অমিক্রনের পুনঃসংক্রমণের হার ডেল্টার চেয়ে ৩ গুণ বেশি

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ০৩, ২০২১
০৩:১৭ অপরাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ০৩, ২০২১
০৩:১৭ অপরাহ্ন



অমিক্রনের পুনঃসংক্রমণের হার ডেল্টার চেয়ে ৩ গুণ বেশি

করোনাভাইরাসে দ্বিতীয়বার বা পুনঃসংক্রমণের সম্ভাবনা ভাইরাসের ডেল্টা বা বিটা ধরনের তুলনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টে তিনগুণ বেশি। দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানীদের করা সর্বশেষ একটি প্রাথমিক গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে। অর্থাৎ করোনার ডেল্টা বা বেটা ধরনের তুলনায় ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ ক্ষমতা তিনগুণ বেশি।

বৃহস্পতিবার (২ ডিসেম্বর) ওই গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়। শুক্রবার (৩ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এএফপি।

সারা বিশ্ব এখন কার্যত ওমিক্রন আতঙ্কে ভুগছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্তের পর দ্রুততম সময়ের মধ্যে ভাইরাসের এই ধরনটি বিশ্বের প্রায় ৩০ দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। ওমিক্রন নিয়ে সৃষ্ট আতঙ্কে আফ্রিকার দেশগুলোর বিরুদ্ধে একে একে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাচ্ছে বিশ্বের বহু দেশ। এই পরিস্থিতিতে দক্ষিণ আফ্রিকার ওই গবেষণায় এই ভয়ানক তথ্য উঠে এলো।

বৃহস্পতিবার প্রকাশিত গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রথমবার করোনা থেকে সুস্থ হয়ে ওঠার পর দ্বিতীয়বার বা তৃতীয়বার করোনা আক্রমণ করার ক্ষেত্রে ডেল্টা বা বিটা ভ্যারিয়েন্টের যে শক্তি ছিল, তার থেকে তিনগুণ শক্তি নিয়ে মানুষকে আক্রমণ করছে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্ট। এছাড়া আগের সংক্রমণ থেকে তৈরি হওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভেদ করে ভাইরাসের এই ধরন শরীরে প্রবেশ করছে বলেও ওই গবেষণায় জানানো হয়েছে। আর এ নিয়েই নতুন করে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক।

গত ২৭ নভেম্বর পর্যন্ত যত মানুষের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে, তার মধ্যে মোট ২০ লাখ ৮০ হাজার মতো মানুষের করোনার রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে, এর মধ্যে ৩৫ হাজারের বেশি মানুষ দ্বিতীয় বার করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। মূলত ৯০ দিনের ব্যবধানে ফের তাদের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়েছে। শেষ তিনটি করোনার ঢেউয়ের বিচারেই এই সংক্রমণের হিসাব করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করে ওই গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, যাদের শরীরে ফের করোনা শনাক্ত হয়েছে, তাদের বেশিরভাগই ভাইরাসের ডেল্টা সংক্রমণের সময় আক্রান্ত ছিলেন। এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিজ্ঞানী আনা ভন গটবার্গ বলেছিলেন, ওমিক্রন অতিরিক্ত মাত্রায় সারা দক্ষিণ আফ্রিকায় ছড়িয়ে পড়েছে।

তার মতে, ওমিক্রনের মতো করোনার ভ্যারিয়েন্টের সংক্রমণ রুখতে সক্রিয় ভূমিকা নিতে পারে টিকা। যদি সঠিক পরিমাণে টিকাদান কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে ওমিক্রনের সংক্রমণ রুখে দেওয়া সম্ভব হবে।

তবে টিকা নিলেই কেউ করোনায় আক্রান্ত হবেন না, এমনটি নয়। টিকা মূলত মানুষের শরীরে করোনা সংক্রমণের ফলে হওয়া মৃত্যু ও ভয়াবহতার পরিমাণ বেশ কিছুটা কমিয়ে দেয়। টিকাপ্রাপ্তদের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায়। এ ক্ষেত্রেও তাই টিকাদানের ওপরেই গুরুত্ব দিতে চাইছেন বিশেষজ্ঞরা।

গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওমিক্রনে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপরই তা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। একজন বিশেষজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত করোনার বি.১.১.৫২৯ নামক এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘এ যাবতকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন।

এমনকি করোনার এই ধরন মানবদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতাকেও আক্রমণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। গ্রিক বর্ণমালার ১৫ নম্বর অক্ষর অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এই ভ্যারিয়েন্টকে ‘ওমিক্রন’ নাম দেয়।

বি এন-০১