টিকার নিবন্ধন নিশ্চিত করতে দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে ছাত্রলীগ

বড়লেখা প্রতিনিধি


আগস্ট ০৪, ২০২১
০৭:৫১ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ০৪, ২০২১
১১:২২ অপরাহ্ন



টিকার নিবন্ধন নিশ্চিত করতে দ্বারে দ্বারে যাচ্ছে ছাত্রলীগ

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা মানুষের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন। তারা করোনার টিকা নিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করছেন। মানুষ তাদের কথা আগ্রহ নিয়ে শুনছে। তারা টিকাগ্রহণের উপকারিতা কী তা বুঝতে পেরে টিকা নিতে উৎসাহিত হচ্ছেন। নিজেরাই আগ্রহী হয়ে টিকা নিতে নিবন্ধনের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র এগিয়ে দিচ্ছেন মানুষ। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের টিকার নিবন্ধন করে দিচ্ছেন।

এভাবেই মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে করোনার টিকা নিতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি ‘সুরক্ষা অ্যাপের’ মাধ্যমে বিনামূল্যে নিবন্ধন করে দিচ্ছেন উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। নিবন্ধন শেষে টিকার কার্ড প্রিন্ট করে প্রত্যেকের বাড়িতে পৌঁছেও দিচ্ছেন তারা। এ পর্যন্ত তারা উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের প্রায় ৪ হাজার ৪৮২ জন মানুষের টিকার নিবন্ধন করে দিয়েছেন। 

উপজেলা ছাত্রলীগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে করোনার টিকাদান শুরু হবে। এতে ইউনিয়ন পরিষদের টিকাকেন্দ্রে মানুষের ভিড় বাড়বে। ফলে স্বাস্থ্যবিধি উপেক্ষা ও সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। আর টিকাগ্রহণ করতে হলে ‘সুরক্ষা অ্যাপের’ মাধ্যমে নিবন্ধন করতে হয়। কিন্তু এই পদ্ধতির সঙ্গে পরিচিত নন গ্রামের অধিকাংশ মানুষ। এ অবস্থায় তাদের এই ভোগান্তি দূর করার উদ্যোগ নেয় বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগ। গত ১ আগস্ট থেকে সংগঠনের সদস্যরা নিবন্ধন কার্যক্রম শুরু করেন। প্রথমদিন ২০ জনের দল বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে তালিমপুর ইউনিয়নে নিবন্ধনের কাজ করে। এতে কারিগরি সহায়তা দেয় তালিমপুর ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘দ্যুতি’। পরদিন থেকে ছাত্রলীগের দশ ইউনিয়ন কমিটির নেতাকর্মীরা এ কাজ শুরু করেন। পুরো প্রক্রিয়াটি সমন্বয় করছেন বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জুনেদ আহমদ। 

এরই মধ্যে তারা বর্ণি ইউনিয়নে ৩০৭ জন, দাসেরবাজার ইউনিয়নে ২৯৭ জন, নিজবাহাদুরপুর ইউনিয়নে ৪৮০ জন, উত্তর শাহবাজপুর ইউনিয়নে ৪০৫ জন, দক্ষিণ শাহবাজপুর ইউনিয়নে ৬৯২ জন, বড়লেখা সদর ইউনিয়নে ২৫৯ জন, তালিমপুর ইউনিয়নে ৬৩০ জন, দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নে ৫৩২ জন, সুজানগর ইউনিয়নে ২৯০ জন ও দক্ষিণভাগ দক্ষিণ ইউনিয়নে ৫৯০ জনকে নিবন্ধনের আওতায় এনেছেন। 

দক্ষিণভাগ উত্তর ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের শিমুলিয়া গ্রামের আব্দুল হামিদ বলেন, ইউনিয়নে টিকা দেওয়া হবে বলে শুনেছি। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন কীভাবে হবে এটা নিয়ে খুব ছিলাম। ছাত্রলীগের ছেলেরা আমার বাড়িতে এসে) রেজিস্ট্রেশন করে দিয়েছে। টিকার কাগজও প্রিন্ট করে দিয়েছে। এখন আর চিন্তা নেই। টিকা দ্রুত নিয়ে নেবো।

বড়লেখা উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইমরান হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক জুনের আহমদ বলেন, আমরা চাই সবাই টিকাগ্রহণ করুক। কিন্তু গ্রামের মানুষের মধ্যে টিকা নিয়ে একধরনের ভয় কাজ করে। তাই অনেকে টিকা নিচ্ছেন না। আর অনেকে কীভাবে নিবন্ধন করতে হয় তা জানেন না। তাই আমরা উদ্যোগ নিয়েছি সবার বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের টিকা নিতে উদ্ধুদ্ধ করার। এতে টিকার প্রতি মানুষের আগ্রহ ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এতে আমরাও কাজে উৎসাহ পাচ্ছি। প্রত্যেক ইউনিয়নের মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে একটি দল নিবন্ধন করছে। আরেকটি দল পরদিন নিবন্ধন কার্ড প্রিন্ট করে পৌঁছে দিচ্ছে। যাতে মানুষ ভোগান্তি ছাড়া টিকাগ্রহণ করতে পারেন।

বড়লেখা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খন্দকার মুদাচ্ছির বিন আলী বলেন, বড়লেখায় সামাজিক সংগঠন ‘দ্যুতি’ এবং রাজনৈতিক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে যে কাজ করছে তা খুবই প্রশংসনীয়। ইতোমধ্যে তাদের উদ্যোগে সর্বোচ্চ সংখ্যক টিকার নিবন্ধন করা হয়েছে। এর ফলে আমাদের সরকারি ব্যবস্থাপনার ওপর অনেকটা চাপ কমেছে এবং অনেক বেশি সাপোর্ট হয়েছে। ইউনিয়নে উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে নিবন্ধন কাজ চালু রেখেছিলাম। কিন্তু মানুষ উদ্যোক্তাদের কাছে যতটুকু আসছে তার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে নিবন্ধন করে দিচ্ছে। এতে ৭ আগস্ট থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে যে টিকাদান শুরু হবে তাতে নিবন্ধনের ক্ষেত্রে আর কোনো শঙ্কা নেই।


এজে/আরআর-০৩