ব্লকবাস্টার ভারত-পাকিস্তান লড়াই আজ

খেলা ডেস্ক


অক্টোবর ২৩, ২০২২
০৪:১৯ পূর্বাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ২৩, ২০২২
০৪:২৩ পূর্বাহ্ন



ব্লকবাস্টার ভারত-পাকিস্তান লড়াই আজ

ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর যারা তিনটি যুদ্ধ করতে পারে, তাদের কাছে খেলা স্রেফ খেলা থাকে না। এক ধরনের যুদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। আজ মেলবোর্নে তেমন এক যুদ্ধে নামছে ভারত ও পাকিস্তান। 

এবারের টি২০ বিশ্বকাপে ভারত-পাকিস্তান ম্যাচের টিকিট ছাড়া হয়েছিল গত ফেব্রুয়ারিতে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০২১ আসর শেষ হওয়ার মাত্র তিন মাসের মধ্যে। পাঁচ মিনিটেই বিক্রি হয়ে গেছে সব টিকিট। চাহিদার কারণে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে চার হাজার দর্শকের দাঁড়িয়ে খেলা দেখার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ৯০ হাজার দর্শক আজ মাঠে থাকবেন।

দীর্ঘদিন দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বন্ধ থাকায় এখন কেবল বৈষয়িক আসরেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই দেশের দেখা হচ্ছে। ফলে এই ম্যাচের উন্মাদনা ছাপিয়ে যাচ্ছে আর সব কিছুকে। গতবার দুবাইয়ে গ্রুপ পর্বে প্রথম ম্যাচেই বিরাট কোহলিদের ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারিয়েছিল বাবর আজমের দল। ওয়ানডে কিংবা টি২০ কোন ঘারনার বিশ্বকাপে সেটি ছিল ভারতের বিপক্ষে পাকিস্তানের প্রথম জয়। এবারও যুদ্ধের আবহে শুরু হচ্ছে দুই দেশের বিশ্বকাপ মিশন।

তবে স্থানীয় আবহাওয়ার পূর্বাভাস, মেলবোর্নে আজ সন্ধ্যায় বৃষ্টির সম্ভাবনা ৯০ শতাংশ! ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা জানিয়েছেন, প্রয়োজনে কার্টেল ওভারের জন্যও প্রস্তুত তার দল।

‘ছেলেরা পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলার জন্য মুখিয়ে আছে। বৃষ্টির ওপর কারও হাত নেই। কম ওভারের খেলা হলেও চিন্তা করছি না। পরিস্থিতি যেমনই হোক, আমরা তার জন্য প্রস্তুত।

ভাগ্যক্রমে আমরা অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ভারতে ৮ ওভারের একটি ম্যাচ খেলেছিলাম। অনেকেই আগে এ ধরনের খেলার মুখোমুখি হয়েছে এবং জানে কীভাবে এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হয়।’ শনিবার সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে আরও অনেক প্রসঙ্গের সঙ্গে বৃষ্টি ও কার্টেল ওভার নিয়ে বলেন রোহিত। পাকিস্তান ম্যাচ যে আর দশটা ম্যাচের মতো নয়, সেটি স্বীকার করেন ভারত অধিনায়ক, ‘আমরা যখন পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলতে নামি, তখন ম্যাচটি ব্লকবাস্টারে পরিণত হয়। এটি সবসময় হয়ে থাকে।

মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসে এর অনুভূতি অনুভব করার চেষ্টা করে। কারণ তারা ক্রিকেট উপভোগ করতে চায়। সেই সঙ্গে স্টেডিয়ামে ভক্ত ও দর্শকদের পরিবেশও দেখতে চায়। এমনকি ঘরে বসে যারা যারা ম্যাচ দেখেন তারাও ভীষণ উত্তেজনায় থাকেন।’ গত টি২০ বিশ্বকাপে পাকিদের কাছে ওই হারের পর সেমিফাইনালেও উঠতে পারেনি ভারত, নেতৃত্ব ছাড়েন কোহলি।

এরপর সেই আমিরাতেই গত আগস্টে টি২০ ফরম্যাটের এশিয়া কাপের গ্রুপ পর্বে ৫ উইকেটের জয়ে বদলা নেয় রোহিত শর্মার দল। সুপার ফোরে একই ব্যবধানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীতের হারিয়ে ফাইনালে ওঠে বাবর আজমের পাকিস্তান। ভারতের এই দলটা অত্যন্ত ভারসাম্যপূর্ণ।

টি২০ র‌্যাঙ্কিংয়ের নাম্বার ওয়ান দলটির অধিনায়ক রোহিতের সেঙ্গ ওপেনিংয়ে আছেন লোকেশ রাহুল।

ওয়ানডাউনে সুপারস্টার বিরাট কোহলিও ফর্মে ফিরেছেন, এশিয়া কাপ এবং পরের সিরিজে দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। সূর্য কুমার যাদবের কথাও আলাদা করে বলতে হবে। টি২০ ক্রিকেটে এই বছর সর্বোচ্চ রান, হাফ সেঞ্চুরি, ছক্কার সব রেকর্ডই তার দখলে। আছেন ফিনিশার দীনেশ কার্তিক। অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া, অক্ষর প্যাটেল। স্পিনে যুবেন্দ্র চাহাল।

ইনজুরির কারণে তারকা পেসার জাসপ্রিত বুমরাহ না থাকলেও ভুবনেশ্বর কুমারের সঙ্গী হয়েছেন অভিজ্ঞ মোহাম্মদ শামি। আছেন হার্শাল প্যাটেল, অর্শ্বদ্বীপ সিংয়ের মতো প্রতিভাবান পেসার। অন্যদিকে ছোট্ট ফরম্যাটে পাকিস্তান দারুণ এক দল। ব্যাটিংয়ের প্রাণভোমরা অধিনায়ক বাবর ও ওপেনিংয়ে তার সঙ্গী মোহাম্মদ রিজওয়ান। সাম্প্রতিক সময়ে টি২০ ওপেনিংয়ে রেকর্ড বইয়ের পাতা নাড়িয়ে দিয়ে চলেছেন দুজনে। দলটির মিডল অর্ডার বড় দুশ্চিন্তার নাম।

ফলে বাবর-রিজওয়ানের ব্যর্থতায় অনেক ম্যাচ হেরেছে পাকিস্তান। বিশ্বকাপের ঠিক আগে নিউজিল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে স্বাগতিকদের হারিয়েছে বাবরের দল। সেখানে অবশ্য মিডল অর্ডারে শাদাব খান, ইফতিখার আহমেদরা ভালো কিছুর ইঙ্গিত দিয়েছেন। ফিনিংশিংয়ে আছেন আসিফ আলর মতো হার্ডহিটার।

ইনজুরি কাটিয়ে তুখোড় বাঁহাতি পেসার শাহিন শাহ আফ্রিদি ফেরায় পাকিস্তানের বোলিং আক্রমণ আরও শক্তিশালী। আছেন নাসিম শাহ, হারিস রউফ, মোহাম্মদ ওয়াসিমের মতো দ্রুতগতির বোলার। মোহাম্মদ নওয়াজ, শাদাব খানকে নিয়ে স্পিন আক্রমণও বৈচিত্র্যপূর্ণ। ২০০৭ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত মুখোমুখি ১১ টি২০ ম্যাচের ৭টিতেই জয় ভারতের। পাকিস্তানের জয় ৩। টাই হয়েছে ১টি।

আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী মেলবোর্নে আজ বৃষ্টির সম্ভাবনা প্রায় ৯০ শতাংশ; হতে পারে ঝড়ও। এবারের টি২০ বিশ্বকাপে কেবল সেমিফাইনাল ও ফাইনালের জন্য রিজার্ভ ডে আছে। সুতরাং বৃষ্টির কারণে সুপার টুয়েলভের ম্যাচগুলোতে অন্তত পাঁচ ওভারও খেলা না হলে পয়েন্ট ভাগাভাগি হবে।


এসই/০৫