কমলগঞ্জের চা-বাগানে নেই স্বাস্থ্যবিধি, ঝুঁকিতে শ্রমিকরা

সজীব দেবরায়, কমলগঞ্জ


জুলাই ২৬, ২০২১
০৬:২৭ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৬, ২০২১
০৬:২৮ অপরাহ্ন



কমলগঞ্জের চা-বাগানে নেই স্বাস্থ্যবিধি, ঝুঁকিতে শ্রমিকরা

মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার চা-বাগানগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহারের বালাই নেই। ফলে করোনায় আক্রান্তের ঝুঁকির মুখে রয়েছেন চা শ্রমিকরা। করোনাভাইরাস থেকে রক্ষায় সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউন চলছে। তবে এই সময়েও সচল রয়েছে চা শিল্প। কোনো ধরনের স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই কর্মরত রয়েছেন শত শত শ্রমিক। এতে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ।

কমলগঞ্জের বিভিন্ন চা-বাগান ঘুরে দেখা যায়, কমলগঞ্জ উপজেলার ডানকান ব্রাদার্স, ন্যাশনাল টি কোম্পানি (এনটিসি) ও ব্যক্তি মালিকানাধীন চা-বাগানগুলোতে পুরোদমে কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। তবে করোনাকালে চা শ্রমিকদের মধ্যে স্বাস্থ্যবিধি মানার কোনো বালাই দেখা যায়নি। মাঝে-মধ্যে দুই-একজনকে মুখে মাস্ক পরতে দেখা গেলেও অধিকাংশ শ্রমিক মাস্ক ব্যবহার ছাড়াই কাজ-কর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের প্রত্যেকেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে পাতা উত্তোলন, ওজন ও গাড়িতে তুলে দিতে দেখা গেছে। এসব বিষয় তদারকি করতে সংশ্লিষ্ট চা-বাগান কর্তৃপক্ষের তেমন কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি। এতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় সচেতন চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ। তবে কিছু কিছু স্থানে চা-বাগানের ছাত্র ও যুবকরা নিজ উদ্যোগে নারী শ্রমিকদের মধ্যে মাস্ক বিতরণ করতে দেখা গেছে। 

শমশেরনগর বাগানের চা শ্রমিকসন্তান মোহন রবিদাস ও চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বীন বলেন, চা শ্রমিকদের মুখে নেই মাস্ক। মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি। ইতোমধ্যে আমাদের চা-বাগানের কিছু স্টাফ করোনায় আক্রান্তের সংবাদ শুনেছি। এ অবস্থার মধ্যে মাস্ক ব্যবহার ব্যতীত ও স্বাস্থ্যবিধি না মানার কারণে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

তারা আরও বলেন, করোনাভাইরাসের সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছেন দেশের চা শ্রমিকরা। যেখানে চা পাতা তোলা হয় সেখানে স্যানিটাইজার ও সাবান থাকে না। এমনকি খাবারের বিশুদ্ধ পানিরও সংকট থাকে। আর গা ঘেঁষাঘেঁষি করে পাতা তোলা, ওজন দেওয়া ও গাড়িতে লোড করা এসব চা শ্রমিকদের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। 

চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বলেন, চা-বাগান খোলা রাখায় আমাদের আপত্তি নেই। তবে যে হারে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে স্বাস্থ্যবিধি ও মাস্ক ব্যবহার এবং নিয়মিত হাত ধোয়ার সুব্যবস্থা না থাকলে বড় ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে হবে আমাদের।

এ ব্যাপারে মুঠোফোনে জানতে চাইলে শমশেরনগর চা-বাগানের ব্যবস্থাপক জাকির হোসেন কোনো কথা বলতে অনীহা প্রকাশ করেন। তবে শমশেরনগর চা-বাগান ম্যানেজমেন্টের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, সরকারি সিদ্ধান্ত মোতাবেক চা শিল্পে স্বাস্থ্যবিধি মেনেই কাজকর্ম পরিচালিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, চা-বাগান বন্ধ থাকলে কচি পাতা বিনষ্ট হবে এবং বড় ধরনের লোকসান গুনতে হবে।


এসডি/আরআর-০৩