নির্দেশ মতো জেলায়ও লকডাউনের বিষয়ে চিন্তা করতে হবে। তবে আমাদের টিকার দিকে জোর দিতে হবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বেশি মানুষকে টিকা নিশ্চিত করতে হবে। তখন মানুষের মধ্যে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। কারণ লকডাউন দিলে অর্থনীতির উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।’

আরসি-০২