চা বাগান খোলাসহ ২৫ দাবিতে বৈকুণ্ঠপুরে শ্রমিকদের সভা

সিলেট মিরর ডেস্ক


ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
১২:২২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ৩০, ২০২১
১২:২২ পূর্বাহ্ন



চা বাগান খোলাসহ ২৫ দাবিতে বৈকুণ্ঠপুরে শ্রমিকদের সভা

হবিগঞ্জের বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের স্থানীয় নাট্যমন্দিরে বৈকুণ্ঠপুর চা বাগান আন্দোলন কমিটির উদ্যোগে মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল দশটায় এ মতবিনিময়সভা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের মালিক কর্তৃক দিলীপ কেউ নামক একজন শ্রমিকের বাড়ি উচ্ছেদের রেশ ধরে বন্ধ হওয়া বাগানের কার্যক্রম পুনরায় চালু করাসহ ২৫ দফা দাবি তোলেন তারা৷ সভায় আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে যাবতীয় সংকট নিরসন না হলে কঠোর থেকে কঠোরতর আন্দোলনের ডাক দেবেন বলে জানান।

বক্তারা বলেন, স্থায়ী চা শ্রমিকদের বাগান মালিকপক্ষ আবাসন সুবিধা দেওয়ার কথা থাকলেও কোনো সুযোগ সুবিধা দেওয়া হয়নি স্থায়ী চা শ্রমিক দিলীপ কেউটকে। কালক্ষেপণ ও বাসস্থান সংকটের তোপে বাধ্য হয়ে নিজের খাজনা দেওয়া ফসলি জমিতে বাড়ি বানানোর জন্য ম্যানেজার এবং পঞ্চায়েত কমিটির থেকে মৌখিক অনুমতি নেন তিনি। কিন্তু বাড়ি তোলার ১৫ দিনের মাথায় মালিকপক্ষ বাড়ি উচ্ছেদের নোটিশ দেয়। স্থানীয় চা শ্রমিকরা দিলীপের পক্ষে কথা বললে ১২ জন শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা এবং বেশ কিছু শ্রমিককে বহিষ্কারের হুমকি দেওয়া হয়৷ এর পাশাপাশি গত এক মাস ধরে বৈকুন্ঠপুর চা বাগানের কার্যক্রম এবং শ্রমিকদের মজুরি ও রেশন বন্ধ করে দেওয়া হয়৷ 

জানা গেছে, ঘটনার সমাধানের জন্য পঞ্চায়েত কমিটি ও চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের উস্থিতিতিতে একটি আন্দোলন কমিটি গঠন করা হয়। সেই ধারাবাহিকতায় আজকের মতবিনিময় সভায় চা শ্রমিক নেতৃবৃন্দরা ২৫ দফা দাবি উত্থাপন করেন। যেখানে দিলীপসহ আবাসনবঞ্চিত সকল চা শ্রমিকদের স্থায়ীভাবে সংকট নিরসনের কথা উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়াও অস্থায়ী চা শ্রমিকদের স্থায়ীকরণ, উন্নত চিকিৎসাব্যবস্থা, কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষা, মজুরি বৃদ্ধি প্রভৃতির দাবি উঠে আসে।

২০১৯ সালে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তর কর্তৃক ২৫ দফা ইশতেহারের কথা উল্লেখ করে বৈকুণ্ঠপুর চা বাগানের পঞ্চায়েত কমিটির সাধারণ সম্পাদক খোকন চৌহান বলেন, ইশতেহারের ২৩নং অনুচ্ছেদে স্থানীয় আবাসন সংকট নিরসনের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা ছিল। আজ তিন বছর পরেও ২৫ দফার এক দফা সমাধানও চা শ্রমিকেরা চোখে দেখেনি।

আন্দোলন কমিটির সদস্য মাইকেল বাসকের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল, লস্করপুর ভ্যালীর সভাপতি রবীন্দ্র গৌড়, সাধারণ সম্পাদক অনিরুদ্ধ বাড়াইক, বৈকুন্ঠপুর চা আন্দোলন কমিটির সভাপতি মনিব কর্মকার, বাংলাদেশ চা কন্যা নারী সংগঠনের আহবায়ক খাইরুন আক্তার, নোয়াপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মীরা কৈরী এবং রেমা-নোয়াপাড়া-চাঁদপুর-বেগমখানসহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিক প্রতিনিধিবৃন্দ।

সভার সমাপনী বক্তব্যে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিভাগীয় শ্রম অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট সিদ্ধান্ত না আসলে একযোগে দেশের সকল চা বাগান বন্ধের হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল।

আরসি-০১