নিজস্ব প্রতিবেদক
নভেম্বর ০৯, ২০২২
০৬:২৮ অপরাহ্ন
আপডেট : নভেম্বর ০৯, ২০২২
০৬:৩৩ অপরাহ্ন
আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে নির্মিত বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন ভাঙচুরের তীব্র নিন্দা জানানোর পাশাপাশি বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের অজ্ঞাতনামা নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এতে ২০০ থেকে ২৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোতোয়ালি থানায় মামলাটি করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সদস্য জাহিদ সারওয়ার।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন।
এ বিষয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাবে।
এর আগে মঙ্গলবার রাত ৯টা থেকে ১১টা পর্যন্ত নগরের চৌহাট্টা এলাকায় জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ জরুরি সভা করে।
সভা শেষে দেওয়া বিবৃতিতে সিলেটে বিএনপিকে ‘সঠিক পথে পরিচালিত হওয়ার’ আহ্বান জানিয়েছে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ। দলটি সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে ১৯ নভেম্বর সিলেটের গণসমাবেশসহ সব ধরনের কর্মসূচি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা প্রতিহত করতে বাধ্য হবেন বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
এ ছাড়া গতকাল আওয়ামী লীগের সভা থেকে ‘বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের’ বিরুদ্ধে গত রবিবার রাতে নগরের রিকাবীবাজার এলাকায় আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে নির্মিত বিলবোর্ড, ব্যানার ও ফেস্টুন ভাঙচুরের অভিযোগ করা হয়। আওয়ামী লীগের ওই সভায় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এর আগে রবিবার রাত সোয়া ৮টায় নগরের আম্বরখানা এলাকায় খুন হন জেলা বিএনপির সাবেক স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক আ ফ ম কামাল। এরপর বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, এ খুনের পেছনে সরকারদলীয় সংগঠনের নেতা-কর্মীরা জড়িত। ওই রাতেই বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের একটি বিক্ষোভ মিছিল থেকে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন উপলক্ষে নির্মিত তোরণ, ব্যানার, ফেস্টুন ভাঙচুরের অভিযোগ ওঠে।
ভাঙচুরের খবর পেয়ে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে ভাঙচুরকারীদের ধাওয়া দেন। এ সময় লাঠিসোঁটা নিয়ে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার সময় একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর ও মোটরসাইকেল আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি শান্ত করে। তবে এ সময় আওয়ামী লীগের নেতারা সংক্ষিপ্ত সভায় ভাঙচুরে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা না হলে ১৯ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ প্রতিহত করার ঘোষণা দেন।
এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল রাতে আওয়ামী লীগ সভা করেছে। সে সভা থেকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা করার পাশাপাশি গণমাধ্যমে একটা বিবৃতি পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়। পরে রাত সোয়া ১১টার দিকে জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খান এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাসুক উদ্দিন আহমদ ও সাধারণ সম্পাদক মো. জাকির হোসেন স্বাক্ষরিত এ বিবৃতি পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ঘটনার পরপরই সিলেট জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তাঁরা বিএনপির সন্ত্রাসীদের এ ন্যক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা জানান ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তাঁরা গণমাধ্যমে বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের আবেগের জায়গা। বিএনপি সন্ত্রাসীরা আমাদের সেই আবেগের জায়গায় আঘাত করেছে, যা কোনোভাবেই আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা মেনে নিতে পারে না। শান্তি ও সম্প্রীতির সিলেট নগরকে অশান্ত করার জন্য বিএনপির সন্ত্রাসীরা পাঁয়তারা করছে। এসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত দুষ্কৃতকারীদের সিলেটের মাটিতে স্থান হতে পারে না।’ নেতারা বিএনপির ‘সন্ত্রাসীদের’ অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
এ ছাড়া আওয়ামী লীগের নেতারা বিবৃতিতে বিএনপি নেতা কামালের হত্যাকারীদের খুঁজে বের করে আইনের আওতায় এনে সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
এএফ/০২