করোনায় মারা গেলেন মাস্ক এবং লকডাউনের বিরোধিতাকারী সেই ব্যক্তি

সিলেট মিরর ডেস্ক


আগস্ট ৩০, ২০২১
০৪:০৯ অপরাহ্ন


আপডেট : আগস্ট ৩০, ২০২১
০৪:০৯ অপরাহ্ন



করোনায় মারা গেলেন মাস্ক এবং লকডাউনের বিরোধিতাকারী সেই ব্যক্তি

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্ট্রাল টেক্সাস কমিউনিটিতে করোনা মহামারীর সময় মুখোশ পরা এবং অন্যান্য ভাইরাস প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচারণার নেতৃত্ব দেওয়া সেই ব্যক্তি নিজেই কোভিড-১৯ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে ভর্তি হওয়ার এক মাস পর তার মৃত্যু হলো।

সান অ্যাঞ্জেলো স্ট্যান্ডার্ড-টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কালেব ওয়ালেস নামের ওই ব্যাক্তির স্ত্রী জেসিকা ওয়ালেস গো ফান্ড মি-র একটি পেজে বলেছেন যে, গত শনিবার তার স্বামীর মৃত্যু হয়েছে। গত একমাস ধরেই ওই পেজে তিনি তার স্বামীর স্বাস্থ্যের অবস্থার আপডেট পোস্ট করছিলেন।

মৃত্যুকালে কালেব ওয়ালেসের বয়স হয়েছিল ৩০ বছর এবং তিনি তিন সন্তানের জনক ছিলেন। তার স্ত্রীর গর্ভে এখন তাদের চতুর্থ সন্তান। জেসিকা ওয়ালেস লিখেছেন, “কালেব শান্তিপূর্ণভাবে চলে গেছেন। তিনি চিরকাল আমাদের হৃদয়ে এবং মনে বেঁচে থাকবেন”।

২০২০ সালের ৪ জুলাই কালেব ওয়ালেস সান অ্যাঞ্জেলোতে “দ্য ফ্রিডম র‍্যালি” আয়োজন করতে সাহায্য করেছিলেন। র‍্যালিতে যোগ দেওয়া লোকেরা ভাইরাস ঠেকাতে মাস্ক পরা, ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ করা সহ কোভিড-১৯ এর পেছনের বিজ্ঞান এবং উদার গণমাধ্যমের সমালোচনা করে বিভিন্ন স্লোগানযুক্ত প্ল্যাকার্ড ও সাইনবোর্ড বহন করেন। অর্থাৎ ভাইরাস প্রতিরোধে গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থার বিরুদ্ধে প্রচারণা চালানোই ছিল ওই র‍্যালির মূল উদ্দেশ্য।

“দ্য সান অ্যাঞ্জেলো ফ্রিডম ডিফেন্ডার্স” নামের একটি গ্রুপও তৈরি করেছিলেন তিনি। ২০২০ সালের জুলাইয়ে ওয়ালেস বলেছিলেন, “এই মুহূর্তে আমেরিকার বর্তমান অবস্থা নিয়ে আমরা সত্যিই খুশি নই”। চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কোভিড-১৯ বিরোধী সমস্ত ব্যবস্থা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে তিনি সান অ্যাঞ্জেলো স্কুল ডিস্ট্রিক্টকে একটি চিঠি লিখেছিলেন।

জেসিকা ওয়ালেস সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তার স্বামী গত ২ জুলাই থেকেই কোভিড-১৯ এর উপসর্গ অনুভব করতে শুরু করেছিলেন, কিন্তু ডাক্তারি পরীক্ষা করাতে বা হাসপাতালে যেতে অস্বীকার করছিলেন। হাসপাতালে না গিয়ে তিনি নিজে নিজেই ভিটামিন সি, জিংক অ্যাসপিরিন এবং আইভারমেকটিন উচ্চ মাত্রায় সেবন করেন। অথচ স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা কোভিড-১৯ এর চিকিৎসায় অ্যাসপিরিন এবং আইভারমেকটিনের মতো ওষুধ খেতে নিষেধ করেছিলেন।

৩০ জুলাই কালেব ওয়ালেসকে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং ৮ আগস্ট থেকে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এতদিন তাকে ভেন্টিলেটর দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। কালেবের মৃত্যুর একদিন আগে, জেসিকা ওয়ালেস পরিবারের গো ফান্ড মি-র পেজে পোস্ট করেন যে, তার স্বামী “একজন অসম্পূর্ণ মানুষ ছিলেন, কিন্তু তিনি তার পরিবার এবং তার ছোট মেয়েদের যেকোনো কিছুর চেয়ে বেশি ভালোবাসতেন”।

“তার কর্মকাণ্ডে বিরক্ত হয়ে যারা তার মৃত্যু কামনা করেছে তাদের প্রতি আমি দুঃখ প্রকাশ করছি যে, তার দৃষ্টিভঙ্গি এবং মতামত আপনাদেরকে আঘাত করেছে। আমি প্রার্থনা করছি যে, তিনি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এবং জীবনের জন্য আরও প্রশংসা বয়ে নিয়ে আনবেন। আমি এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারছি না, কারণ আমি তার জন্য আর কথা বলতে পারছি না”।

বি এন-০৪