কোরিয়ান ভাষায় কোরআনের প্রথম অনুবাদ

সিলেট মিরর ডেস্ক


নভেম্বর ৩০, ২০২১
১০:৩২ অপরাহ্ন


আপডেট : নভেম্বর ৩০, ২০২১
১০:৩৫ অপরাহ্ন



কোরিয়ান ভাষায় কোরআনের প্রথম অনুবাদ

কোরিয়ান ভাষায় কোরআনের প্রথম অনুবাদ করা হয়েছে। ড. হামিদ চৈ ইয়াং কিল সাত বছর কঠোর গবেষণা চালিয়ে কোরিয়ান ভাষায় কোরআনের প্রথম অনুবাদ করেছেন।

কোরিয়ানদের সঙ্গে ইসলামের আন্তঃসামাজিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে প্রায় ১২০০ বছর আগে। কিন্তু এতদিন কোরিয়ান ভাষায় পবিত্র কোরআনের কোনো অনুবাদ ছিল না। অবশেষে ‘ইসলামিক কল ইন কোরিয়া’ নামে খ্যাত ড. হামিদ চৈ ইয়াং কিল সে কাজটি করলেন। এতে তাঁর সাত বছর লেগেছে।

ইসলামের সঙ্গে কোরিয়ার প্রথম সাক্ষাৎ ছিল বাণিজ্যিক। মুসলিম ঐতিহাসিক ও ভূগোলবিদদের মতে, কোরীয় উপদ্বীপের সঙ্গে মুসলিম ব্যবসায়ীদের সংযোগ স্থাপিত হয় খ্রিস্টীয় সপ্তম শতাব্দীর মধ্যভাগে। কোরিয়ায় ইসলাম সংস্কৃতির শীর্ষ পন্ডিত এবং সিউলের হানইয়াং বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃতি ও নৃতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক লি হি সুর-এর বর্ণনা মতে, মুসলিম সম্প্রদায়কে জোসন সাম্রাজ্যের আদালতের অনুষ্ঠানের সময় কোরআন তেলাওয়াত করার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। যা কোরিয়াতে মুসলিমদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতির ইঙ্গিত দেয়। মুসলিম ঐতিহাসিক ও ভূগোলবিদ ইবনে খারদাজবাহে'র বর্ণনা মতে, কোরিয়ান উপদ্বীপে খ্রিস্টীয় নবম শতকে শিলা রাজ্যে মুসলিমদের স্থায়ী আবাস গড়ে ওঠে। কোরিয়ায় শিলা সাম্রাজ্য ও মধ্যপ্রাচ্য দুই দেশের মধ্যে সংযোগ গড়ে ওঠার মাধ্যমে ইসলামিক স্বর্ণযুগের সূচিত হয়।

ড. হামিদ চৈ-এর শৈশব ও পারিবারিক ইতিহাস সম্পর্কে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া না গেলেও জানা যায়, তার বয়স বর্তমানের সত্তরের কাছাকাছি। তিনি ১৯৭৫ সালে হানকুক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আরবি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও নেন। পরে তিনি ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব মদিনা থেকে ‘ফান্ডামেন্টালস অব রিলিজিয়ন অ্যান্ড দাওয়াহ’ বিষয়ে ১৯৮০ সালে উচ্চতর ডিগ্রি অর্জন করেন।

এরপর আরব বিশ্বের খ্যাতিমান আলেম শায়খ আব্দুল্লাহ বিন বাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। আল্লামা শফিউর রহমান মোবারকপুরী রচিত মহানবী (সা.)-এর প্রসিদ্ধ জীবনী গ্রন্থ ‘আর-রাহিকুল মাখতুম’ এর কোরিয়ান অনুবাদের জন্য ২০০৮ সালে 'কিং আবদুল আজিজ ইন্টারন্যাশনাল অ্যাওয়ার্ড ফর ট্রান্সলেশন' পান।

ড. হামিদ চৈ-এর জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হলো, কোরিয়ান ভাষায় পবিত্র কোরআনের অনুবাদ সম্পন্ন করা। এ ছাড়া তিনি এ পর্যন্ত ৩০ টির বেশি ইসলামী বই কোরিয়ান ভাষায় অনুবাদ করেছেন। তিনি ১৯৮৬ সালে সুদানের খার্তুমে অবস্থিত উমদুর্মান ইসলামিক ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ইসলামিক কল ইন কোরিয়া’ শিরোনামে ডক্টরেট ডিগ্রি অর্জন করেন।

পেশাগত জীবনে ড. হামিদ চৈ ইয়াং কিল একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক। কর্মজীবনে মিয়নজি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেছেন। তিনি মুসলিম ওয়ার্ল্ড লীগের সদস্য এবং কোরিয়ান মুসলিম ফেডারেশনের (কেএমএফ) চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।


এএফ/১০