শোকের মাস আগস্ট শুরু

সিলেট মিরর ডেস্ক


আগস্ট ০১, ২০২১
১২:৩৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০১, ২০২১
১২:৩৪ পূর্বাহ্ন



শোকের মাস আগস্ট শুরু

করোনা মহামারির করাল গ্রাসে আমাদের যাবতীয় উদযাপন স্থবির হয়ে পড়েছে। একারণেই সীমিত আকারে বছর যাবত উদযাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধু জন্ম শতবার্ষিকী। বেঁচে থাকলে এখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বয়স হতো একশ  এক বছর।

অথচ এমনই এক আগস্ট মাসে বাঙালি জাতিকে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে শাহাদাত বরণ করতে হয়েছে। এই মাসেই নারকীয় হামলা হয়েছে তারই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ওপর। বাঙালি জাতির ইতিহাসের অধ্যায়ে আগস্ট শোকের চাদরে ঢাকা। বছর ঘুরে আবার আগস্ট কড়া নাড়ছে আমাদের দুয়ারে।

এ মাসের ১৫ তারিখে ঘাতকরা কেড়ে নিয়েছিল বঙ্গবন্ধু আর তার পরিবারের অধিকাংশ সদস্যদের প্রাণ। মাসজুড়ে সরকার ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পালন করা হবে নানা কর্মসূচি।

রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বাসসের খবরে বলা হয়েছে, শোকাবহ আগস্টের প্রথম দিন কাল। ১৯৭৫ সালের এ মাসেই বাঙালি হারিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।

পরবর্তীতে, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড ছুঁড়ে হত্যার চেষ্টা হয়েছিল জাতির জনকের কন্যা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে। ভাগ্যক্রমে সেদিন তিনি বেঁচে গেলেও এই ঘটনায় সাবেক রাষ্ট্রপতি মো. জিল্লুর রহমানের সহধর্মিনী, আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং পাঁচ শতাধিক নেতা-কর্মী আহত হন।

আগস্টের কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিনী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধু সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে শেখ ফজলুল হক মনি, তার সহধর্মিনী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন।

সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর নোবেল জয়ী পশ্চিম জার্মানির নেতা উইলি ব্রানডিট বলেন, মুজিবকে হত্যার পর বাঙালিদের আর বিশ্বাস করা যায় না। যে বাঙালি শেখ মুজিবকে হত্যা করতে পারে তারা যেকোনও জঘন্য কাজ করতে পারে।

ভারত বংশোদ্ভূত ব্রিটিশ নাগরিক ও  বিশিষ্ট সাহিত্যিক নীরদ শ্রী চৌধুরী বাঙালিদের ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, বাঙালি জাতির স্বপ্নদ্রষ্টা শেখ মুজিবকে হত্যার মধ্য দিয়ে বাঙালি বিশ্বের মানুষের কাছে নিজেদের আত্মঘাতী চরিত্রই তুলে ধরেছে।

‘দ্য টাইমস অব লন্ডন’ এর ১৯৭৫ সালের ১৬ আগস্ট সংখ্যায় উল্লেখ করা হয় ‘সবকিছু সত্ত্বেও বঙ্গবন্ধুকে সবসময় স্মরণ করা হবে। কারণ, তাঁকে ছাড়া বাংলাদেশের বাস্তব কোন অস্তিত্ব নেই।

একই দিন লন্ডন থেকে প্রকাশিত ডেইলি টেলিগ্রাফ পত্রিকায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশের লাখ লাখ লোক শেখ মুজিবের জঘন্য হত্যাকাণ্ডকে অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বিবেচনা করবে।’

আরসি-০১