এ ধাক্কা হজমে কয়েক বছর লাগবে : ইসরায়েলি সাংবাদিক

সিলেট মিরর ডেস্ক


অক্টোবর ০৮, ২০২৩
০৫:১১ অপরাহ্ন


আপডেট : অক্টোবর ০৮, ২০২৩
০৫:১১ অপরাহ্ন



এ ধাক্কা হজমে কয়েক বছর লাগবে : ইসরায়েলি সাংবাদিক


ইসরায়েলের দৈনিক হারেতজের সাংবাদিক গিডিওন লেভি আলজাজিরাকে বলেছেন, হামাসের এত শক্তিশালী হামলায় ইসরায়েলি শাসকেরা অপমানিত বোধ করছেন। ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী যে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে তা হজম করতে তাদের কয়েক বছর লেগে যাবে। 

লেভি বলেন, প্রথমত ফিলিস্তিনিদের সক্ষমতা নিয়ে ইসরায়েলিদের এক ধরনের উদাসীনতা ছিল। ইসরায়েলিরা মনে করত, তাদের সেনাবাহিনী বিশ্বসেরা। তাদের প্রযুক্তি অতুলনীয়। তাদের এ অহংবোধে একটা বড় ধাক্কা লেগেছে। 

দ্বিতীয়ত, শুক্রবার (৬ অক্টোবর) সকালে ইসরায়েল সরকার পশ্চিম তীরে বিপুল সেনাবাহিনী মোতায়েন করেছে। তাদের দক্ষিণ ফ্রন্ট থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। 

ঔদ্ধত্য ও কৌশলগত ভুলের কারণে হামাসের আকস্মিক হামলায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে ইসরায়েল। 

এই সাংবাদিক আরও বলেন, হামাসের এই হামলার ধাক্কা ও ট্রমা কাটিয়ে ওঠতে ইসরায়েলের কয়েক বছর লেগে যেতে পারে। ইসরায়েলিদের বোঝা উচিত তারা ফিলিস্তিনিদের প্রতি দিনের পর দিন যে আচরণ করে তার পরিবর্তন হওয়া দরকার। তারাও মানুষ। দুর্বল হওয়া সত্ত্বেও পিঠ ঠেকে গেলে একসময় তারাও ঘুরে দাঁড়াতে পারে। 

হামাস-ইসরায়েলের পাল্টাপাল্টি হামলায় রবিবার সকাল পর্যন্ত অন্তত ৫৩২ জন নিহত হয়েছে। এর মধ্যে ইসরায়েলের অন্তত ৩০০। ফিলিস্তিনি ২৩২। একই সময়ে আহত হয়েছে কয়েক হাজার। আহতদের মধ্যে অনেকের অবস্থা গুরুতর। 

শনিবার (৭ অক্টোবর) রাতে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, এই যুদ্ধ দীর্ঘ হবে। এই যুদ্ধ হবে ভয়ংকর। সামনের কয়েক দিন আমাদের জন্য ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। কিন্তু এ যুদ্ধে শেষ পর্যন্ত আমরাই জিতব। হামাসকে ধ্বংস করতে সব ধরনের সক্ষমতা ব্যবহার করবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। শয়তানের শহরকে (গাজা) আমরা ধ্বংসের শহরে পরিণত করব।


হামলা ‍ শুরু

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ইসরায়েলের দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চলে রকেট হামলা শুরু করে হামাস। রাত ১টা ১৫ মিনিটে হামাসের ইজ আদ্দীন আল-কাসিম ব্রিগেডস কমান্ডার মুহাম্মদ দাইস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সমন্বিত অভিযান শুরুর ঘোষণা দেন। তাদের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় আল-আকসা ফ্লাড। আল-আকসা মসজিদের মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করার জবাবে এই অভিযান শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন হামাস। 

হামাসের দাবি, তারা ইসরায়েলের দিকে এখন পর্যন্ত প্রায় ৫ হাজার রকেট ছুড়েছে। 

এবারের হামলার লক্ষণীয় বিষয় হলো, হামাসের যোদ্ধারা প্যারাগ্লাইডে চড়ে আকাশ পথে, নদী ও স্থল পথে ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করেছেন। অর্থাৎ তারা ইসরায়েলের গোয়েন্দা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়েছেন। ইসরায়েলের অন্তত সাতটি গ্রামে তাদের সেনাদের সঙ্গে হামাসের  যোদ্ধাদের বন্দুক যুদ্ধ হয়েছে। হামাসের যোদ্ধারা একটি পরিবারকেও জিম্মি করেছিল। শেষ পর্যন্ত তাদের উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে ইসরায়েলের সেনারা।  


ইসরায়েলের প্রতিহামলা

রবিবার রাত দেড়টার সময় গাজায় বোমা হামলা শুরু করে ইসরায়েলের আইডিএফ। তাদের এই অভিযানের নাম দেওয়া হয় সোর্ডস অব আইরন। 

আইডিএফ হামলা শুরুর চার মিনিটের মাথায় হামাসের বিরুদ্ধে নেতানিয়াহু যুদ্ধ ঘোষণা করেন। 

মন্ত্রীদের সঙ্গে এক জরুরি বৈঠক শেষে নেতানিয়াহু ঘোষণা দেন, ইসরায়েলের প্রিয় জনগণ। আমরা কোনো অভিযান নয় যুদ্ধ শুরু করেছি।  

ইসরায়েলের সর্বাত্মক হামলায় এখন পর্যন্ত ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজার ১৪ তলাবিশিষ্ট একটা বেসামরিক ভবন ধ্বংস হয়েছে।


সূত্র : আলজাজিরা


এএফ/১৩