শাবিপ্রবি ভিসি প্রসঙ্গে কিছু বলবেন না জাফর ইকবাল

সিলেট মিরর ডেস্ক


ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
১২:২৪ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ২০, ২০২২
১২:২৪ পূর্বাহ্ন



শাবিপ্রবি ভিসি প্রসঙ্গে কিছু বলবেন না জাফর ইকবাল

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) ভিসি অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বিষয়ে বিস্তারিত জানলেও প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি নন বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষক লেখক জাফর ইকবাল। তিনি বলেছেন, আমি এ বিষয়ে অনেক বিস্তারিত জানি, কিন্তু প্রকাশ্যে কিছু বলতে পারব না। টেলিভিশন বা মিডিয়ায় কথা বলতে পারব না। কারণ তাদের কাছে কথা দিয়েছি যে আমি কিছু বলব না।

আজ শনিবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে বাংলা একাডেমিতে অমর একুশে বইমেলায় সাস্ট ক্লাব লিমিটেডের স্টল উদ্বোধনকালে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন তিনি।

জাফর ইকবাল বলেন, আমি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কাছে গিয়েছি, তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কিন্তু এ বিষয়টি আমি পাবলিকলি বলতে পারব না। আমাকে কিছু জিজ্ঞাসা করে লাভ নেই। এ বিষয়ে কিছু হলে তখন আপনারা নিজেরাও দেখবেন।

গত ১৬ জানুয়ারি বিকেলে তিন দফা দাবি আদায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি ভবনে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে পুলিশ উপাচার্যকে উদ্ধার করতে গেলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই সময় পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। 

এ ঘটনায় দুইশ থেকে তিনশ অজ্ঞাত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে- আন্দোলনরত দুই-তিনশ উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থী হঠাৎ কর্তব্যরত পুলিশের ওপর চড়াও হয়। তারা সরকারি আগ্নেয়াস্ত্র ধরে টানাটাানি করে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। চারদিক থেকে বৃষ্টির মতো ইটপাটকেল নিক্ষেপসহ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে গুলি ছোড়ে। এ ছাড়া পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলন শুরু হয় ১৪ জানুয়ারি দিবাগত রাতে। তখন শিক্ষার্থীদের অভিযোগ ছিল, বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী ছাত্রী হলে নানা সমস্যা রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধান চেয়ে তারা হলের প্রভোস্ট সহযোগী অধ্যাপক জাফরিন আহমেদকে কল করেন। প্রভোস্টকে ফোন দিলে তিনি বলেন, ‘বের হয়ে গেলে যাও, কোথায় যাবে? আমার ঠেকা পড়েনি।’ শিক্ষার্থীরা বিষয়টি জরুরি উল্লেখ করলে তিনি বলেন, ‘কীসের জরুরি? কেউ তো আর মারা যায়নি।’ 

পরে প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন ছাত্রীরা। এরই মধ্যে ১৬ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইআইসিটি) ভবনের সামনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়।

এরপর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়। তবে ওই নির্দেশনা অমান্য করে আন্দোলন চালিয়ে যান শিক্ষার্থীরা। প্রভোস্টের পদত্যাগের দাবিতে শুরু হওয়া আন্দোলন শেষ পর্যন্ত উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে পরিণত হয়।

উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ১৯ জানুয়ারি বিকেল ৩টা থেকে তার বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ জন শিক্ষার্থী। এক পর্যায়ে আমরণ অনশনরত শিক্ষার্থীদের প্রায় সবাই অসুস্থ হয়ে পড়েন। সাতদিন পর একই বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবালের অনুরোধে ২৬ জানুয়ারি শিক্ষার্থীরা অনশন ভাঙেন। তবে অনশন ভাঙলেও উপাচার্যের পদত্যাগ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।

পরে ১১ ফেব্রুয়ারি বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ১১ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠক করেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। এ সময় শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলও সেখানে ছিলেন।

ওই বৈঠকের পর ১২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের মুখপাত্র মোহাইমিনুল বাশার রাজ বলেন, আমাদের দাবি পূরণে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছেন। আমরা তাদের ওপর আস্থা রেখে আপাতত আন্দোলন প্রত্যাহার করে নিলাম।

আরসি-১৬