১৫ ও ২১ আগস্ট একইসূত্রে গাঁথা: সিলেটে হানিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক


আগস্ট ২২, ২০২১
০৯:৩০ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ২২, ২০২১
১০:৪০ অপরাহ্ন



১৫ ও ২১ আগস্ট একইসূত্রে গাঁথা: সিলেটে হানিফ

১৫ ও ২১ আগস্ট একইসূত্রে গাঁথা বরে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুুব উল আলম হানিফ। তিনি বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে পরাজিত শক্তি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে বাংলাদেশকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গিয়েছিল। একইভাবে শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা চালানো হয়।’

রবিবার (২২ আগস্ট) দক্ষিণ সুরমা ও ফেঞ্চুগঞ্জে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।

মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাবনা ছিল এদেশের মানুষকে নিয়ে- কিভাবে বাঙালি জাতিকে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু দাঁড়ানো যায়। তাঁর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা পিতার আদর্শ ও চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে স্বপ্নের সোনার বাংলা বিনির্মাণে নিরলস প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যার সুফল এদেশের মানুষ এখন ভোগ করছে। বিশ্বের বুকে আজ বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে।’

একাত্তর ও পঁচাত্তর পরবর্তী সময়ে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ভূমিকা প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘একাত্তরে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের বীরত্বগাঁথা ইতিহাসে নেই। বরং পঁচাত্তরের পরে ক্ষমতায় এসে দালাল আইন বাতিল করে তিনি কুখ্যাত রাজাকার গোলাম আজমকে দেশে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছেন। এতে প্রমাণ হয়েছে- জিয়াউর রহমান তাদের দোসর।’

তিনি বলেন, ‘স্বাধীনতাবিরোধী চক্র শুধু জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি, বঙ্গবন্ধু পরিবারে তাদের ভয় ছিলো। তাই পরবর্তীতে গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসনিাকে হত্যাচেষ্টা চালায়। বঙ্গবন্ধু হত্যায় যেভাবে বিএনপি প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল ঠিক তেমনি শেখ হাসনিাকে হত্যাচেষ্টায়ও খালেদা জিয়ার দল জড়িত ছিল। অন্যথায়, তৎক্ষালীন ক্ষমতাসীন দল বিএনপি জোট এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে পারত।’

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। তাই দেশের মানুষ আওয়ামী লীগকেই চায়। মানুষ এখন উন্নয়ন চায়, শান্তি চায়, সুশাসন চায়। কিন্তু, বিএনপির আদর্শ হচ্ছে তার বিপরীত। নিজের দলের মধ্যেই গণতন্ত্র নেই। তাদের মুখে কীভাবে গণতন্ত্রের বাণী উচ্চারিত হয়।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাষ্ট্র পরিচালনায় বিচক্ষণতার বর্ণনা দিয়ে হানিফ আরও বলেন, ‘এ দেশে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প নেই। এ দেশের উন্নয়ন কীভাবে করতে হয়, এ দেশের মানুষের ভাগ্য কীভাবে পরিবর্তন করতে হয় তা কেবল শেখ হাসিনা সরকারই জানে।’

তিনি সিলেট-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাবিবকে সবার সামনে পরিচয় করিয়ে দিয়ে বলেন, ‘সে তরুণ একজন প্রার্থী, তার চোখে মুখে শুধু উন্নয়নের চিত্র। তাকে একবার সুযোগ দিন। আমার বিশ্বাস সে সিলেট-৩ আসনের রূপরেখা পাল্টে দিতে সক্ষম হবে।’

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রতীক নৌকা। দেশ স্বাধীন হওয়ার আগেও ৭০ এর নির্বাচনে নৌকা বিজয়ী ছিল। এখনও বিজয়ের বেশে বাংলাদেশে নৌকা আছে এবং থাকবে।’ 

সভায় প্রধান বক্তা ছিলেন আওয়ামী লীগের সিলেট বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন। তিনি বলেন, ‘খুনি জিয়া বেঈমানি করেছে, খুনি মুশতাক বেঈমানি করেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল বলেই তিনি কোটি কোটি মানুষের মাঝে বেঁচে আছেন। অন্যরা সবাই ইতিহাসে আস্থাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগের উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘আগাছাগুলো বাংলাদেশকে বার বার কলুষিত করেছে। তবে মনে রাখতে হবে, আগাছাদের সাময়িক বিজয় হলেও তাদের পরাজয় অবশ্যম্ভাবী।’

দক্ষিণ সুরমা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সাইফুল আলমের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম আহমদের পরিচালনায় পিরোজপুর এলাকার ময়ুরকুঞ্জ কনভেনশনের হলরুমে অনুষ্ঠিত শোকসভা ও দোয়া মাহফিলে দলের বিভিন্ন স্তরের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। 

এতে আরও বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন এবং কার্যনির্বাহী সদস্য আজিজুস সামাদ ডন, সিলেট জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি লুৎফুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন প্রমুখ।

এর আগে রবিবার সকাল ১০ টার দিকে বিমানযোগে সিলেটে পৌঁছান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় পাঁচ নেতা। বিমানবন্দরে তাদেরকে স্বাগত জানান সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শফিফুর রহমান চৌধুরী, সহসভাপতি ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খান, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. আরমান আহমদ শিপলু, জেলা আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্বাস উদ্দিন প্রমুখ।

দুপুরে দক্ষিণ সুরমায় সভা শেষে বিকেল সাড়ে ৩টায় ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে মাইজগাঁওয়ে আয়োজিত শোকসভায় অংশ নেন কেন্দ্রীয় নেতারা। আজ সোমবার সিলেট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শোকসভায় যোগ দেবেন তারা।

বিএ-০৮