পা ধরতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠা সেই বিচারককে প্রত্যাহার

সিলেট মিরর ডেস্ক


মার্চ ২৪, ২০২৩
০৩:১২ পূর্বাহ্ন


আপডেট : মার্চ ২৫, ২০২৩
০৪:৪৬ পূর্বাহ্ন



পা ধরতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠা সেই বিচারককে প্রত্যাহার


বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ ওঠা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের বিচারিক ক্ষমতা কেড়ে নেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) তাকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়। 

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. গোলাম রব্বানী এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নির্দেশে রুবাইয়া ইয়াসমিনকে প্রত্যাহার করে আইন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। বেতন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক আর্থিক সুবিধা পেলেও তিনি মন্ত্রণালয়ের বাইরে বিচারক হিসেবে কোনো কাজ করতে পারবেন না।’

গোলাম রব্বানী জানান, এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন ও বিচার) মো. মিজানুর রহমানের স্বাক্ষরে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। 

জানা গেছে, বিচারক রুবাইয়া ইয়াসমিনের মেয়ে বগুড়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্কুলের নিয়ম অনুযায়ী, সব শিক্ষার্থীর পালাক্রমে শ্রেণিকক্ষ ঝাড়ু দেওয়ার কথা থাকলেও বিচারকের মেয়ে কখনোই ঝাড়ু দেয় না। বিষয়টি নিয়ে সহপাঠীদের সঙ্গে কথাকাটাকাটি হয় তার। গত সোমবার রাতে স্কুলের একটি ফেসবুক গ্রুপে সহপাঠীদের কটাক্ষ করে একটি পোস্ট লেখে বিচারকের মেয়ে। এতে কয়েকজন সহপাঠী প্রতিবাদ জানায়।

পরদিন সকালে স্কুলের অভিভাবক সমাবেশে এসে বিচারক তিন শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবককে শিক্ষকের মাধ্যমে ডেকে আনেন। ফেসবুকে তাকে ও তার মেয়েকে নিয়ে 'অপমানজনক কথা' বলা হয়েছে এমন দাবি করে সাইবার অপরাধের অভিযোগে মামলা করার হুমকি দেন তিনি। একপর্যায়ে এক শিক্ষার্থীর মাকে পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন ওই বিচারক। সে সময় স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোছা. রাবেয়া খাতুন বিচারকের পক্ষ নিয়ে শিক্ষার্থীদের শাসান। এদিকে বিষয়টি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান অনেকে।

পা ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করার অভিযোগ তুলে এর প্রতিবাদে স্কুলের সামনের রাস্তায় ঘটনার সম্মানজনক বিচার চেয়ে পরদিন বিকাল সাড়ে ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় শিক্ষার্থীরা। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল ইসলাম ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দেন। এতে শিক্ষার্থীরা অনড় থাকলে জেলা প্রশাসক জেলা জজের সঙ্গে কথা বলে জানান, ওই বিচারকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তখন শিক্ষার্থীরা শান্ত হয়। রাত সোয়া ৯টার দিকে তারা বাড়ি ফিরতে শুরু করে।


এএফ/০৩