কানাইঘাটকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি মুমিন চৌধুরীর

নিজস্ব প্রতিবেদক


মে ১৯, ২০২২
০১:১০ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মে ১৯, ২০২২
০১:১০ পূর্বাহ্ন



কানাইঘাটকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি মুমিন চৌধুরীর



এবারের বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা সিলেটের কানাইঘাট উপজেলাকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী। বুধবার বিকেলে সিলেট জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় তিনি এ দাবি জানান।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় সিলেট-১ আসনের সংসদ সদস্য ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ৃড. এ কে আব্দুল মোমেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান, সিলেট-৩ আসনের সংসদ সদস্য হাবিবুর রহমান হাবিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব মো. কামরুল হাসান, সিলেটের বিবাগীয় কমিশনার ড. মুহম্মদ মোশাররফ হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদ, সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান মোস্তাকুর রহমান মফুর, গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান আবুল কাশেম পল্লব, ওসমানীনগর উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নুল হক চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান (ভারপ্রাপ্ত) নাজিরা বেগম শিলা প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভায় কানাইঘাট উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে বক্তব্য দেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মুমিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘সুরমার পানি উপচে সবার আগে কানাইঘাট উপজেলা প্রবাহিত হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার শতভাগ এলাকা পানিতে নিমজ্জিত। উপজেলার আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলা সদর ও গ্রামীণ যোগাযোগের সবগুলো সড়ক পানির নিচে।’
চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে আরও বলেন, ‘সরকারের পক্ষ যে সব সহায়তা দেওয়া তা একেবারে নগণ্য। বানভাসি মানুষের কষ্ট বলে বোঝানোর উপায় নেই। কানাইঘাট বাজারে কোমর-সমান পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এলাকার জনপ্রতিনিধি, সরকারি কর্মকর্তা ও বেসরকারি উদ্যোগে অনেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করছেন। এমপি মহোদয় গত দুদিন বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ইউএনওকে নিয়ে আমি নিজেও বিভিন্ন এলাকায় গেছি।’
পুরো সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ উল্লেখ করে মুমিন চৌধুরী বলেন, ‘এখনও পানি বাড়ছে। মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে আছেন। না গেলে সেটা কেউ বুঝবে না। আমি দাবি জানাচ্ছি- কানাইঘাট উপজেলাকে বন্যাদুর্গত উপজেলা ঘোষণা করা হোক।’
সভায় গোয়াইনঘাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক আহমদও তার উপজেলাকে বন্যাদুর্গত এলাকা ঘোষণার দাবি জানান।

প্রসঙ্গত, সিলেটে চলতি বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা কানাইঘাট উপজেলা। সুরমা ও লোভানদীর পানি গত পাঁচদিন ধরে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কানাইঘাট বাজারে নৌকা চলাচল করছে। উপজেলা সদরের সঙ্গে সিলেট ও অন্যান্য উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। গত তিনদিন ধরে উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন। হাজার হাজার মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে গেছে। নদীতে বিলিন হয়েছে বহু ঘরবাড়ি। অন্তত ৪০টি স্থানে সুরমা ডাইক ভেঙে জনপদে পানি প্রবেশ করেছে। পানিবন্দি আড়াই লাখ মানুষ মানবেতর জীবনযাপন করছেন। উপজেলার সবকটি স্কুল-কলেজ পানিতে নিমজ্জিত। কৃষি ফসল ও মৎস খামার ব্যাপক হারে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানির নিচে নিমজ্জিত শত শত গ্রামীণ সড়ক ভেঙে গেছে। মানুষ অবর্ণনীয় দুর্ভোগের মধ্যে বাস করছেন। গত মঙ্গলবার মমতাজগঞ্জ বাজার থেকে ফেরার পথে নৌকাডুবে এক ব্যবসায়ী নিখোঁজ হয়েছেন।
সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। গত সোম ও মঙ্গলবার কানাইঘাটের বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউএনও, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, রাজনৈতিক নেতারা।