লোকসানের আশঙ্কায় সুনামগঞ্জের খামারিরা

সাঈদুর রহমান আসাদ, সুনামগঞ্জ


জুলাই ১৮, ২০২১
১০:২৮ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ১৮, ২০২১
১০:২৮ অপরাহ্ন



লোকসানের আশঙ্কায় সুনামগঞ্জের খামারিরা
কোরবানিযোগ্য পশু ৪৮ হাজার ৮০৩টি

সুনামগঞ্জে খামারিদের মাঝে হাটে গরু নিয়ে যাওয়ার আনন্দ যেমন আছে, তেমনি লোকসানের আশঙ্কাও করছেন তারা। খামারিরা বলছেন, অনেক টাকা খরচ করে গরুর লালন-পালন করেছেন, লক্ষ্য ছিল খামারে পালন করা পশুর ভালো দাম পাবেন। কিন্তু মহামারি করোনায় সব মানুষই বেকায়দায় পড়েছেন। টাকা-পয়সা নেই মানুষের হাতে। তাই কোরবানির পরিমাণও অন্য বছরের তুলনায় কম হবে। এজন্য বাজারে ক্রেতাও কম।

সুনামগঞ্জ প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় মোট ৪৮ হাজার ৮০৩টি কোরবানিযোগ্য পশু রয়েছে। এর মধ্যে বেশিরভাগই গরু। এই পশুগুলো কেনাবেচা করার জন্য পুরো জেলায় স্থায়ী ও অস্থায়ী ৫০টি কোরবানির হাট বসেছে। এর মধ্যে সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় ৬টি, বিশ্বম্ভরপুরে ৫টি, তাহিরপুরে ২টি, ধর্মপাশায় ৪টি, দিরাইয়ে ২টি, জগন্নাথপুরে ৯টি, দোয়ারাবাজারে ১০টি, ছাতকে ৫টি, জামালগঞ্জে ১টি, শাল্লায় ৩টি ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ৩টি পশুর হাট বসেছে। এছাড়া অনলাইন প্লাটফর্মে কোরবানির যোগ্য পশু বিক্রয়ের জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন তারা। রবিবার (১৮ জুলাই) পর্যন্ত অনলাইনে ১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা মূল্যে ৩০১টি কোরবানির পশু বিক্রি হয়েছে।

শহরতলীর পূর্ব ধোপাকালীর গরুর খামারি জাহির উদ্দিন বললেন, করোনার প্রভাব বাজারে পড়েছে। পরিবহনের অসুবিধার জন্য ইচ্ছা করলেও বাজারে গরু নেওয়া যাচ্ছে না। আগের মতো মানুষের মাঝে চাহিদাও নেই। এতে লোকসানের আশঙ্কা রয়েছে। এই লোকসানের প্রভাব সব খামারিদের উপরে পড়েছে। 

দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়া ইউনিয়নের উলুরা গ্রামের প্রান্তিক খামারি রাজিব কান্তি দাস জানান, এবার কোরবানির বাজারে ছোট গরুর চাহিদা থাকলেও বড় গরুর চাহিদা নেই। সর্বোচ্চ ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকায় গরু কিনছেন ক্রেতারা। এতে বড় গরুর খামারিরা লোকসানে পড়বেন। তিনি খামারিদের রক্ষা করার জন্য সরকারিভাবে বড় প্রণোদনার পাশাপাশি সহজ শর্তে ঋণ দেওয়ার দাবি জানান।

সুনামগঞ্জ ডেইরি ফার্মারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মোহাম্মদ নুরুল আলম বলেন, এবার গুরুর দাম খুব কম মনে হচ্ছে। গ্রামের গরুর খামারিরা এতদিন চিন্তায় ছিলেন। এখন লকডাউন শিথিলের গাইডলাইন দেওয়ায় কিছুটা স্বস্তি ফিরেছে। আশা করা যায় কোরবানির বাজার এবার ভালো যাবে। কারণ সীমান্ত বন্ধ হওয়ায় বাইরের গরু দেশে আসেনি। তাতে কোরবানির বাজার ভালো যাবে বলে আশা করছি। করোনা মহামারির কারণে মানুষের অবস্থা ভালো নয়। মানুষের হাতে টাকা না থাকলে কোরবানি দেবে কিভাবে? এছাড়া গরু বিক্রির সবচেয়ে বড় বাজার হলো ঢাকা ও চট্টগ্রামে। সেখানে গরুর হাটে বেচাকেনা শুরু হয়েছে কেবল। শেষ হলে পরিস্থিতি বোঝা যাবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আসাদুজ্জামান বলেন, সুনামগঞ্জের খামারিদের বেশিরভাগ গরু ছোট আকৃতির। বাজারে ছোট আকৃতির গরুর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই সুনামগঞ্জের গরুর খামারিদের লোকসানের কোনো আশঙ্কা নেই।


এএম/আরআর-১৪