মৌলভীবাজারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬৮ হাজার পশু

সাইফুল্লাহ হাসান, মৌলভীবাজার


জুলাই ১৩, ২০২১
০৯:৩৪ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৩, ২০২১
১১:৪৭ অপরাহ্ন



মৌলভীবাজারে কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৬৮ হাজার পশু

আর কিছুদিন পর পবিত্র ঈদুল আজহা। ঈদকে সামনে রেখে মৌলভীবাজার জেলায় ৬৮ হাজার ৩১১টি গবাদিপশু বিক্রির জন্য প্রস্তুত রয়েছে। জেলার ৭টি উপজেলায় রয়েছে কম-বেশি আড়াই হাজার গবাদিপশুর খামার। এ পশুগুলোর মধ্যে রয়েছে গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া। প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বলেছেন, জেলার শতভাগ গরু প্রাকৃতিক খাবার দিয়ে মোটাতাজা করা হয়।

কথা হয় রাজনগর উপজেলার ব্যবসায়ী নুরুল ইসলাম বাবরের সঙ্গে। শখের বশে ৪টি দিয়ে শুরু করে তার খামারের মূলধন এখন ১ কোটি টাকার উপরে। নুরুল ইসলামের খামারে এখন বিভিন্ন জাতের ৩৭টি গরু রয়েছে। তিনি বলেন, গত বুধবার হলস্টেইন-ফ্রিজিয়ান জাতের একটি গাভী একসঙ্গে দুটি বাছুর প্রসব করেছে। ঈদের বাজারে বিক্রির জন্য প্রস্তুত আছে আমার গরুগুলো। অর্ধকোটি টাকা বিনিয়োগ আর প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহযোগিতায় এমন সুফল পেয়েছি। 

প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের মাঠ পর্যায়ের জরিপে জানা গেছে, করোনা সংক্রমণের কারণে বহু প্রবাসী এবার দেশে আসতে পারছেন না। ফলে পশুর চাহিদা খুব বেশি হবে না। চাহিদা যতটুকু হবে, তা স্থানীয় গবাদিপশুই পূরণ করবে বলে প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের ধারণা। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আসন্ন পবিত্র কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলায় ৬৮ হাজার ৩১১টি পশু মজুদ রাখা হয়েছে। জেলায় খামারি রয়েছেন ২ হাজার ৩৬৫ জন। খামারিদের গরু-মহিষের সংখ্যা ৪৭ হাজার ২৫২টি এবং ছাগল-ভেড়ার সংখ্যা ২১ হাজার ৫৯টি। 

খামারি ওদুদ আহমদ বলেন, আমার খামারে এখন ২৫টি গরু রয়েছে। গত ৫ বছর থেকে গরুর খামার করে আসছি। এখনও আমার খামারের গরু একটিও বিক্রি করতে পারনি। আমিসহ ৪ জন লোক নিয়মিত খামারে কাজ করি। অপরিকল্পিতভাবে পশু মোটাতাজা করার জন্য আমি কোনো প্রকার ওষুধ ব্যবহার করছি না। সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে ভালো খাবার খাওয়ানোর মধ্যমে এবং সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে আমি গরু মোটাতাজা করছি। এসব গরুর চাহিদা বেশি। 

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো আব্দুস সামাদ সিলেট মিররকে বলেন, বর্তমান সময়ে করোনার ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। ৭টি উপজেলাসহ জেলায় সরকারিভাবে ৯টি অনলাইনভিত্তিক কোরবানির পশু বিক্রয় কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বেসরকারিভাবে (ব্যক্তিগতভাবে) আরও ৩টিসহ মোট ১২টি অনলাইন প্লাটফর্ম তৈরি করা হয়েছে। 

তিনি বলেন, জেলার বিভিন্ন খামার পরিদর্শন করে এটা সবচেয়ে ভালো লেগেছে খামারিরা কৃত্রিমভাবে পশু মোটাতাজা করছেন না। কৃত্রিম উপায়ে কেউ যাতে গরু মোটাতাজাকরণ করতে না পারে, তা নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে। গত কয়েকদিন আগে বাছাইকৃত ৫৫০ জন খামারিকে ট্রেনিং দেওয়া হয়েছে। অন্যান্য জেলার চেয়ে মৌলভীবাজারের পশুগুলো শতভাগ প্রাকৃতিকভাবে মোটাতাজা করা হয়। জেলার গরুগুলো কৃত্রিম উপায়ে মোটাতাজা করা হয় না বলে সাধারণ ক্রেতাদের মাঝেও বেশ সাড়া ফেলেছে এসব খামারের গরু।


এসএইচ/আরআর-০১