সিলেটে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ
‘অনিরাপদ খাবার খাওয়ায় নানা ধরনের খাদ্যবাহিত রোগে
আক্রান্ত হয়ে অনেকে মারা যান। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, প্রতি
বছর চার লাখ বিশ হাজার মানুষ মারা যায়। তাই, অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু ও রোগ
প্রতিরোধে প্রত্যেকের সচেতন হতে হবে। নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করতে মৌলিক দক্ষতা ও
জ্ঞান সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।’
সিলেটে প্রাথমিক
বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিয়ে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার নগরের শেখঘাটস্থ জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের হলরুমে দিনব্যাপী এ প্রশিক্ষণে ১২ উপজেলার ২৪ জন শিক্ষক অংশ নেন।
বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য অধিদপ্তরের স্ট্রেনথেনিং দ্য ইনসপেকশন, রেগুলেটরি এন্ড কোঅরডিনেটিং (STIRC) প্রকল্পের উদ্যোগে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের জন্য নিরাপদ খাদ্য বিষয়ে সচেতনতা (ToT) প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।
জাপানের দুইজন
অভিজ্ঞ প্রশিক্ষক এবং জাইকা প্রকল্পের কর্মকর্তারা তাদের হাতে-কলমে
প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ দেন। প্রশিক্ষণের অন্তর্ভুক্ত বিষয় ছিল ছিল শিশুদের
জন্য নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক সচেতনতা, মৌলিক স্বাস্থবিধি, ছবির কার্ডসহ কুইজ
এবং হাত ধোয়ার পদ্ধতি। শিক্ষকরা প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান স্কুলের
শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের প্রদান করবেন।
সমাপনী
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের সচিব
আবদুন নাসের খান। তিনি বলেন, ‘শিশুরা যা দেখে তা শিখে। ছোটবেলা থেকে
খাদ্যের নিরাপদতা এবং পুষ্টির মান বজায় রাখার প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি সম্পর্কে
তাদের জানানো গেলে তারা দ্রত শিখবে এবং সারাজীবন ধরে রাখবে। এ জন্য আগামীতে
পাঠ্যবাইয়ে এ বিষয়টি অন্তর্ভূক্তির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’
তিনি
শিক্ষকদের উদ্দেশে বলেন, ‘নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাদ্য মানুষের জীবনে
অপরিহার্য। আপনারা যে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তা শিক্ষার্থীদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে
হবে। তবেই, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত হবে এবং একটি সুস্থ-সমৃদ্ধ জাতি গড়ে
উঠবে।’
প্রশিক্ষণে আরও বলা হয়, ‘নিরাপদ খাদ্য ও খাবারের পুষ্টিগুণ ধরে রাখতে পাঁচটি বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে। পরিচ্ছন্নতা, কাঁচা ও রান্না খাবার পৃথক রাখা, সঠিক তাপমাত্রায় রান্না, সংরক্ষণ এবং নিরাপদ খাদ্য উপকরণ ও পানির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি নিরাপদ ও পুষ্টিকর খাবার বিষয়ক মৌলিক দক্ষতা ও জ্ঞান সর্বত্র ছড়িয়ে দিতে হবে।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন, জাইকা ফুড সেফটি
প্রকল্পের (STIRC) এক্সিকিউটিভ সিনিয়র এডভাইজর ড. জহুরুল হক, ডেপুটি টিম
লিডার মানা ইশিগাকি, সিলেট জেলা নিরাপদ খাদ্য কর্মকর্তা সৈয়দ সারফরাজ
হোসেন।
প্রশিক্ষণ পর্ব পরিচালনা করেন, প্রকল্পের
ডেপুটি টিম লিডার মানা ইশিগাকি, ফুড সেফটি কনসালটেন্ট চিনময় সরকার, আরাফাত
রহমান, এসিস্ট্যান্ট কমিউনিকেশন কনসালটেন্ট ফারিয়া আশরাফ। পরে, শিক্ষকদের
হাতে নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক প্রশিক্ষণ সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। এর মধ্যে,
শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি ও খাদ্য নিরাপদ রাখার কৌশল সহায়ক ৪ ধরনের মডিউল এবং ৮
ধরনের প্রশিক্ষণ সরঞ্জাম ছিল।