ধর্মপাশায় সরকারি খাদ্য গুদামে ধীরগতিতে ধান সংগ্রহ

ধর্মপাশা প্রতিনিধি


জুন ১৫, ২০২১
০৯:১৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জুন ১৬, ২০২১
০১:৩৭ পূর্বাহ্ন



ধর্মপাশায় সরকারি খাদ্য গুদামে ধীরগতিতে ধান সংগ্রহ

সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার সরকারি দুটি খাদ্য গুদামে কৃষকদের কাছ থেকে সরকারি নির্ধারিত মূল্যে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম চলছে ধীরগতিতে। এ উপজেলায় ৪ হাজার ৩১ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ৭৯২ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ধানের দাম সরকারি ন্যায্যমূল্যের প্রায় কাছাকাছি হওয়ায় এই ধান সংগ্রহ কার্যক্রম মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় ধান সংগ্রহের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ উপজেলার মধ্যনগর ও ধর্মপাশা এই দুই বাজারে দুটি সরকারি খাদ্য গুদাম রয়েছে। মধ্যনগর খাদ্য গুদামে দুই হাজার ১০৯ টন ও ধর্মপাশা খাদ্য গুদামে ১ হাজার ৯২২ টন ধান বরাদ্দ পাওয়া যায়। প্রতি কেজি ধান ২৭ টাকা দামে ও প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৮০ টাকা দামে কৃষকদের কাছ থেকে সংগ্রহ করার জন্য সরকারি নির্দেশনা রয়েছে। প্রত্যেক কৃষক সর্বোচ্চ ৩ টন করে ধান গুদামে বিক্রি করতে পারবেন।

গত ৬ মে থেকে এ উপজেলার দুটি সরকারি খাদ্য গুদামে ন্যায্য মূল্যে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়। ধান সংগ্রহের সর্বশেষ সময়সীমা আগামী ৩১ আগস্ট। গতকাল মঙ্গলবার পর্যন্ত ধর্মপাশা খাদ্য গুদামে ৩৭৮ টন ও মধ্যনগর খাদ্য গুদামে ৪১৪ টন ধান সংগ্রহ করা হয়েছে।

মধ্যনগর ইউনিয়নের মধ্যনগর বাজার এলাকার বাসিন্দা কৃষক আলা উদ্দিন বলেন, খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে বিক্রি করতে গেলে সংশ্লিষ্টরা ধানের আর্দ্রতা পরীক্ষা করে সরকারি নির্দেশনামতো হলে তারপর তারা ধান ক্রয় করে থাকেন। এছাড়া আরও নানা দিক সামলাতে হয়। আর হাট-বাজারে নিয়ে ধান বিক্রি করলে কোনোরকম ঝামলা ছাড়াই সরকারি সমমূল্যে ধান সহজেই বিক্রি করা যাচ্ছে। বর্তমান সরকার কৃষকবান্ধব সরকার। তাই কৃষকদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করে সরকারিভাবে ধানের দাম বৃদ্ধি করার দাবি জানাচ্ছি।

উপজেলার মধ্যনগর বাজার ধান-চাল আড়তদার কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. জহিরুল হক বলেন, ধানের জাতভেদে ধানের মূল্য নির্ধারণ হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রতি মণ ধান ১ হাজার ১০ টাকা থেকে ১ হাজার ৮০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে। ধানের দাম কখনও বাড়ছে আবার কখনও কিছুটা কমছে।

ধর্মপাশা খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) নৃপেন্দ্র কুমার নাথ ও মধ্যনগর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) অবিনাশ দাস বলেন, উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে ধানের দাম সরকারি ন্যায্য মূল্যের প্রায় সমান সমান থাকায় খাদ্য গুদাম দুটিতে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম বিঘ্নিত হচ্ছে। এভাবে বাজার দর অব্যাহত থাকলে খাদ্য গুদাম দুটিতে সরকারিভাবে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কোনো অবস্থাতেই সম্ভব নয়। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অবগত রয়েছেন।

ধর্মপাশা উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রকের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা তাহিরপুর উপজেলার খাদ্য নিয়ন্ত্রক বি এম মুশফিকুর রহমান বলেন, সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে এ উপজেলার হাট-বাজারগুলোতে কৃষকরা ভালো দামে ধান বিক্রি করতে পারছেন। এ অবস্থায় খাদ্য গুদামে ধান নিয়ে আসার ব্যাপারে কৃষকদের তেমন আগ্রহ নেই। তাই খাদ্য গুদাম দুটিতে এবার ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে না বলে মনে হচ্ছে। তবে লক্ষমাত্রা অর্জনে আমরা  সবরকম চেষ্টা করে আসছি।

এস এ/বি এন-১০