সৈয়দ ফুয়াদ হোসেন, রাজনগর
জুলাই ১৭, ২০২১
১২:৫৪ পূর্বাহ্ন
আপডেট : জুলাই ১৭, ২০২১
০২:৩৭ পূর্বাহ্ন
মৌলভীবাজার জেলার রাজনগর উপজেলার খামারিরা চলমান লকডাউনে পশু বিক্রি নিয়ে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। আর্থিক লোকসানের শঙ্কা বাড়ছে তাদের। লকডাউনের কারণে ক্রেতা তুলনামূলক কম থাকায় আর কোরবানির পশুর হাটের অনুমতি নিয়ে এখনও অনিশ্চয়তা থাকায় উদ্বিগ্ন উপজেলার ছোট-বড় খামারিরা। পশুখাদ্যের দাম বাড়ায় বিক্রি করতে যত দেরি হবে, ততই ব্যয় বাড়বে বলে জানিয়েছেন তারা।
খামার মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আকার ও জাতভেদে একেকটি গরুকে ঘাস, খড় ছারাও দৈনিক ১০০-২০০ টাকার দানাদার খাবার দিতে হয়। রয়েছে বিদ্যুৎ বিল ও শ্রমিক খরচ। সব বিষয়াদি মিলিয়ে সারা বছরে বড় অঙ্কের বিনিয়োগ করতে হয় তাদের। লকডাউন থাকায় দূর-দুরান্ত থেকে ক্রেতারা আসতে পারছেন না। হাট বসবে না কি খামার থেকে পশু কিনবেন- এ নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যেও সিদ্ধান্তহীনতা রয়েছে বলে তারা মনে করছেন। প্রাণিসম্পদ অফিস অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার করলেও মফস্বলে এ ব্যাপারে সুফল মিলবে কি না এ নিয়ে তাদের সন্দেহ রয়েছে। এ অবস্থায় খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পাশাপাশি পুঁজি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। তাদের আশা, এখনই গবাদি পশুর অস্থায়ী হাটের অনুমতি দিলে হয়তো ক্ষতি একটু পুষিয়ে নেওয়া যেতে পারে।
রাজনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের রায়হান ডেইরি ফার্মের সত্ত্বাধিকারী নুরুল ইসলাম বাবর জানান, তার খামারে শাহিওয়াল ও ফিজিয়ান মিলিয়ে ১২টি বিক্রয়যোগ্য গরু রয়েছে। খাবার বাবদ এসব গরুর জন্য দৈনিক প্রায় দেড় হাজার টাকা খরচ হয়। আরও রয়েছে বিদ্যুৎ বিল ও শ্রমিক খরচ। যত সময় যাচ্ছে তত ব্যয় বাড়ছে। ঈদকে সামনে রেখে গরুগুলো বিক্রি করতে না পারলে বড় লোকসানে পড়তে হতে পারে। ঈদের আগে অন্তত ৭ দিন লকডাউন তুলে দিয়ে হাটের অনুমতি দিলে গরুগুলো বিক্রি করে দিতে পারবেন বলে আশা করেন তিনি।
মনসুরনগর ইউনিয়নের চকিরাঐ গ্রামের শরীফা এগ্রো খামারের পরিচালক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের খামারে ৭০টি বিক্রয়যোগ্য গরু রয়েছে। এখন কোরবানির সময়ে লকডাউন থাকায় হাট-বাজার বন্ধ। ক্রেতারাও আসতে পারছেন না। ফলে দুশ্চিন্তা তো আছেই।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছর উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে ছোট-বড় মিলিয়ে ৩৬৬টি খামারে কোরবানিযোগ্য গরু ও মহিষ রয়েছে ৪ হাজার ৭০০টি এবং ছাগল ও ভেড়া রয়েছে ২ হাজার ৫০০টি। উপজেলায় সব মিলিয়ে এবার সাড়ে ৭ হাজার গবাদি পশুর চাহিদা রয়েছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিবাস চন্দ্র পাল বলেন, আমরা অনলাইনে ও ফেসবুকে গবাদি পশুর ছবি ও বিস্তারিত তথ্য প্রচার করে খামারিদের সহযোগিতা করতে চেষ্টা করছি। পশু আগে কিনে রাখার ঝামেলা এড়াতে অনেকে দেরিতে ক্রয় করেন। আরও সময় গেলে আশা করি খামারিরা গবাদি পশু বিক্রি করতে পারবেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা প্রিয়াংকা পাল বলেন, অস্থায়ী হাটের ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ থেকে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত পাইনি। তবে লকডাউনের পর থেকে সাপ্তাহিক হাটগুলোতে গবাদি পশু বিক্রি করা যাবে।
এফএইচ/আরআর-১০