শাবিপ্রবিতে নেতৃত্বশূন্য ছাত্রলীগ, বাড়ছে দ্বন্দ্ব-বিভেদ

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি


নভেম্বর ২৫, ২০২১
১২:৩৫ পূর্বাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৫, ২০২১
১২:৩৫ পূর্বাহ্ন



শাবিপ্রবিতে নেতৃত্বশূন্য ছাত্রলীগ, বাড়ছে দ্বন্দ্ব-বিভেদ

দীর্ঘ ৫ মাস ধরে কমিটিহীন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের মাঝে বিভক্তি দেখা দিয়েছে। বিভক্তির কারণে পাল্লা দিয়ে বিভিন্ন উপদলের নেতাদের মধ্যে বাড়ছে মতবিরোধ, অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্ব। এই দ্বন্দ্বকে কাজে লাগিয়ে স্বার্থান্বেষী মহলের প্রত্যক্ষ প্রভাবে দিন দিন সাংগঠনিকভাবে দুর্বল থেকে দুর্বলতর হচ্ছে নেতৃত্বশূন্য এ ইউনিট।

পাশাপাশি নেতাকর্মীদের মনে পুঞ্জীভূত হচ্ছে হতাশা ও ক্ষোভ। শাবিপ্রবি ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। 

জানা যায়, সর্বশেষ ২০১৩ সালের ৮ মে সঞ্জীবন চক্রবর্তী পার্থকে সভাপতি ও ইমরান খাঁনকে সাধারণ সম্পাদক করে ৭ সদস্যের কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। মেয়াদ পেরিয়ে গেলে দুই বছর পর ২০১৬ সালের ৮ মে ১৫১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ ও সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইন। এই কমিটি ছিল দীর্ঘ আট বছর। চলতি বছর ১৭ জুন এ কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। এছাড়া ২০১৯ সালে তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরী শোভনের আমলে ক্যাম্পাসে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে দ্রæত সময়ের মধ্যে নতুন কমিটি দেওয়ার আশ্বাস দিলেও অদৃশ্য কারণে তা হয়নি।

এদিকে, কমিটি খুব শীঘ্রই দেওয়া হবে বর্তমান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এমন আশ্বাসে বুকে আশা বাঁধছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির নেতাকর্মীরা। নতুন কমিটিতে পদ-পদবি পাওয়ার আশায় নিজেদের অবস্থানের জানান দিতে অনেক নেতা-কর্মী বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে ক্যাম্পাসে সক্রিয় হচ্ছেন। অনেকে আবার কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে ফেসবুকে ছবি দেওয়া ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে লিয়াজু করে নিজেদের অবস্থানের জানান দিচ্ছেন।

অনুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরে ৬টি গ্রুপ, ক্যাম্পাসের বাইরে ২টি গ্রুপ এবং ১৭টির অধিক সাব গ্রুপ সক্রিয় অবস্থান লক্ষ্য করা গেছে। এসব গ্রুপে ৩০ জনের অধিক নেতা রয়েছেন বলেও জানা গেছে। তবে মূলসারির নেতা রয়েছেন মাত্র হাতে গুনা কয়েকজন!

অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিন কমিটি না থাকায় নেতাদের কথা মানছেন না অনেক কর্মী। ফলে কর্মীর চেয়ে নেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এজন্য এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে এই ইউনিটে।

এদিকে ক্যাম্পাসে বেশ কিছুদিন থেকে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত হয়ে কেন্দ্রীয় নেতাদের জন্মদিন পালন, অনুষ্ঠান, মিছিল-মিটিং, শোডাউনসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পালন করতে দেখা গেছে নেতাকর্মীদের। তাছাড়া বিভিন্ন দলীয় অনুষ্ঠানগুলো পালন করতে এসে অনেক নেতা-কর্মীদের মাঝে আগে পিছে দাঁড়ানো নিয়ে ঠেলাঠেলি, হাতাহাতি ও বাকবিতণ্ডার ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে বলে অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগের কয়েকটি ইউনিটের নেতাদের অভিযোগ, কমিটি না থাকার সুযোগ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কয়েকজন শিক্ষক ছাত্রলীগের বিভিন্ন গ্রুপের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে হস্তক্ষেপ করছেন। ফলে গ্রুপ থেকে তৈরি হচ্ছে সাব গ্রুপ, বাড়ছে অন্তর্কোন্দল। কোনো কোনো গ্রুপকে কাছে টানা হচ্ছে। যারা প্রশাসনের কথা মতো চলছে না তাদেরকে দূরে ঠেলে দেওয়া হচ্ছে।

শাবিপ্রবির সাংগঠনিক দায়িত্বে থাকা কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘আমরা শাবিপ্রবি শাখা নিয়ে কাজ করছি। খুব শীঘ্রই কমিটি দেওয়া হবে।’

আরসি-০১