ভাতিজাকে মেরে বাথরুমে পুঁতে রাখলেন চাচি

সিলেট মিরর ডেস্ক


সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
০৮:১৩ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২১
০৮:১৩ অপরাহ্ন



ভাতিজাকে মেরে বাথরুমে পুঁতে রাখলেন চাচি

মাদারীপুরের শিবচরে আপন চাচির নির্মাণাধীন ভব‌নের বাথরুমের মেঝের নিচ থেকে বালুচাপা দেওয়া অবস্থায় কুতুবউদ্দিন নামে আড়াই বছরের এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) ভোরে উপজেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাঘিয়ার আরব আলী বেপারীকান্দি এলাকা থেকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় শিশুটির চাচি নার্গিস আক্তার ও চাচাতো বোন হাফসা আক্তারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ‌নিহত শিশু ‌কুতুবউদ্দিন উপ‌জেলার কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের ইউনুস বেপারীর ছেলে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শিবচরের কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকার ওহাব বেপারীর বড় ছেলে আবুল হোসেন বেপারীর মৃত্যুর পর তার স্ত্রী নার্গিস বেগম দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে বাবার বাড়ি কাঁঠালবাড়ী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকা বাঘিয়ার আরব আলী বেপারীকান্দি এলাকায় বসবাস করেন। স্বামী পীরের বাড়িতে গিয়ে মারা গেলেও নার্গিস এ মৃত্যুর জন্য শ্বশুরসহ ওই বাড়ির লোকদের দায়ী করতেন। 

‌শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মিরাজ হোসাইন জানান, স্বামীর মৃত্যুর পর তার ছোট ভাই ইসমাইল বেপারীকে নার্গিস বিয়ে করতে চাইলে পরিবার এতে রাজি হয়নি। জমিজমা নিয়েও তাদের মধ্যে বিরোধ আছে। গত মঙ্গলবার ওহাব বেপারীর বাড়িতে বেড়াতে আসে নার্গিস আক্তারের মেয়ে হাফসা আক্তার (১৪)। পরদিন বুধবার সকালে মা নার্গিস ফোন দিলে মেয়ে হাফসা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হয়। চলে যাওয়ার আগে হাফসা চাচা ইসমাইল বেপারীর স্ত্রী ময়না বেগমের কাছ থেকে তাদের একমাত্র শিশু সন্তান কুতুবউদ্দিনকে কোলে নেয়। ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে সটকে পড়ে। সন্তানসহ ভাবি ও ভাতিজিকে বাড়িতে গিয়ে না পেয়ে কুতুবউদ্দিনের বাবা ইউনুস বেপারী শিবচর থানায় অভিযোগ করেন। 

তিনি আরও জানান, অভিযোগ পেয়ে শিবচর থানার একাধিক টিম শিশুটিকে উদ্ধারে মাঠে নামে। একটি মাদরাসার সিসি টিভি ফুটেজ দেখে পুলিশ নিশ্চিত হয় হাফসা কুতুবউদ্দিনকে নিয়ে তার মা নার্গিসের কাছে দিয়েছে। নার্গিস শিশুটিকে কাপড়ে ঢেকে সটকে পড়েন। কিন্তু কোনো কিছুতেই নার্গিস বিষয়টি স্বীকার করছিলেন না। পরে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের পর নার্গিস তার ঘরের ভেতরে নির্মাণাধীন বাথরুমের মাটির নিচে শিশুটিকে পুঁতে রাখা হয়েছে বলে জানান। পরে পুলিশ নার্গিসকে নিয়ে শুক্রবার ভোরে বাথরুমের মেঝেতে পুঁতে থাকা অবস্থায় কুতুবউদ্দিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

এ ব্যাপা‌রে ‌শিশুটির বাবা ইউনুস বেপারী ব‌লেন, সম্প‌ত্তির লো‌ভে আমার সন্তান‌কে হত্যা করা হ‌য়ে‌ছে। এর আগেও আমাকে হুম‌কি দি‌য়ে‌ছিল আমার কোনো বংশ রাখ‌বে না। সেটাই ক‌রে‌ছে বড় ভাইয়ের স্ত্রী ও তার সন্তানরা। এ নির্মম হত্যার বিচার চাই।

এ ব্যাপা‌রে মাদারীপুরের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান ব‌লেন, ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করেছি। প্রাথমিকভাবে ঘাতক নার্গিস বেগম জানিয়েছেন- পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মনোমালিন্য থাকার কারণেই তার ভাতিজা কুতুবউদ্দিনকে হত্যা করেছেন। এ ঘটনায় নার্গিস ও তার মে‌য়ে‌কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। 

বিএ-০৩