সাইনবোর্ড আছে, তবু সন্ধান নেই অনুসন্ধান ডেস্কের

সাইদুর রহমান আসাদ, সুনামগঞ্জ


জানুয়ারি ১১, ২০২২
০৭:২২ অপরাহ্ন


আপডেট : জানুয়ারি ১১, ২০২২
০৭:২২ অপরাহ্ন



সাইনবোর্ড আছে, তবু সন্ধান নেই অনুসন্ধান ডেস্কের

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের অনুসন্ধান ডেস্কের সাইন বোর্ড সাঁটানো হয়েছে প্রায় ১ বছর আগে। কিন্তু এখনও চালু হয়নি ডেস্কের কার্যক্রম। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ভুল জায়গায় অনুসন্ধান ডেস্কের ব্যবস্থা করায় চালু করা যাচ্ছে না ডেস্কটি। এতে হাসপাতালে আসা সেবাগ্রহীতাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।

শান্তিগঞ্জ উপজেলার দরগাপাশা ইউনিয়নের সিচনি গ্রামের বাসিন্দা রুহুল আমিন (৩৫) গতকাল শনিবার ডাক্তার দেখাতে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে যান। জরুরি বিভাগে দেখানোর পর এক্সরে করাতে ২০ নম্বর কক্ষে পাঠান কর্তব্যরত চিকিৎসক। জরুরি বিভাগ থেকে বের হয়ে টোকেন হাতে নিয়ে খোঁজতে থাকেন ২০ নম্বর কক্ষ। কয়েকজনকে জিজ্ঞেস করেও কাক্সিক্ষত কক্ষের সন্ধান পাচ্ছিলেন না তিনি। শেষে এ প্রতিবেদকের সাহায্য নিয়ে ২০ নম্বর কক্ষের এক্সরে রুমের সন্ধান পান তিনি।

রুহুল আমিন বলেন, ‘আমার পায়ের ব্যথা। হাঁটতে পারি না। এ জন্য ডাক্তার দেখাতে সুনামগঞ্জে এসেছি। জরুরি বিভাগের ডাক্তারকে দেখানোর পর ২০ নম্বর কক্ষ থেকে এক্সরে করানোর জন্য বলেন তিনি। ২০ নম্বর কক্ষ খুঁজে বের করতে ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে আমাকে।’

শুধু রুহুল আমিন নন, তার মতো অনেক সেবাগ্রহীতা হাসপাতালে সেবা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়ছেন প্রতিদিন। আটতলা ভবনের নিচতলায় অনুসন্ধান ডেস্ক থাকলেও এর কার্যকারিতা না থাকায় ক্ষোভ জানিয়েছেন তারা। 

সেবা গ্রহীতা মো. ফয়েজ মিয়া বলেন, ১৫ দিন আগে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনার শিকার হই। এখন বুকে ব্যথা। কাউন্টার থেকে ৫ টাকা দিয়ে টিকিট নিয়েছি। এখন ডাক্তারের রুম খোঁজে পাচ্ছি না। 

সুমন মিয়া বলেন, আমার ১৪ মাস বয়সী ছেলের ঠান্ডা লেগেছে। তাকে নিয়ে হাসপাতালে আছি কয়েকদিন হলো। এতো বড় হাসপাতালে এসে বোকা বনে যেতে হয়। এক কক্ষ থেকে আরেক কক্ষে ঘুরতে হয়। এতে অনেক সময় নষ্ট হয়। অনুসন্ধান ডেস্ক চালু থাকলে হাসপাতালের সেবা পাওয়া আরও সহজ হতো।

সুনামগঞ্জ জেলা জাসদের সাধারণ সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ বলেন, হাসপাতালে সব অদ্ভুত নিয়ম। দেয়ালে লেখা হয়েছে কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া ছবি, ভিডিও করা যাবে না। কেনো এই নিয়ম করা হয়েছে সেটা আমরা বুঝি। এখানে অনুসন্ধান ডেস্ক রয়েছে, তবে এর কার্যকারিতা নেই। লিফট প্রায়ই অচল থাকে, মূল দরজায় প্রতিনিয়ত বিকট শব্দে বাঁশি বাজিয়ে রোগীদের স্নায়বিক সমস্যা তৈরি করা হচ্ছে। 

এদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, ভুল জায়গায় অনুসন্ধান ডেস্ক বসানোর ব্যবস্থা করেছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গণপূর্ত বিভাগ। এখন সেখান থেকে সরিয়ে সিঁড়ির নিচে নেওয়া হবে ডেস্কটি। কারণ কলাপসিবল গেট হবে সামনে। আর এই গেটের পাশেই অনুসন্ধান ডেস্কটি স্থাপন করা হবে। 

সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, ৭ ফুট লম্বা একটি কলাপসিবল গেট লাগবে নিচতলার সিঁড়ির পাশে। গণপূর্ত অফিস তাদের মতো করে অনুসন্ধান ডেস্ক করেছে। আমি জানতাম না। দেখার পর ডেস্কটি সামনে নিয়ে আসছি। এখন বলেছি কলাপসিবল গেট লাগিয়ে ঠিক করে দেওয়ার জন্য। তারা কাজ শেষ করে দিলে আমরা অনুসন্ধান ডেস্কের কাজ শুরু করতে পারব।

এ বিষয়ে সুনামগঞ্জ গণপূর্ত অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মমিনুল হক বলেন, সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের ৮ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবন করা হয়েছে। ভবনের ডিজাইনে যেখানে ছিল সেখানে অনুসন্ধান ডেস্ক দেওয়া হয়েছে। এখন কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে অনুসন্ধান ডেস্ক সরানো দরকার তাহলে সরাব।

আরসি-১০