রাজনগরে ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

রাজনগর প্রতিনিধি


জুলাই ১৩, ২০২১
০১:২৬ পূর্বাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৪, ২০২১
০১:২৮ পূর্বাহ্ন



রাজনগরে ইউপি চেয়ারম্যান সাময়িক বরখাস্ত

সরকারি টাকায় অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের কারণে মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার ৩ নম্বর মুন্সিবাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালেক মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসেকের সুপারিশে তাকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে জানিয়ে কেন তাকে চূড়ান্তভাবে বহিষ্কার করা হবে না তার কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে মন্ত্রণালয়।

রবিবার (১১ জুলাই) স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো. আবু জাফর স্বাক্ষরিত নোটিশের অনুলিপি পাঠানো হয়েছে মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক ও রাজনগরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে। আগামী ১০ দিনের ভেতরে এর জবাব দিতে বলা হয়েছে।

এই নোটিশের সূত্রে জানা যায়, মুন্সিবাজার ইউনিয়ন পরিষদের অধিগ্রহণকৃত ভূমিতে সরকারি টাকা ব্যয়ে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগ স্থানীয় তদন্তে প্রমাণিত হওয়ায় মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসকের সুপারিশে জনস্বার্থে তাকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে জানতে ইউপি চেয়ারম্যান ছালেক মিয়ার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউনিয়নের পরিত্যক্ত কিছু জায়গা (কামারপট্টি) যদি কাজে লাগানো যায়, তবে ইউনিয়নের আয় বাড়বে। পাশাপাশি এলোমেলোভাবে ব্যবসা করা লোকদেরও একটা স্থান হবে। আমরা ওয়ার্ড কমিটি গঠন করি এবং তৎকালীন ইউএনও মহোদয় আমাদের অনুমতি দেন ও কাজ শুরু করি। এর মধ্যে কিছু ভূমিখেকো তাদের স্বার্থের দৃষ্টিকোণ থেকে ইউনিয়ন পরিষদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মহলে ও পূর্বতন ইউএনও'র কাছে অভিযোগ দেয়। একটি ঘর নিয়েও তখনকার ইউএনও'র সঙ্গে আমার মতবিরোধ দেখা দিলে অভিযোগের প্রেক্ষিতে তিনি সংশ্লিষ্ট মহলে আমার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন দেন। এরপর বর্তমান ইউএনও প্রিয়াংকা পাল মহোদয় ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) উর্মি রায় উক্ত বিষয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে জায়গা জরিপ করে আমার বিরুদ্ধে কিছুই পাননি। লিগ্যাল কিছু অনুমতিপত্রও আমার কাছে আছে। আজ দেড় বছর পর বর্তমান প্রতিবেদন উপস্থাপন না করে ডিসি মহোদয় পূর্বতন ইউএনও ফেরদৌসী আক্তারের প্রতিবেদনটি গ্রহণ করায় এমন অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। অথচ বর্তমানের ইনভেস্টিগেশনে আমার বিরুদ্ধে কিছুই পাননি নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল। কারণ দর্শানোর নোটিশটির বিপরীতে আমি সঠিক মাধ্যমে  জবাব দেব।    

উপজেলা চেয়ারম্যান শাহাজান খান বলেন, আমার কাছে এ রকম কাগজ এসেছে। তবে ব্যস্ততা থাকায় আমি এখনও পড়িনি। হাতের কাজ শেষ করেই পড়ব।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। কিন্তু এখনও অফিসিয়াল কাগজপত্র আমার কাছে আসেনি।

এদিকে অনুসন্ধান করতে গিয়ে জানা যায়, ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে রয়েছে দুটি সরকারি প্রতিবেদন। যেখানে উল্লেখ করা হয়, ছালেক চেয়ারম্যান সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড কমিটির সদস্যদের স্বতঃস্ফূর্ত অনুমতির ভিত্তিতে এই প্রকল্প নেননি। তারা এ বিষয়ে অবগত নন। সরেজমিন তদন্তে সেটা প্রমাণিত হয়। এছাড়া তিনি উক্ত স্থাপনা নির্মাণের সময় মুন্সিবাজারস্থ জায়গা দখল করেছেন, যা সম্পূর্ণ অবৈধ। এটি সহকারী কমিশনারের (ভূমি) রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, নির্মিত কামারপট্টির দোকানঘর কোনো প্রকার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ না করেই অর্থাৎ নীতিমালা না মেনে ব্যবসায়ীদের নিকট বরাদ্দ করেছেন, সেটাও অবৈধ।


এফএইচ/আরআর-১৬