‘ফিটনেস ছাড়াই’ চলাচল করছিল ডুবে যাওয়া শাহ আমানত

সিলেট মিরর ডেস্ক


অক্টোবর ২৮, ২০২১
০১:৩৭ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ২৮, ২০২১
০১:৩৭ অপরাহ্ন



‘ফিটনেস ছাড়াই’ চলাচল করছিল ডুবে যাওয়া শাহ আমানত

উল্টে যাওয়া ফেরি শাহ আমানত

মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ঘাটে কাত হয়ে আংশিক ডুবে যাওয়া ফেরি শাহ আমানত ফিটনেস ছাড়াই পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে চলাচল করছিল বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) এজিএম (মেরিন) আব্দুস সাত্তার।

তিনি বলেন, ‘উল্টে যাওয়া ফেরিটির ফিটনেস ছিল না। ফিটনেসবিহীনভাবেই এটি নৌরুটে চলাচল করত। ফিটনেসের জন্য দীর্ঘদিন আগে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে আবেদন করা হয়েছিল।’

তবে চার মাস আগে এই ফেরি মেরামত করা হয়েছিল জানিয়ে বিআইডব্লিউটিসির আরিচা কার্যালয়ের ডিজিএম জিল্লুর রহমান  বলেন, ‘শাহ আমানত ১৯৭৯ সালে তৎকালীন আরিচা ফেরি সেক্টরে যোগ হয়। এরপর নাব্য সংকটের কারণে ২০০২ সালের পাটুরিয়া ফেরি ঘাট স্থানান্তর করা হয় এবং ফেরিতে তলায় সমস্যা থাকায় গত চার মাস আগে নারায়ণগঞ্জ থেকে ফেরিটি মেরামত করা হয়।’

দুর্ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস প্রাথমিক ধারণা থেকে জানিয়েছে,  ফেরির ব্যালাস্ট ট্যাংক ফুটো হয়ে যাওয়ায় এটি কাত হয়ে পড়ে। 

ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক দিনমণি শর্মা বলেন, ‘ব্যালেন্সের ওই ট্যাংক ফুটো হয়ে ভেতরে অতিরিক্ত পানি ঢোকার কারণে ফেরিটি ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। যার ফলে ফেরি থেকে কিছু গাড়ি নেমে যাওয়ার পরে এক পাশে কাত হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে।’

ফেরিতে থাকা একটি কাভার্ড ভ্যানের চালক কামাল মিয়া বলেন, ‘বেনাপোল থেকে তুলা নিয়া গাজীপুর যাচ্ছিলাম, কিন্তু মাঝ নদীতে ফেরিতে পানি দেখি। মনে হচ্ছিল ফেরি ধুইছে তার পানি। পাটুরিয়া আসার পর যখন কয়েকটা গাড়ি আনলোড হইল, তখন ফেরিটি ডান দিয়ে কাইত হইয়া যেতে লাগল। এর পরেই ওল্টাইয়া গেল। কোনোমতে লাফাইয়া জানে বাঁচছি। আরেকটু হইলে গেছিলাম। ফেরিতে সমস্যার কারণেই তো পানি উঠেছে। সমস্যা না হলে তো পানি উঠত না।’

প্রসঙ্গত, পাটুরিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে বুধবার সকালে আমানত শাহ ফেরিটি হেলে পড়ে। হেলে পড়ার সময় ফেরিতে ১৪টি কাভার্ড ভ্যান, তিনটি ট্রাক ও সাত থেকে আটটি মোটরসাইকেল ছিল। ফেরি ও এতে থাকা যানবাহন উদ্ধারে ঘটনাস্থলে বুধবার কাজ করছিল হামজা নামে উদ্ধারকারী জাহাজ। রাতে উদ্ধারকাজ স্থগিত রাখা হয়। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে আবারও শুরু হয় অভিযান।

ফেরি দুর্ঘটনার তদন্তে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয় ও মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সাত সদস্যের কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে দুর্ঘটনার কারণ খুঁজে বের করে নৌ পরিবহন সচিবের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বুধবার এই নির্দেশনা দেয়া হয়।