শিক্ষা-গবেষণা, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যের বিশ্ববিদ্যালয় শাবিপ্রবি প্রতিষ্ঠার ৩২বছর পার

হাসান নাঈম, শাবিপ্রবি প্রতিনিধি


ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০২৩
০৭:০৯ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০২৩
০৮:৩৬ অপরাহ্ন



শিক্ষা-গবেষণা, উদ্ভাবন ও ঐতিহ্যের বিশ্ববিদ্যালয় শাবিপ্রবি প্রতিষ্ঠার ৩২বছর পার


 দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি) বত্রিশ বছর অতিক্রম করে ৩৩ বছরে পদার্পণ করেছে মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারী)। সিলেট শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে আখালিয়ার বুকে ৩২০ একর ভূমির উপর ১৯৯১ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ৩টি বিভাগ, ১৩ জন শিক্ষক ও ২০৫ জন শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করা বিশ্ববিদ্যালয়টি পরিণত হয়েছে বহুগুণে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭টি অনুষদের অধীনে ২৮টি বিভাগ ও ২টি ইন্সটিটিউট মিলিয়ে প্রায় ৯ হাজার  শিক্ষার্থী  অধ্যয়ন করছেন। প্রতিষ্ঠার পরবর্তী সময় থেকে দেশের পাশাপশি সুনাম কুড়িয়েছে বহির্বিশ্বেও।

ছোট ছোট টিলা ও সবুজ অরণ্যঘেরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর ক্যাম্পাসটি প্রকৃতি প্রেমীদের মুহূর্তেই বিমোহিত করবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক দিয়ে বৃক্ষশোভিত এক কিলো রোড়র দু’পাশে কৃত্রিম জলাশয় ও নান্দনিক ওয়াকওয়ে এর সৌন্দর্যকে বৃদ্ধি করেছে কয়েকগুণ। এছাড়া গোলচত্বর থেকে আইআইসিটি ভবন, বিশ্ববিদ্যালয় সেন্টার, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, চেতনা-৭১, কেন্দ্রীয় মিলনায়তন, ছোট টিলাগুলো দর্শনার্থীদের কাছে বাড়তি আকর্ষণ সৃষ্টি করছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতাকে শাণিত করছে এমন সাংস্কৃতিক, স্বেচ্ছাসেবী ও নাট্য সংগঠনের নিয়মিত কার্যক্রমতো আছেই। পাশাপাশি বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সেমিনার, গবেষণা সম্মেলন, প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট, অলিম্পিয়াডের মতো বিভিন্ন অনুষ্ঠান’তো লেগেই থাকে।

প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অর্জনের পাশাপাশি সুনাম কুড়িয়েছে দেশ-বিদেশে। এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্জনগুলোর মধ্যে-এসএমএসে ভর্তি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি, ডোপ টেস্টে ভর্তি কার্যক্রম, সেমিস্টার পদ্ধতি চালু, ক্যাম্পাসে অপটিক ফাইবার নেটওয়ার্ক, নিজস্ব ডোমেইনে ই-মেই, যানবাহন ট্র্যাকিং ডিভাইস এবং দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের ‘মঙ্গল দ্বীপ’ সফটওয়্যার উদ্ভাবন, চালকবিহীন ড্রোন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন একুশে বাংলা কীবোর্ড, বাংলা সার্চ ইঞ্জিন পিপিলিকা, কথা বলা রোবট 'রিবো', হাঁটতে সক্ষম রোবট ‘লি’ তৈরি, ক্যান্সার নির্ণয়ের নতুন পদ্ধতি উদ্ভাবন, ব্লক চেইন পদ্ধতিতে সার্টিফিকেট যাচাই ইত্যাদি। বর্তমানে শাবিপ্রবির গ্রাজুয়েটরা বিশ্বের স্বনামধন্য জায়ান্ট প্রতিষ্ঠান গুগল, ফেসবুক, অ্যামাজন, মাইক্রোসফ্টসহ বিভিন্ন জায়গায় নিজেদের প্রতিভা ও দক্ষতার স্বাক্ষর রেখেই চলছে ।

এছাড়া তথ্য প্রযুক্তিতে বিশেষ অবদানের জন্য ডিজিটাল ওয়ার্ল্ড পুরষ্কার-১৭’ ২০১৮ সালে ‘নাসা স্পেস চ্যালেঞ্জ অ্যাপস’ অংশ নিয়ে বেস্ট ডাটা ইউটিলাইজেশন ক্যাটাগরিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন, প্রযুক্তি খাতে অবদানের জন্য ‘ডিজিটাল ক্যাম্পাস অ্যাওয়ার্ড'-২০ অর্জন করে নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। দেশের সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি শিক্ষা-গবেষণায় দেশীয় ও আন্তর্জাতিক শতাধিক পুরস্কার লাভের পাশাপাশি সুশাসনের দিক দিয়েও অনন্য উচ্চতায় রয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে শাবিপ্রবির উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, বর্তমানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা, গবেষণা ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে সমানতালে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মানুষ একটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যা প্রত্যাশা করে, আমরা সে লক্ষ্যকে সামনে রেখে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের শিক্ষকদের গবেষণার মান অনেক ভালো, গবেষণায় আমরা ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছি, শিক্ষকরাও গবেষণার প্রতি আগ্রহী। বর্তমানে আমরা কোয়ালিটি শিক্ষার প্রতি জোর দিচ্ছি। আশাকরি সকলের প্রচেষ্টায় এ বিশ্ববিদ্যালয় দেশের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তরিত হবে, পাশাপাশি বহির্বিশ্বেও একটি অবদানের চাপ রেখে সিলেটের মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবে।


এএফ/০৫