অবশেষে বাড়ছে সিলেট নগরের আয়তন

সিলেট মিরর ডেস্ক


জুলাই ২৬, ২০২১
১১:৫২ অপরাহ্ন


আপডেট : জুলাই ২৬, ২০২১
১১:৫২ অপরাহ্ন



অবশেষে বাড়ছে সিলেট নগরের আয়তন

দীর্ঘ ১৯ বছর বাড়ছে সিলেট সিটি করেপারেশনের (সিসিক) সীমানা। ফলে ২৬ দশমিক ৫ বর্গ কিলোমটারের এই সিটি করপোরেশন নতুন আয়তন হবে প্রায় ৬০ বর্গ কিলোমিটার। বর্তমান ২৭টি ওয়ার্ড বেড়ে দাঁড়াবে ৫২ টি ওয়ার্ডে। এই সম্প্রসারণ প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি।

আজ সোমবার (২৬ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এই কমিটির বৈঠকে সিসিক সম্প্রসারণ প্রস্তাবের অনুমোদন দেওয়া হয়।

দুপুর ১২টায় প্রশাসনিক পুনর্বিন্যাস-সংক্রান্ত জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটি বৈঠকটি হয়। গণভবন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। অন্যরা যুক্ত হন সচিবালয় থেকে।

আয়তনের দিক দিয়ে দেশের সবচেয়ে ছোট সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক)। ২৬ দশমিক ৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এই নগরকে ২০১৪ সালে সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেয় সিসিক। নগরের বর্তমান আকারের প্রায় ছয়গুণ আয়তন বৃদ্ধির একটি প্রস্তাব জমা দেওয়া হয় স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ে। তবে পাঁচ বছর ধরে আটকে ছিল এ প্রস্তাবনা।

এ অবস্থায় গত বছরের ১৭ নভেম্বর সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সিটি করপোরেশন সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে অংশ নিয়ে সিলেট-১ আসনের সাংসদ ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন সিলেট নগরের আয়তন বাড়ানোর প্রস্তাবে একাত্মতা পোষণ করেন। এ ব্যাপারে করণীয় সম্পর্কে দিকনির্দেশনাও দেন তিনি। ওই বৈঠকের পর সিটি করপোরেশন সম্প্রসারণের উদ্যোগে গতি পায়। যা আজ সোমবার অনুমোদন পেয়েছে।

সরকারি অনুমোদন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বিধায়ক রায় চৌধুরী বলেন, সিসিক থেকে ২০১৪ সালে যে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল তা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এখন পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ওয়ার্ড বিভক্ত করা হবে। এরপর গেজেট হবে।

সিটি করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ১৮৭৮ সালে পৌনে দুই বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত হয়েছিল সিলেট পৌরসভা। ২০০২ সালে সিলেট সিটি করপোরেশনে উন্নীত হলে পরিধি বাড়ে। তখন ২৬ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার করা হয় সিটি করপোরেশনের আয়তন। সিটি করপোরেশন গঠনের প্রায় এক যুগ পর সিসিক সম্প্রসারণের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

সূত্রে আরও জানা যায়, সিলেট নগরের বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৫ লাখ। তবে নগরের আশপাশের এলাকার আরও কয়েক লাখ বাসিন্দা সিসিকের নাগরিক সুবিধা ভোগ করেন। কিন্তু ওইসব এলাকা নগরের ভেতরে না হওয়ায় সেখানকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে রাজস্ব আদায় করা যাচ্ছে না। এতে সিটি করপোরেশনের রাজস্বে ঘাটতি দেখা দিচ্ছে।

অনেক আগেই নগরের আয়তন বাড়ানো উচিত ছিলো দাবি করে সিটি মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, আমরা অনেক আগেই সিসিকের আয়তন বৃদ্ধির প্রস্তাব দিয়েছিলাম। কিন্তু নানা জটিলতার কারণে তা সম্ভব হয়নি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী উদ্যোগ নেওয়ায় তা দ্রুত বাস্তবায়ন হচ্ছে।

তিনি বলেন, দেশের সবগুলো সিটি করপোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে ছোট হচ্ছে সিলেট সিটি করপোরেশন। সিলেট মহানগর পুলিশ (এসএমপি) এলাকা হওয়ার পর থেকে সিলেট সিটি করপোরেশন এলাকা সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। আয়তন বাড়লে রাজস্ব, বরাদ্ধ এবং উন্নয়ন কর্মকান্ড- সবই বাড়বে।

২০১৪ সালে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো সিসিকের এ সংক্রান্ত প্রস্তাবনায় উত্তরে খাদিমনগর চা বাগান, দলদলি চা বাগান ও সালুটিকর, দক্ষিণে শুড়িগাও, মামুদপুর, রুস্তমপুর, কালাইরচক, ঢুমশ্রী ও ছাত্তিঘর, পশ্চিমে চাতল, উত্তর ঘোপাল, কসকালিয়া, বাওনপুর, ইনায়েতপুর, হরিপুর, রঘুপুর, দর্শা, মেদিনীমহল, লক্ষীপাশা, হাজরাই, তালিবপুর ও লক্ষীপুর, এবং পূর্বে বটেশ্বর, বাঘা, হাতিমনগর, আমদরপুর, উত্তরভাগ, বাগরখলা, হিলালপুর, মাইজভাগ, দাউদপুর ও তিরাশিগাওকে সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়।

এ প্রস্তাবনা পাস হলে বিলুপ্ত হয়ে যেতে পারে সিলেট সদর ও দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়ন। এরমধ্যে রয়েছে- সদর উপজেলার খাদিমপাড়া, টুলটিকর, টুকেরবাজার, খাদিমনগর ও কান্দিগাঁও ইউনিয়ন এবং দক্ষিণ সুরমা উপজেলার কুচাই, বরইকান্দি, ও মোল্লারগাও ইউনিয়ন। এছাড়া গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাঘা ইউনিয়নের আংশিক এলাকা যুক্ত হতে পারে।

আরসি-২১