আমেরিকা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়

নিজস্ব প্রতিবেদক


ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
০৪:১৭ অপরাহ্ন


আপডেট : ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২৩
০৪:১৭ অপরাহ্ন



আমেরিকা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়
সিলেটে পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সাথে সুসম্পর্ক রাখতে চায় মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ‘সব ভুল বোঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে আমেরিকা বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়।’ তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের নতুন সম্ভাবনাগুলোর সঙ্গে তাঁরা কাজ করতে চান।’

আজ বৃহস্পতিবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে সিলেটের কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সিকৃবি) শিক্ষার্থীদের অরিয়েন্টেশন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এসব কথা বলেন।

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা দপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. মোস্তফা সামছুজ্জামানের সভাপতিত্বে প্রধান পৃষ্ঠপোষক হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক অধ্যাপক ডা. মো. জামাল উদ্দিন ভূঞা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. শামীমা নাসরীন ও সহকারী অধ্যাপক ড. পার্থ প্রতীম বর্মণের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ও রূপালী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ড. আহমদ আল কবির।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, ‘সব ভুল বুঝাবুঝির অবসান ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়, এ নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের আলোচনা হয়েছে।’

গত মঙ্গলবার বাংলাদেশ সফরে আসেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এন্থনি ব্লিঙ্কেনের বিশেষ উপদেষ্টা ডেরেক শোলে। সফরকালে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে বৈঠক করেন। শোলের বাংলাদেশ সফর নিয়ে প্রশ্নের জবাবে আব্দুল মোমেন আরও বলেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে বাংলাদেশের বহুমাত্রিক সম্পর্ক, এখানে র‌্যাবের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি একেবারেই ছোটোখাটো।’

তিনি আরো বলেন, ‘আমরা খুব ভাগ্যবান যে, অনেক দেশের নামজাদা কূটনীতিকরা এসেছেন। আপনি (সাংবাদিক) আমেরিকার কথা বলছেন, আমেরিকার সাত জন অত্যন্ত সিনিয়র কূটনীতিক এসেছেন এবং আমাদের মধ্যে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে। ওঁরা এসেছেন আমাদের সঙ্গে তাদের দেশের সম্পর্ক আরো শক্তিশালী করার জন্য। যতো ধরনের ভুল বোঝাবুঝি আছে, সব দূর করে অত্যন্ত শক্ত ভিত্তির ওপর আমাদের উভয় দেশের, আমেরিকা এবং বাংলাদেশের সম্পর্ক।’

কভিড-১৯ এর সময়কার সফলতার প্রসঙ্গ টেনে বাংলাদেশকে ‘মিরাকল’ দেশ হিসেবে উল্লেখ করে ড. মোমেন বলেন, ‘এই মিরাকল দেশের সাথে তাঁরা (আমেরিকানরা) সুসম্পর্ক রাখতে চান। আর এখানে নতুন নতুন যে সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে, সেগুলোর সাথে তাঁরা সম্পৃক্ত হতে চান, সেজন্য এসেছেন।  তা ছাড়া এসেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষ দূত। তিনিও বলেছেন যে, বাংলাদেশ সবচেয়ে উন্নয়নশীল মানে র‌্যাপিডলি ডেভলপিং কান্ট্রি। আর এখানে বহু ধরনের সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি হয়েছে, সেগুলো তাঁরা যাতে একসাথে কাজ করতে পারেন, সেজন্য তিনিও এসেছেন। আর এসেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব, একই বার্তা নিয়ে যে বাংলাদেশের সাথে কাজ করার জন্য...সবাই এসে আমাদের প্রশংসা করেছেন আর আমাদের দেশে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন এবং আমরা খুব খুশি।’

মন্ত্রী আরও বলেন, ‘গত কয়েক মাস দেখেছেন, আমেরিকানরা কন্টিনিউয়াসলি একজনের পর উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি আসছেন সম্পর্ক উন্নয়ন করার জন্য। শুধু সেটা না, আমাদের দাওয়াতও দিয়েছেন তাঁদের দেশে গিয়ে তাঁদের নেতাদের সাথে আলাপ করার জন্য। সো, উই আর ডেভলপিং ভেরি গুড রিলেশন্সশিপ এবং আই মাস্ট সে ইট ইজ সম্ভব হয়েছে আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়তার জন্যে। আর সুদূরপ্রসারী, এই যে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের যে ফরেন পলিসি, সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়...আমরা কারো শত্রু নই। আমরা বাস্তববাদী ফরেন পলিসি চালু রেখেছি।'

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, ‘রোহিঙ্গারা সবগুলো ফেরত যাবে বলে মনে হয় না, বাস্তববাদী যদি হোন, তো তাঁদেরকে (বিদেশিদের) বলেছি, কিছু আপনারা নেন না কেন? তো তাঁরা নেওয়া শুরু করেছেন। তাঁরা আরো নেবেন, আমেরিকা নেবেন, কানাডা নেবেন..অন্যান্য দেশকেও আমরা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছি। আমাদের এক নম্বর টার্গেট, আমরা চাই রোহিঙ্গারা তাঁদের দেশে ফিরে যাক। আমেরিকানরা আমাদেরকে এই ব্যাপারে সাহায্য করবেন বলে জানিয়েছেন।’


এএফ/০৩