প্রগতিশীল শক্তিকে রুখে দিতে চায় স্বাধীনতা বিরোধীরা : শাবি উপাচার্য

শাবিপ্রবি প্রতিনিধি


ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
১২:১৭ পূর্বাহ্ন


আপডেট : ডিসেম্বর ১৫, ২০২২
১২:৩৯ পূর্বাহ্ন



প্রগতিশীল শক্তিকে রুখে দিতে চায় স্বাধীনতা বিরোধীরা : শাবি উপাচার্য


শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে যখন বাংলাদেশ স্বাধীনতা অর্জন করে, প্রগতিশীল শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তখন স্বাধীনতা বিরোধীরা তা মেনে নিতে পারেনি। ’ তিনি বলেন, ‘বর্তমানেও বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে প্রগতিশীল শক্তি নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে তখন এ শক্তিকে রুখে দিতে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকছে স্বাধীনতার অপশক্তিগুলো। তাই বিভিন্ন সময় প্রগতিশীল শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীদের রুখে দিতে তাদেরকে বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র ও হেনস্তা করা হচ্ছে।’ 

আজ বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব মন্তব্য করে উপাচার্য।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে যখন পাকিস্তানে জন্ম হয়, এর প্রথম দিন থেকেই বাঙ্গালীদের উপর বিভিন্ন উপায়ে শোষণ, নির্যাতন ও অত্যাচার শুরু করে পাকিস্তানিরা। বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ হলেও তাদের হাতে যাতে রাষ্ট্রক্ষমতা না আসে সে বিষয়ে তারা সোচ্চার ছিল। এতে তাদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে, মুক্তিযুদ্ধসহ বিভিন্ন সময় অনেক মানুষকে প্রাণ দিতে হয়েছে।’

মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী অপশক্তির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও পাকিস্তানি দোষররা প্রতিনিয়ত ষড়যন্ত্রে লিপ্তে আছে। খন্দকার মোশতাকও ভারতে বসে বাংলাদেশকে চিনিয়ে নিতে নীলনকশা তৈরি করেছিল। তার নেতৃত্বেই তো বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসে তারাও চেয়েছিল বাংলাদেশকে পাকিস্তানিদের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে। বর্তমানে আবার তারাই বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনে সক্রিয়, যারা মানবতার কথা বলে এবং তারাই বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে।’

দেশের উন্নয়নের কথা স্মরণ করে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর কন্যার সুযোগ্য নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হচ্ছে, মাথাপিছু আয় ৮'শ ডলার থেকে ২৮'শ ডলারে উন্নতি হয়েছে, উন্নয়নের জন্য সারা বিশ্বে রোল মডেল হিসেবে তৈরি হয়েছে তখনো তারা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।তারা যদি দেশের মঙ্গল চায় তাহলে আমাদের মধ্যে এত ভেদাভেদ কেন?’

বর্তমান প্রজন্মের প্রতি হতাশা জানিয়ে উপাচার্য বলেন, ‘যখন নতুন প্রজন্মের কাছে বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয়, তখন তাদের মধ্যে ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ এসব সম্পর্কে জানেই না। স্বাধীনতা কবে হলো? মুক্তিযুদ্ধ কিভাবে হলো? স্বাধীনতার ঘোষক, মুক্তিযুদ্ধ এসবের প্রতি তাদের সঠিক কোন ধারনা নাই! এর অন্যতম কারণ হলো নতুন প্রজন্মের কাছে ইতিহাস বিকৃত করা এবং সঠিক ইতিহাস জানতে না পারা, বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে না জানা। তবে বঙ্গবন্ধুর কন্যা নতুন প্রজন্মের কাছে সঠিক ইতিহাস তুলে কাজ করে যাচ্ছেন।’ 

আলোচনা সভায় বাংলাদেশ শিক্ষক ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আখতারুল ইসলামের সভাপতিত্বে এবং রেজিস্ট্রার মুহাম্মদ ইশফাকুল হোসেনের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এছাড়াও বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক অধ্যাপক আমিনা পারভীন, প্রক্টর, বিভিন্ন হল প্রভোস্ট, দপ্তর প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী সমিতিসহ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে শহীদ মিনার ও বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ।


এইচএন-০১/এএফ-০৪