কলেজ ছাত্রের সততা, জগন্নাথপুরে হারানো টাকা ফিরে পেলেন পুলিশ কর্মকর্তা

জগন্নাথপুর প্রতিনিধি


সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
১০:৩৬ অপরাহ্ন


আপডেট : সেপ্টেম্বর ২২, ২০২১
১০:৩৯ অপরাহ্ন



কলেজ ছাত্রের সততা, জগন্নাথপুরে হারানো টাকা ফিরে পেলেন পুলিশ কর্মকর্তা

সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর থানায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিএসবির সহকারী  উপ পরিদর্শক আল আমীন সুহেল  এর হারিয়ে যাওয়া ২৯ হাজার টাকা পেয়ে ফিরিয়ে দিয়েছেন কলেজ ছাত্র বিদ্যুৎ দাস।

মঙ্গলবার (২১ সেপ্টেম্বর)  রাতে  তিনি পুলিশ কর্মকর্তা কে খুঁজে বের করে তাঁর হারানো টাকা ফিরিয়ে দেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জেলার ধর্মপাশা উপজেলার সুখাই গ্রামের  দরিদ্র পরিবারের সন্তান বিদ্যুৎ দাস সুনামগঞ্জ সরকারি কলেজে অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ।

সে গত দুই মাস ধরে  জগন্নাথপুর বাজারে ডেনিশ কনডেনন্স মিল্ক  কোম্পানিতে বিক্রয় প্রতিনিধি হিসেবে চাকুরী করেন।

আর আল আমীন সুহেল  জগন্নাথপুর থানায় পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিএসবির সহকারী  উপ-পরিদর্শক হিসেবে কর্মরত। মঙ্গলবার  পেশাগত দায়িত্ব পালন করে উপজেলার ইসহাকপুর এলাকা  থেকে জগন্নাথপুর থানায় মোটর সাইকেল যোগে ফেরার পথে জগন্নাথপুর পৌর পয়েন্ট এলাকায় খামের ভেতর থাকা ২৯ হাজার টাকা আল আমীন সুহেলের পকেট থেকে পড়ে যায়। খামভর্তি টাকা পান কলেজ ছাত্র বিদ্যুৎ দাস।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও তাদের ভাষ্য থেকে  জানা গেছে, পুলিশের গোয়েন্দা শাখা ডিএসবির সহকারী  উপ-পরিদর্শক আল আমীন সুহেল  যখন বুঝতে পেরেছেন তার স্ত্রী কে পাঠানোর জন্য জমাকৃত টাকাগুলো হারিয়ে গেছে তখন তিনি থানার সহকর্মীদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করেন।

অপরদিকে টাকা পেয়ে মালিককে ফিরিয়ে দেওয়ার  দুশ্চিন্তায় ভুগছেন বিদ্যুৎ দাস।

তিনি  তার বন্ধুদের পরামর্শে জগন্নাথপুর বাজারের দুটি মসজিদে কিছু টাকা পাওয়া গেছে ঘোষণা দিয়ে মাইকিং করান। এতে কোন সাড়া না পাওয়ায় তিনি দুশ্চিন্তায় পড়েন। পরে জগন্নাথপুর বাজারে মাহিনা রেষ্টুরেন্টে রাতের খাবার খেয়ে বন্ধু জুবায়ের কে দিয়ে কিছু টাকা পাওয়া গেছে বলে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটার্স দেন।

এ স্ট্যটার্সটি জগন্নাথপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসির গাড়ি চালক মাহাতাব হোসেনের  নজরে আসে। তারপর যোগাযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ দাস  পুলিশ কর্মকর্তার টাকাগুলোর বিষয়টি নিশ্চিত হন।

ডিএসবি কর্মকর্তা আল আমীন সুহেল বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যাণে একজন ভালো মানুষ টাকাগুলো পাওয়ায় ফিরে পেলাম।সত্যি আমি খুব খুশি তাই নিজের ফেসবুকে অনুভূতি  লিখেছি স্যালুট বিদ্যুৎ দাস, লোভ আপনাকে পরাজিত করতে পারেনি। এখনো বিশ্বাস হারিয়ে যায়নি বিদ্যুৎ দাস তাঁর উৎকৃষ্ট প্রমাণ। তিনি বলেন, অসুস্থ স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য তিনি টাকা গুলে পাঠাতে চেয়েছিলাম। টাকা হারিয়ে বিমর্ষ হয়ে পড়ি টাকা ফিরে পেয়ে খুব ভালো লাগছে।

বিদ্যুৎ দাস  বলেন, মঙ্গলবার  রাত সাড়ে নয়টার দিকে পৌর পয়েন্টে রাস্তায় পড়ে থাকা খাম দেখে হাতে নেই। পরে দেখি খামভর্তি টাকা। দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই কীভাবে প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দিতে পারি। সহকর্মীদের পরামর্শে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দেই।এ তে কোন কাজ হয়নি আমার ফেসবুকে অল্প সংখ্যক ফলোয়ার থাকায়, আমি বন্ধু জুবায়ের কে দিয়ে তার ফেসবুক থেকে টাকা পাওয়া গেছে বলে একটি স্ট্যাটার্স দিলে প্রকৃত মালিকের সন্ধান পাই।

বিদ্যুৎ বলেন টাকা প্রকৃত মালিকের কাছে পৌঁছে দিতে পেরে আমি আনন্দিত।

এ এ/বি এন-১৫