বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকার নিবন্ধন করছে 'দ্যুতি'

এ.জে লাভলু, বড়লেখা


আগস্ট ০৩, ২০২১
১১:২৮ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৩, ২০২১
১১:২৮ অপরাহ্ন



বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকার নিবন্ধন করছে 'দ্যুতি'

করোনাভাইরাসের টিকা নিতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জানেন না কীভাবে নিবন্ধন করতে হবে। এ কারণে অনেকে টিকা নিতে পারছিলেন না। এতে তারা দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলেন। তবে তাদের এই দুশ্চিন্তা দূর করে দিয়েছে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দ্যুতি’। এই সংগঠনের সদস্যরা মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে বিনামূল্যে টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা করোনার সংক্রমণ প্রতিরোধে মানুষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পরামর্শ দিচ্ছেন।   

গত ২৫ জুলাই থেকে সংগঠনটি এ কার্যক্রম শুরু করেছে। ইতোমধ্যে তারা তালিমপুর ইউনিয়নের ৫টি গ্রামের প্রায় ৬০০ মানুষের টিকার নিবন্ধন শেষ করেছেন। এতে যারা টিকা নিতে না পারায় দুশ্চিন্তায় ছিলেন, তাদের টিকা পাওয়ার পথ অনেকটা সহজ হয়ে গেছে। এদিকে ঘরে বসে সহজে টিকার নিবন্ধন করতে পারায় এলাকার লোকজন ‘দ্যুতি’র সদস্যদের কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন।

‘দ্যুতি’র সদস্য ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এ পরিস্থিতিতে সবাইকে টিকা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। টিকা নিতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু গ্রামের অধিকাংশ মানুষ জানেন না কীভাবে নিবন্ধন করতে হয়। এ অবস্থায় গ্রামের মানুষ যাতে সহজে টিকা নিতে পারেন, সেজন্য তাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে টিকার নিবন্ধন করার উদ্যোগ নেয় বড়লেখা উপজেলার তালিমপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দ্যুতি’।

তারা প্রতিদিন সকালে গ্রামের মানুষের বাড়িতে গিয়ে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে বিনামূল্যে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। তাদের এ কার্যক্রমে সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস। এরই মধ্যে তারা তালিমপুর ইউনিয়নের পশ্চিম গগড়া, দ্বিতীয়ারদেহী, কোনার গগড়া, চুলারকুড়ি ও বড়ময়দান গ্রামের প্রায় ৬০০ মানুষের নিবন্ধন শেষ করতে পেরেছেন। 

বড়ময়দান গ্রামের বাসিন্দা সেলিম আহমদ বলেন, করোনার ভ্যাকসিন নিতে হলে আগে রেজিস্ট্রেশন করা লাগে। কিন্তু কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করতে হয় তা আমরা জানতাম না। অনেকটা দুশ্চিন্তায় ছিলাম। হঠাৎ ‘দ্যুতি’র সদস্যরা আমাদের বাড়িতে আসেন। তারা আমাদের করোনার টিকা গ্রহণের জন্য উৎসাহ দিয়েছেন এবং বিনামূল্যে টিকার রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছেন। এখন আমরা সহজে টিকা নিতে পারব। এই সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তাদের ধন্যবাদ।

‘দ্যুতি’র সদস্য পিংকু দাস বলেন, করোনা থেকে সুরক্ষা পেতে ভ্যাকসিন গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। আর ইতোমধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়েও করোনার টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ভ্যাকসিন নিতে হলে আগে নিবন্ধন করতে হবে। টিকা পেতে কীভাবে নিবন্ধন করতে হয় তা গ্রামের অনেক মানুষ জানেন না। যার কারণে তারা টিকা নিতে পারছেন না। এসব কথা ভেবে আমরা এ উদ্যোগ নিয়েছি। আমরা প্রতিদিন গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে দিচ্ছি। পাশাপাশি মানুষকে আমরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলারও পরামর্শ দিচ্ছি। এছাড়া মানুষ যাতে সহজে নিবন্ধন করতে পারে, সেজন্য স্থানীয় বাজারে বুথ খোলার পরিকল্পনা রয়েছে।

এ বিষয়ে তালিমপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিদ্যুৎ কান্তি দাস বলেন, সামাজিক সংগঠন ‘দ্যুতি’র সদস্যরা একটি মহৎ উদ্যোগ নিয়েছেন। তারা গ্রামের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে বিনামূল্যে সুরক্ষা অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন। বিষয়টি জেনে আমি টিকার নিবন্ধন কার্ড প্রিন্ট করার ব্যবস্থা করে দিয়েছি। এতে মানুষের টিকা পাওয়ার পথ সহজ হয়েছে। ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকা দেওয়া শুরু হলে মানুষ সহজে টিকা নিতে পারবেন।


এজে/আরআর-০৮