করোনার বুস্টার ডোজ দ্রুত নেওয়া কেন জরুরি?

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
০৬:৩২ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ০১, ২০২২
০৬:৩২ অপরাহ্ন



করোনার বুস্টার ডোজ দ্রুত নেওয়া কেন জরুরি?

করোনাভাইরাস প্রতিনিয়ত নিজের আক্রমণ কৌশল বদলে ফেলছে। ডেল্টার তাণ্ডবের পর এখন শুরু হয়েছে ওমিক্রনের সাঁড়াশি আক্রমণ। এই ভাইরাস প্রতিরোধে সর্বোত্তম রক্ষাকবচ হচ্ছে ভ্যাকসিন। এখন চলছে বুস্টার ডোজ নেওয়ার প্রক্রিয়া।

এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন লে. কর্নেল ডা. নাসির উদ্দিন আহমদ (ক্লাসিফায়েড মেডিসিন স্পেশালিস্ট ও এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতাল [সিএমএইচ])

যাঁরা এর মধ্যে দুই ডোজ করোনার ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন, তাঁদের বলা হচ্ছে পূর্ণাঙ্গ ভ্যাকসিন গ্রহণকারী। গবেষণায় দেখা গেছে, শুরুতে তাঁদের দেহে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছিল সময় অতিক্রমের পর তার মাত্রা কমে যাচ্ছে। অ্যান্টিবডি হচ্ছে রোগ প্রতিরোধক দেয়াল। এই দেয়াল সময়ের বিবর্তনে দুর্বল হয়ে পড়ে। তখন প্রয়োজন পডে নতুন করে নির্মাণ। বুস্টার ডোজ হচ্ছে এই রোগ প্রতিরোধক দেয়ালের শক্তি বৃদ্ধির টনিক। সে কারণে অনেক রোগের ভ্যাকসিন প্রয়োগের পর আবার প্রয়োজন পড়ে বুস্টার ডোজ। তাই এখন বুস্টার ডোজের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া উচিত।

কেন বুস্টার ডোজ?

বুস্টার ডোজ ক্রম হ্রাসমান অ্যান্টিবডির মাত্রা বৃদ্ধি করে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ব্যূহ রচনা করে। করোনাভাইরাস সংক্রমণের তীব্রতা হ্রাসে এই ডোজ বেশ কার্যকর ভূমিকা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি করোনা সংক্রমণজনিত কারণে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর ঘটনা হ্রাস করে। ডেল্টা বা ওমিক্রনের বিরুদ্ধেও এই বাড়তি ডোজ কার্যকর। এ কারণেই সারা পৃথিবীর চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা বুস্টার ডোজের জন্য মানুষকে উৎসাহিত করছেন।

কাদের জন্য?

বুস্টার ডোজ প্রদানের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। কেউ ১৬ বছরের ঊর্ধ্ব বয়সী সবার জন্য এই ডোজ নেওয়ার জন্য বলেছে। কেউ আরো কম বয়সীদের জন্য নেওয়ার তাগিদ দিয়েছে। ইতালি, জার্মানি, গ্রিসে স্কুলগামী শিশু-কিশোর ওমিক্রনে বেশি আক্রান্ত হওয়ায় সেখানে বুস্টার ডোজের বয়সসীমা করেছে ৫-৭ বছর।

যাঁরা ছয় মাস পূর্বে করোনার পূর্ণাঙ্গ ডোজ (দুই ডোজ) সমাপ্ত করেছেন তাঁরা বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন বলে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে বিভিন্ন দেশ। কোনো কোনো ব্র্যান্ডের ভ্যাকসিনের ক্ষেত্রে আরো কম সময় পরে বুস্টার ডোজ নেওয়ার জন্য তারা সুপারিশ করেছে।

যাঁরা পূর্ণাঙ্গ দুই ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়ার পর এর মধ্যে ছয় মাস সময় পার করেছেন, তাঁরা বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে বয়স ও পেশাভিত্তিক অগ্রাধিকার কেউ হয়তো পাবে। এ জন্য যাঁরা প্রবীণ নাগরিক কিংবা করোনার সম্মুখ সারির যোদ্ধা তাঁরা এই ডোজ পাওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা অগ্রাধিকার পাচ্ছেন।

ডায়াবেটিস, অ্যাজমা, কিডনির অসুখ, হৃদরোগ, ক্যান্সার সহ জটিল এবং দীর্ঘকালীন অসুখে যাঁরা ভুগছেন তাঁরাও বুস্টার ডোজ নিতে পারবেন। বুস্টার ডোজ নেওয়ার ক্ষেত্রে বরং তাঁদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। যাঁদের ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাপনা নড়বড়ে তাঁদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। গর্ভবতী এবং দুগ্ধবতী মায়েদের জন্যও বুস্টার ডোজ নিরাপদ।

সুতরাং বুস্টার ডোজ নিন, নিরাপদ রাখুন নিজেকে ও সমাজকে।

আরসি-১৪