নবীগঞ্জে ১৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

নবীগঞ্জ প্রতিনিধি


নভেম্বর ২৯, ২০২১
০৩:৪১ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ২৯, ২০২১
০৩:৪৪ অপরাহ্ন



নবীগঞ্জে ১৩ চেয়ারম্যান প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত

তৃতীয় ধাপে নবীগঞ্জ উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন রবিবার (২৮  নভেম্বর) শান্তিপুর্ণ ভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচনে ১৩টি ইউনিয়নে ৪টিতে আওয়ামী লীগ, ৪টি বিদ্রোহী, ৩টি বিএনপি ও ২টিতে স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হয়েছে। ৭টি ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবি হয়েছে। এরমধ্যে জামানত হারিয়েছেন নৌকার একাধিক প্রার্থী। নিয়মানুযায়ী বিজয়ী প্রার্থীর প্রাপ্ত ভোটের ৮ ভাগের ১ ভাগের কম ভোট কোন প্রার্থী পেলে তার জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।

উপজেলার ১নং বড় ভাকৈর (পশ্চিম) ইউনিয়নে পর্যাপ্ত পরিমানে ভোট পাওয়ায় কেউ জামানত হারাননি। এই ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৩ হাজার ৩৩৪টি। ৯ হাজার ৪৩১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বাতিল হয়েছে ১৮০টি ভোট। 

২নং বড় ভাকৈর (পুর্ব) ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে দিদার আহমদ ৪১০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এই ইউপিতে ৩৬০১ ভোট পেয়ে নৌকার প্রার্থী মো. আক্তার মিয়া বিজয়ী হয়েছেন। মোট ভোট ১৩ হাজার ৯৪৬টি। এরমধ্যে ১০ হাজার ৫৫৫ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ১৩৮টি। 

৩নং ইনাতগঞ্জ ইউনিয়নে কোন প্রার্থী জামানত হারাননি।ওই ইউনিয়নে বিজয়ী বিদ্রোহী প্রার্থী মো. নোমান হোসেন ঘোড়া প্রতীক পেয়েছেন ৬৭৭০ ভোট। এখানে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৯২৩টি। ১৪ হাজার ১১৮ জন ভোটার তাদের ভোটারধিকার প্রয়োগ করেন। বাতিল হয়েছে ২৯৩টি ভোট। 

৪নং দীঘলবাক ইউনিয়নে ৩২৫ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন লাঙ্গলের প্রার্থী মো. আ. হান্নান চৌধুরী (চান মিয়া), স্বতন্ত্র প্রার্থী চশমা প্রতীক মো. এলাওর মিয়া ৫২০টি ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এই ইউনিয়নে বিএনপি নেতা মো. ছালিক মিয়া আনারস প্রতীক নিয়ে ৩৯৮৫ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। এখানে মোট ভোটার ১৯ হাজার ৯১৬টি। ১৪ হাজার ১৯১ জন তাদের ভোটাধিকার প্রদান করেন। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে ৩১৮ ভোট। 

৫নং আউশকান্দি ইউনিয়নে জামানত হারাননি। এই ইউনিয়নে ৬৭২৫ ভোট পেয়ে নৌকার প্রার্থী দিলাওর হোসেন বিজয়ী হয়েছেন। মোট ১৯ হাজার ৪১০ জন ভোটারের মধ্যে ১৩ হাজার ৭৯৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। বাতিলকৃত ভোটের সংখ্যা ২৪৪টি। 

৬নং কুর্শি ইউনিয়নে ১৯ হাজার ২৬৮ জন ভোটারের মাঝে ১৩ হাজার ৮৫০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এরমধ্যে বাতিল হয়েছে ৩১৯ ভোট। এখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু তালিব (মটর সাইকেল) ৩২১ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিএনপি নেতা শামছুল হুদা চৌধুরী ঘোড়া প্রতীকে ৬২১ ভোট ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ আব্দুল গফুর ১১০ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এই ইউনিয়নে স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ খালেদুর রহমান খালেদ আনারস প্রতীক নিয়ে ৫০৫৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। 

৭নং করগাও ইউনিয়নে ১০২ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন লাঙ্গলের প্রার্থী মো. সাইফুল ইসলাম ও স্বতন্ত্র প্রার্থী শেখ মো. ইসহাক মিয়া মটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে ১২৮ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। ওই ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী পৌর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক (বহিস্কৃত) নির্মলেন্দু দাশ রানা ৭৭২৬ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়ে চমক দেখিয়েছেন। এখানে মোট ভোটার ২২ হাজার ৪১৫ । এর মধ্যে ১৫ হাজার ৭০৩ জন ভোটার তাদের ভোট প্রদান করেন। বাতিল হয়েছে ২৬৯ ভোট। 

৮নং নবীগঞ্জ সদর ইউনিয়নে জামানত হারিয়েছেন লাঙ্গলের প্রার্থী মুফতি মিয়া। তার প্রাপ্ত ভোট ৬৮৮। স্বতন্ত্র প্রার্থী খাজাঁ শফী ওসমানী খাকী চৌধুরী ৭০ ভোট, আতাউর রহমান চৌধুরী ঘোড়া প্রতীকে ৯৩ ভোট এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ হাতপাখা প্রতীক নিয়ে হাফেজ কাজী রোহামা উর রশীদ চৌধুরী ২৫৯ ভোট পেয়ে জামানত হারিয়েছেন। এই ইউনিয়নে নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রথম বারের মতো বিজয়ী হয়ে চমক দেখিয়েছেন যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান হাবিব। তার প্রাপ্ত ভোট ৪৪৩৪। উক্ত ইউনিয়নে মোট ১৫ হাজার ১৭৯ জন ভোটারের মধ্যে ১১ হাজার ১৯১ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন।

৯নং বাউসা ইউনিয়নে কেউ জামানত হারাননি। এই ইউপিতে মোট ভোটার ২০ হাজার ৭৯৮। তারমধ্যে ১৫ হাজার ২২৭ জন তাদের ভোট দেন। বাতিল হয়েছে ২২৩ ভোট। এখানে ৬২০৪ ভোট পেয়ে বিএনপি নেতা সাদিকুর রহমান শিশু নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি এর আগে ওই ইউনিয়নের মেম্বার এবং পরে প্যানেল চেয়ারম্যান ছিলেন। 

১০নং দেবপাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. কুহিনুর মিয়া আনারস প্রতীকে ৩৮৪ ভোট এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. ফখরুল ইসলাম মোটর সাইকেল প্রতীক নিয়ে ৬০৪ ভোট পেয়ে জামানত হারান। এখানে মোট ভোট ১৯ হাজার ৯৪৬। তার মধ্যে ১৩ হাজার ৭৫২ জন তাদের ভোট প্রদান করেন। বাতিল হয়েছে ২৭৮ ভোট। 

১১ নং গজনাইপুর ইউনিয়নে ১৯ হাজার ৭৫৬ জন ভোটারের মধ্যে ১৩ হাজার ৯১৪ জন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। এখানে বাতিল হয়েছে ১৯২ ভোট। জামানত হারিয়েছেন বিএনপি নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল খায়ের কায়েদ ঘোড়া প্রতীক নিয়ে। তার প্রাপ্ত ভোট ৪৫৩। ৬৮৮৪ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন বিদ্রোহী প্রার্থী ইমদাদুর রহমান মুকুল। 

১২ নং কালিয়ার ভাঙ্গা ইউনিয়নে মোট ভোটার ১৫ হাজার ৩১০ জন। ১১ হাজার ৫৭৬ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বাতিল হয়েছে ২০৫ ভোট। উক্ত ইউপিতে জামানত হারিয়েছেন লাঙ্গলের প্রার্থী মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী। তার প্রাপ্ত ভোট ১৩৬ ভোট। এই ইউনিয়নে বিদ্রোহী প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান এমদাদুল হক চৌধুরী আনারস প্রতীক নিয়ে ৩৬১৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হয়েছেন। 

১৩ নং পানিউন্দা ইউনিয়নে কেউ জামানত হারাননি। এখানে ১৮ হাজার ২১ জন ভোটারের মধ্যে ১২ হাজার ৮৮৭ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। বাতিল হয়েছে ২৩৯টি ভোট। এখানে ৭৩৫৮ ভোট পেয়ে নৌকা প্রতীক নিয়ে ৬ষ্ঠ বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়ে চমক দেখিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান ইজাজুর রহমান।  

এ এইচ/বি এন-০৮